শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

অর্পিতার বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া বিপুল পরিমাণ টাকা এখন কোথায়? পরে কোথায় যাবে এই টাকা?

চৈত্রী আদক

প্রকাশিত: জুলাই ২৬, ২০২২, ১১:০৮ এএম | আপডেট: জুলাই ২৬, ২০২২, ০৫:০৮ পিএম

অর্পিতার বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া বিপুল পরিমাণ টাকা এখন কোথায়? পরে কোথায় যাবে এই টাকা?
অর্পিতার বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া বিপুল পরিমাণ টাকা এখন কোথায়? পরে কোথায় যাবে এই টাকা?

বংনিউজ২৪×৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ এর আগে অভিযুক্তদের বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া বিপুল পরিমাণ নগদ টাকা কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার মালখানায় রাখা হত। মালখানার বাইরে নিযুক্ত থাকত সশস্ত্র পাহারাদার। তদন্তকারী অফিসাররা একদিক থেকে নিশ্চিন্ত ছিলেন যে, পাহারা পেরিয়ে মালখানায় ঢুকে ওই নগদ টাকা চুরি করা কারুর পক্ষে সম্ভব নয়।

তবে বেশ কিছু মাস কেটে যাওয়ার পর দেখা যায়, বহু সংখ্যক নোট উধাও। বেশ কিছু নোট ছেঁড়া অবস্থায় পড়ে রয়েছে। কিছু নোট আবার খেয়ে গিয়েছে ইঁদুরে। টাকার বান্ডিলে থাবা মেরেছে উইপোকাও। তাই উদ্ধার করা টাকা আর নিজেদের জিম্মায় রাখার ঝুঁকি নেন না সিবিআই, ইডি অথবা আয়কর দফতরের অফিসাররা। তাহলে কোথায় যায় এই টাকা?

সাধারণত উদ্ধার হওয়া বিপুল পরিমাণ নগদ জমা রাখা হয় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে ইডির অ্যাকাউন্ডে। অথবা ব্যাঙ্কে থাকা ইডির নিজস্ব ভল্টেও রাখা হয়। সম্প্রতি শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি কান্ডে অভিযুক্ত পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ‘ঘনিষ্ঠ’ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া ২১ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা, লক্ষ লক্ষ টাকার বিদেশি মুদ্রা এবং সোনা রাখা হয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ভল্টে। কিন্তু এরপর ওই টাকা নিয়ে কী করা হবে? কারা পাবে ওই টাকা?

প্রথমে ইডিকে আদালতে প্রমাণ করতে হবে যে ওই টাকা অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের নিজস্ব টাকা নয়। যতক্ষণ না তা প্রমাণ হচ্ছে ততক্ষণ খাতায়-কলমে ওই টাকা, বৈদেশিক মুদ্রা এবং সোনার মালিক অর্পিতাই। তাই আদালতে এই বিষয়টি প্রমাণ সাপেক্ষ যে ওই কোটি কোটি টাকা অর্পিতা বেআইনিভাবে উপার্জন করেছেন এবং তা শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিরই টাকা যা পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের হাত ঘুরে এসেছে। যদি এই বিষয়টি প্রমাণ হয় তাহলে টাকা সমেত বৈদেশিক মুদ্রা এবং সোনার গয়না বাজেয়াপ্ত করে জমা করা হবে কেন্দ্রীয় সরকারের রাজকোষে।

কিন্তু কোনও কারনে যদি তা প্রমাণিত না হয় তাহলে পরবর্তীকালে ওই টাকা ফেরত দিতে হবে। তাও আবার সুদ সমেত। এরকমই এক ঘটনা ঘটেছিল বছর দুয়েক আগে। ১৯৯৫ সালে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল ৭.৯৫ লক্ষ টাকা। দু’বছর আগে সেই মামলায় আদালত নির্দেশ দেয়, সুদ সমেত পুরো টাকা ফেরত দিতে হবে। ২৫ বছর পর সুদ সহ সেই টাকার পরিমান গিয়ে দাঁড়ায় ২০ লক্ষ টাকা।

কিন্তু অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ক্ষেত্রে বিষয়টা অন্যরকম। ইতিমধ্যেই ইডি অফিসাররা জানিয়েছেন, অর্পিতা স্বীকার করেছেন যে ওই বিপুল পরিমাণ নগদ টাকা, বৈদেশিক মুদ্রা এবং গয়না তাঁর নিজস্ব সম্পত্তি নয়। এমনকি তাঁর ফ্ল্যাটে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নিয়মিত যাতায়াত ছিল এবং এই যাতায়াতের মাঝেই পার্থ বাবু যাবতীয় টাকা, গয়না তাঁর ফ্ল্যাটে রাখতেন বলেও স্বীকার করেছেন অর্পিতা।

এই প্রসঙ্গে ইডির আইনজীবী অভিজিৎ ভদ্র বলেছেন, প্রাথমিকভাবে উদ্ধার হওয়া টাকা অথবা কোনও সামগ্রী, প্রমাণ হওয়ার আগে পর্যন্ত অভিযুক্তর সম্পত্তি বলেই বিবেচিত হয়। তবে অভিযুক্ত যদি নিজের মালিকানা প্রমাণ করতে প্রয়োজনীয় নথি আদালতে পেশ করতে না পারেন তাহলে পরবর্তীকালে সেই টাকার মালিকানা অভিযুক্ত দাবি করতে পারবেন না। সেক্ষেত্রে যাবতীয় নগদ টাকা এবং গয়না বাজেয়াপ্ত করা হবে এবং মামলার নিষ্পত্তি হলে তা সরকারের সম্পত্তি হিসেবেই পরিগণিত হবে।