বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪

দলের সিদ্ধান্ত কি ঠিক? জবাবে কী বললেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়?

আত্রেয়ী সেন

প্রকাশিত: জুলাই ২৯, ২০২২, ০৩:৩৫ পিএম | আপডেট: জুলাই ২৯, ২০২২, ০৯:৫৯ পিএম

দলের সিদ্ধান্ত কি ঠিক? জবাবে কী বললেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়?
দলের সিদ্ধান্ত কি ঠিক? জবাবে কী বললেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়?

বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ এদিন ফের রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য জোকা ইএসআই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। নিয়ে যাওয়া হয়েছিল পার্থ ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কেও। এদিন হাসপাতালে ঢোকার সময় বলেছিলেন, তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার। আর বেরোনোর সময় বলে দিলেন, ‘যারা ষড়যন্ত্র করেছে, জানতে পারবেন।’ এখানেই শেষ নয়, তিনি আরও জানিয়ে দিলেন, ‘মমতা ব্যানার্জির সিদ্ধান্ত ঠিক।’ মন্ত্রিত্বর পাশাপাশি দলের সমস্ত পদ থেকে সরানোর পরেও দলনেত্রীর সিদ্ধান্তকে সঠিক বলে উল্লেখ করাকে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একটা বড় অংশ। 

আজ বেলা ১১ টা নাগাদ শারীরিক পরীক্ষার জন্য আলাদা আলাদাভাবে পার্থ এবং অর্পিতাকে ইএসআই হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। এদিন হাসপাতালে ঢোকার সময়ই পার্থ বলেন, ‘আমি ষড়যন্ত্রের শিকার।’ উল্লেখ্য, দল এবং মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্তের পর এই প্রথম মুখ খুললেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। 

এরপর বেলা ১২ টা ১৫ মিনিট নাগাদ হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে ফের গাড়িতে ওঠার সময় সেই কথার প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ‘যারা ষড়যন্ত্র করেছে, জান্তেপারবেন।’ এরপরই তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, আপনাকে নিয়ে দল যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা ঠিক কিনা? পার্থর জবাব, ‘দলের সিদ্ধান্ত সঠিক কি না, তা সময় বলবে।’ পরের প্রশ্নে জানতে চাওয়া হয় যে, মন্ত্রিত্ব ও দলের অন্যান্য পদ থেকে তাঁকে সরিয়ে দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছে ইতিমধ্যেই। এই প্রসঙ্গে তাঁর প্রতিক্রিয়া কী? উত্তরে প্রাতন শিক্ষামন্ত্রী জবাবে বলেন, ‘মমতা ব্যানার্জির সিদ্ধান্ত ঠিক।’

এদিকে, পার্থর জবাব প্রসঙ্গে তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেছেন, ‘গ্রেফতার হওয়ার ৭ দিন পড়ে উনি বলছেন ষড়যন্ত্রের কথা। সেটা ওনার ব্যাপার। উনি নিজেকে ডিফেন্ড করতেই পারেন। তবে চক্রান্ত হয়ে থাকলে আইনের পথ তো খোলা। লড়াই তো চলছে। তবে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাংবাদিক সম্মেলনের পর এ নিয়ে আমার কোনও বক্তব্য নেই।’

এদিন হাসপাতালে পৌঁছে কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা যায় অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কে। হাসপাতালে পৌঁছানোর পরেও তিনি গাড়ি থেকে নামতেই চাইছিলেন না। নামানোর সময় পড়েও যান। বেরোবার সময়ও কাঁদছিলেন তিনি। বলেন, ‘আমি আর পারছি না’।

প্রসঙ্গত,  ইতিমধ্যেই অর্পিতা ইডি-র জেরায় দাবি করেছেন যে, উদ্ধার হওয়া টাকা তাঁর নয়, সবই পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের টাকা। তাঁর লকেরা এসেই রেখে যেত। যে ঘরে টাকা তাখা থাকত, সেখানে তাঁর প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল।

এদিকে, গতকালই মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর চারটি দফতরের মন্ত্রিত্ব থেকে সরানো হয়েছে পার্থকে। জানা গিয়েছে, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পরিবর্তে সেই চারটি দফতরের মন্ত্রিত্ব সামলাবেন মুখ্যমন্ত্রী নিজেই। এই সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে নবান্নের পক্ষ থেকে লিখিত বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। এদিকে, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মন্ত্রিত্ব থেকে অপসারণ প্রসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, ‘আমাদের দল কঠোর। কষ্ট করে রাজনীতি করতে হয়। আমরা পার্থ চ্যাটার্জিকে মন্ত্রিত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়েছি।’ জানা গিয়েছে, শিল্প-বাণিজ্য, তথ্যপ্রযুক্তি, পরিষদীয় এই চার দফতরের মন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে সরিয়েছে রাজ্য সরকার। এক বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে মুখ্যসচিব জানিয়েছেন, এই সব দফতরগুলি এখন থেকে মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্বেই থাকবে।

এর পাশাপাশি বিকেলে দলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির বৈঠকের পর সাংবাদিক সম্মেলনে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন যে, মন্ত্রিত্বের পাশাপাশি দলের যে কোটি পদে ছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়, সেই সবকটি পদ থেকেই তাঁকে সাসপেন্ড করা হল। অভিষেক আরও জানিয়েছেন, যতদিন তদন্ত চলবে তিনি দলের কোনও পদে থাকবেন না। নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে পারলে, দল তাঁকে সসম্মানে ফিরিয়ে নেবে।