বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪

অর্পিতার ৩১টি জীবনবিমার প্রিমিয়াম প্রায় দেড় কোটি টাকা! টাকা দিতেন পার্থ, চার্জশিটে বিস্ফোরক তথ্য

আত্রেয়ী সেন

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২০, ২০২২, ১২:২০ পিএম | আপডেট: সেপ্টেম্বর ২০, ২০২২, ০৬:২৩ পিএম

অর্পিতার ৩১টি জীবনবিমার প্রিমিয়াম প্রায় দেড় কোটি টাকা! টাকা দিতেন পার্থ, চার্জশিটে বিস্ফোরক তথ্য
অর্পিতার ৩১টি জীবনবিমার প্রিমিয়াম প্রায় দেড় কোটি টাকা! টাকা দিতেন পার্থ, চার্জশিটে বিস্ফোরক তথ্য

বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ এসএসসি দুর্নীতি মামলায় ইডি-র হাতে গ্রেফতারির ৫৮ দিনের মাথায় সোমবারই ব্যাঙ্কশাল আদালতে চার্জশিট পেশ করে ইডি। এসএসসি দুর্নীতি মামলায় ধৃত রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং তাঁর ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের সম্পত্তি নিয়ে চার্জশিট জমা দিয়েছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টোরেট। সেই চার্জশিটেই উল্লেখ আছে যে, পার্থ ঘনিষ্ঠ অর্পিতার নামে বিপুল পরিমাণ টাকার একাধিক জীবন বিমা রয়েছে। ইডি-র চার্জশিটে উল্লেখ আছে, মোট ৩১ টি বিমা রয়েছে অর্পিতার। সব ক’টি বিমার প্রিমিয়ামের মোট মূল্য প্রায় দেড় কোটি টাকা। আবার এও উল্লেখ রয়েছে যে, এই বিমাগুলির অধিকাংশেরই নমিনি পার্থ চট্টোপাধ্যায়।

৩১ টি জীবনবীমার মধ্যে বেশিরভাগেরই প্রিমিয়াম ৫০ হাজার টাকা। আবার কয়েকটি প্রিমিয়াম ৪৫ হাজার টাকা বলেও জানা গিয়েছে। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মোবাইলের ফরেন্সিক পরীক্ষা করানোর পর এই তথ্য সামনে এসেছে বলেই জানা গিয়েছে।

ব্যাঙ্কের থেকে যেসব নথি তদন্তে নেমে ইডি-র আধিকারিকরা পেয়েছিলেন, সেইসব নথির সঙ্গেও বিমার প্রিমিয়ামেরও তথ্য ইডি-র হাতে এসেছে বলেই দাবি ইডি। এর আগে ইডি-র পক্ষ থেকে আদালতে জানানো হয়েছিল যে, অর্পিতার এই ৩১ টি প্রিমিয়াম বাবদ ব্যাঙ্কে টাকা জমা দিতেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। এবার চার্জশিটে সেই তথ্যের উল্লেখ করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, প্রিমিয়াম বাবদ মোট দেড় কোটি টাকা ব্যাঙ্কে জমা করা হত। চার্জশিটে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টোরেট এইসব তথ্যের উল্লেখ করে আরও জানিয়েছে, এতেই প্রমাণিত যে পার্থ ও অর্পিতার মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল।

গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথমে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মোবাইল বাজেয়াপ্ত করা হয়। এরপরই তা পাঠানো হয় সিএফএসএল-এ। এখানে মোবাইলে মুছে ফেলা তথ্য সংগ্রহ করা হয়। সেখানেই দেখা যায় যে, প্রাক্তন মন্ত্রীর মোবাইলে বিমার টাকা জমা পড়ার এসএমএস এসেছে বিভিন্ন সময়ে। এরপরই যেসব ব্যাঙ্কে বিমা করা হয়েছিল, সেই ব্যাঙ্কগুলির সঙ্গে যোগাযোগ করেন গোয়েন্দারা। তাদের থেকে যাবতীয় নথি চাওয়া হয়। সেইসব নথি পরীক্ষা করে দেখা যায় যে, বিমার প্রিমিয়ামের টাকা দিতেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। জানা গিয়েছে, ২০১৫ সাল থেকে এলআইসিগুলি রয়েছে। বিগত ৭ বছর ধরে জমা পড়ছে এলআইসির প্রিমিয়াম।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গতকাল ইডি-র চার্জশিট পেশ করা হয়। ইডি সূত্রে খবর, নিয়োগ দুর্নীতিতে ১০৩ কোটি টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ৪০ টি অস্থাবর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বলে ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে। যার দর ৪০.৩৩ কোটি টাকা। মোট ৪৮.২২ কোটি টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে ৩৫ টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট, যাতে টাকার পরিমান ৭ কোটি ৮৯ লক্ষ।বাজেয়াপ্ত করা সম্পত্তির মধ্যে রয়েছে ফ্ল্যাট, বাগানবাড়ি, জমি, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট। 

জানা গিয়েছে, বাজেয়াপ্ত হওয়া সম্পত্তির মধ্যে অনেকগুলিই রয়েছে পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের নামে। এখানেই শেষ নয়, এছাড়া শেল কোম্পানির নামেও রয়েছে বেশ কিছু সম্পত্তি। গত জুলাইয়ে অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের একাধিক ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালিয়ে মোট ৪৯.৮০ কোটি টাকা ও ৫.০৮ কোটি টাকার সোনা ও গয়না বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।