বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

ধনখড়ের পর স্থায়ী রাজ্যপাল পেল বাংলা! শপথ নিলেন সিভি আনন্দ বোস, উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী

আত্রেয়ী সেন

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৩, ২০২২, ১২:১৬ পিএম | আপডেট: নভেম্বর ২৩, ২০২২, ০৬:১৬ পিএম

ধনখড়ের পর স্থায়ী রাজ্যপাল পেল বাংলা! শপথ নিলেন সিভি আনন্দ বোস, উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী
ধনখড়ের পর স্থায়ী রাজ্যপাল পেল বাংলা! শপথ নিলেন সিভি আনন্দ বোস, উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী

বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ বাংলায় জগদীপ ধনখড়ের পর অস্থায়ী রাজ্যপাল হিসেবে দায়িত্ব সামলাচ্ছিলেন না গণেশন। এদিকে, গত সপ্তাহেই স্থায়ী রাজ্যপাল হিসাবে নাম ঘোষণা হয়েছে প্রাক্তন আইএএস ডঃ সিভি আনন্দ বোসের। বুধবার সকালে রাজভবনে বাংলার স্থায়ী রাজ্যপাল হিসেবে শপথ নিলেন সিভি আনন্দ বোস। আজ তাঁকে শপথ বাক্য পাঠ করালেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব। এদিন রাজ্যেপালের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজ্যের অন্যান্য মন্ত্রীরা, প্রাক্তন রাজ্যপাল গোপালকৃষ্ণ গান্ধী এবং তাঁর স্ত্রী। এছাড়াও শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের বিধায়ক, বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতারা।

এদিন নির্ধারিত সময়ে অর্থাৎ ১০ টা বেজে ৪৫ মিনিটে রাজভবনে শপথগ্রহণ কক্ষে হাজির হন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। এদিন তাঁকে শপথবাক্য পাঠ করান হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব। শপথবাক্য পাঠ করার পর রাজ্যপাল অনুষ্ঠানে উপস্থিত নেতা-মন্ত্রীদের সঙ্গে সৌজন্য বিনিময় করেন। এদিন বাংলার প্রসিদ্ধ মিষ্টি রসগোল্লা দিয়ে স্বাগত জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে, এদিনের অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত ছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।

রাজ্যপালের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ পাওয়ার পর শুভেন্দু অধিকারী জানিয়েছিলেন তিনি সেখানে যাবেন। তবে, আজকের অনুষ্ঠান শুরু কিছুক্ষণ আগেই তিনি পরপর দুটি টুইট করেন। সেই টুইটে তিনি জানিয়ে দেন যে, আজকের রাজ্যপালের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে তিনি যাচ্ছেন না। তাঁর না যাওয়ার কারণও স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন তিনি। তিনি জানিয়েছেন যে, দুই বিজেপি ত্যাগী বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণী ও বিশ্বজিৎ কুণ্ডুর পাশে তাঁর বসার ব্যবস্থা করার জন্যই তিনি অনুষ্ঠানে যাচ্ছেন না। স্বভাবিকভাবেই নয়া রাজ্যপালের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করেও সৃষ্টি হল বিতর্ক।

এদিকে, বুধের সকালে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান হওয়ার আগে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কালীঘাটে মা কালীর দর্শন করতে যান নয়া রাজ্যপাল ডঃ সিভি আনন্দ বোস। সূত্রের খবর, মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টা নাগাদ তিনি কালীঘাটে যান। কালীঘাট প্রসাদের দোকানগুলির সামনেও দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে তাঁকে। মন্দিরে ঢোকার গেটে দাঁড়িয়ে প্রণাম করতেও দেখা যায় তাঁকে। এরপর মায়ের পুজো দেন। তিনি দীর্ঘসময় কাটান পুরোহিতদের সঙ্গে, মন্দিরের ইতিহাস নিয়ে জানার জন্য। তাঁদের সঙ্গে মন্দিরের পুরো চত্বরটা ঘুরেও দেখেন।

প্রসঙ্গত, ১৯৭৭ সালে আইএএসে যোগ দেন বাংলার নয়া স্থায়ী রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। এর আগে কেরলের মুখ্যমন্ত্রীর সচিবের দায়িত্বও সামলেছেন তিনি। এমনকি শিক্ষা, বন, পরিবেশের মতো দফতরের প্রধান সচিবের পাশাপাশি জেনারেল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন, রেভিনিউ বোর্ডেরও মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বও দক্ষতার সঙ্গে সামলেছেন তিনি। শুধু দেশেই নয়, বিদেশেও কাজ করার কৃতিত্ব রয়েছে তাঁর। তিনি ইউরোপিয়ান কাউন্সিল ফর নিউক্লিয়ার রিসার্চ, জেনেভা এবং ইন্টারন্যাশনাল ফিউশন এনার্জি অর্গানাইজেশন ও ফ্রান্সে ভারতের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেছেন। আবার অ্যাটমিক এনার্জি এডুকেশন সোসাইটির চেয়ারম্যান ছিলেন। বর্তমানে তিনি মেঘালয়ের সরকারের মুখ্য পরামর্শদাতার পদেও রয়েছেন। এরই মাঝে তাঁর উপরেই এসে পড়েছে বাংলার নয়া রাজ্যপালের দায়িত্ব। সাহিত্যের উপর বিশেষ দুর্বলতা রয়েছে নয়া রাজ্যপালের। লেখালেখির অভ্যেসও রয়েছে ডঃ সিভি আনন্দ বোসের।

ডঃ সিভি আনন্দ বোস ইংরাজি, হিন্দির পাশাপাশি মালায়ম ভাষাতেও ছোট গল্প, কবিতা, উপন্যাস লিখেছেন। তাঁর লেখা বেশ কিছু বই বিভিন্ন সময়ে বেস্ট সেলারও হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এই মুহূর্তে তিনি মেঘালয় সরকারের মুখ্য পরামর্শদাতা। উল্লেখ্য, বাংলার অস্থায়ী রাজ্যপাল লা গণেশনের সুসময় বাদ দিলে, রাজ্যের প্রাক্তন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের সঙ্গে রাজ্য সরকারের খুব একটা ভাল সম্পর্ক ছিল না। নানা বিষয়ে রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত লেগেই থাকত। এখন এটাই দেখার যে, বাংলার নয়া রাজ্যপাল তথা বাংলার প্রশাসনিক প্রধানের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পর্ক বা বোঝাপড়া ঠিক কেমন দাঁড়ায়।