শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

‘বাংলার সাহিত্য সমাজ, তুমি চেতনা হারাইয়াছ?’ মমতার বাংলা আকাদেমি পুরস্কার নিয়ে খোঁচা শুভেন্দুর

আত্রেয়ী সেন

প্রকাশিত: মে ১০, ২০২২, ০৫:১২ পিএম | আপডেট: মে ১০, ২০২২, ১১:১২ পিএম

‘বাংলার সাহিত্য সমাজ, তুমি চেতনা হারাইয়াছ?’ মমতার বাংলা আকাদেমি পুরস্কার নিয়ে খোঁচা শুভেন্দুর
‘বাংলার সাহিত্য সমাজ, তুমি চেতনা হারাইয়াছ?’ মমতার বাংলা আকাদেমি পুরস্কার নিয়ে খোঁচা শুভেন্দুর

বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বভার সামলানোর পাশাপাশি সাহিত্য সাধনাও চালিয়ে গিয়েছেন তিনি। এর মধ্যেই লিখে ফেলেছেন একাধিক কবিতা, গল্প। এবার তারই স্বীকৃতি পেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর লেখা ‘কবিতা বিতান’ বইটির জন্য তাঁকে বাংলা আকাদেমি পুরস্কারে সম্মানিত করা হল।

জানা গিয়েছে, শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন যে, সমস্ত সাহিত্যকদের মতামত নিয়েই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম নির্বাচন করা হয়েছে এই পুরস্কারের জন্য। এমন এক ব্যক্তিত্ব, যিনি বা যারা সরাসরি সাহিত্যের সঙ্গে যুক্ত নন, কিন্তু সাহিত্যে বিশেষ অবদান রেখেছেন, তাঁদের পুরস্কৃত করা হবে। তিনি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হতে পারে, খেলাধুলার সঙ্গে যুক্ত কেউ হতে পারেন। এবছরই প্রথম এই বিশেষ পুরস্কার দেওয়া চালু হল। প্রথম বছর সাহিত্য চর্চায় বিশেষ অবদানের জন্যই এই পুরস্কার পেলেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রীর ‘কবিতাবিতান’ কাব্যগ্রন্থের জন্য তিনি পুরস্কার পেয়েছেন। জানা গিয়েছে, প্রতি তিন বছর অন্তর এই সম্মানে সম্মানিত করা হবে। 

এদিকে, এদিন মুখ্যমন্ত্রীর এই সম্মানপ্রাপ্তিতে কটাক্ষ করলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এদিন তিনি টুইট করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুরস্কার পাওয়ার বিষয়ে মন্তব্য করেন। তিনি টুইটে লেখেন, সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় আজ আমাদের মধ্যে উপস্থিত থাকলে হয়তো লিখতেন, “বাংলার সাহিত্য সমাজ, তুমি চেতনা হারাইয়াছ?” পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমির পুরস্কার বাংলার বিশিষ্ট সাহিত্যিকদের সঙ্গে পরামর্শ করে মুখ্যমন্ত্রীকে দেওয়া হয়েছে তাঁর ‘কবিতা বিতান’ কাব্যগ্রন্থের জন্য।

পাশাপাশি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দুটি কবিতা পোস্ট করে শুভেন্দু অধিকারী আরও একটি টুইট করেন, সেই টুইটে তিনি লেখেন, ‘ইতিহাস যখন একটি সভ্যতার বিশ্লেষণ ও মূল্যায়ন করে কয়েক শতাব্দী পরে, তখন তাতে উল্লেখ থাকে না কোন উকিল, ব্যবসায়ী, কেরানি কত বড় অবদান রেখেছিলেন। আতস কাঁচের তলায় দেখা হয় কবি, সাহিত্যিক, ভাস্কর, চিত্রকর, শিল্পীদের কাজ।’

রাজ্যের বিরোধী দলনেতার কথায়, ‘বাঙালি তো এই জায়গায় শ্রেষ্ঠ। শিল্প কলা সংস্কৃতিতে মুন্সিয়ানাই তো আমাদের পরিচয় বিশ্বের কাছে। সেই সেই অহংবোধ কিনা রবীন্দ্র জয়ন্তীর দিনে ধূলিসাৎ হলো। বাঙালির সত্ত্বা আজ লুণ্ঠিত!ধিক্কার জানাই তাদের যারা এই প্রক্রিয়ায় জড়িত। চাটুকারিতা কোন স্তরে পৌঁছালে এই ছড়া/কবিতার স্রষ্টাকে পুরস্কৃত করা হয়।’

প্রসঙ্গত, সোমবার কবিগুরুর ১৬১ তম জন্মজয়ন্তীতে রাজ্যের তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের আয়োজিত রবি প্রণাম অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রীর নাম এই পুরস্কারের জন্য ঘোষণা করা হয়। কিন্তু তিনি নিজে হাতে এই পুরস্কার গ্রহণ করেননি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হয়ে এই সম্মান গ্রহণ করেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। এই প্রথম এই সম্মান পেলেন মুখ্যমন্ত্রী। 

অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, ‘সমাজের অন্য ক্ষেত্রে অবদানের পাশাপাশি যারা নিরলস সাহিত্য সাধনা করে চলেছেন, তাঁদের সাহিত্য অ্যাকাডেমির পক্ষ থেকে বাংলা অ্যাকাডেমি পুরস্কারে সম্মানিত করা হচ্ছে। প্রারম্ভিক বর্ষে বাংলার সমস্ত সাহিত্যিকদের মতামত নিয়ে এই পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তাঁর কবিতা বিতান কাব্যগ্রন্থকে মাথায় রেখে সামগ্রিকভাবে সাহিত্যচর্চার জন্য এই সম্মান দেওয়া হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের বাংলা আকাদেমির পক্ষ থেকে।’

উল্লেখ্য, ২০২০ সালের বইমেলায় মুখ্যমন্ত্রীর বইয়ের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়। এই বইয়ে মুখ্যমন্ত্রীর লেখা ৯৪৬ টি কবিতা রয়েছে। জাগো বাংলার স্টলে এই বইয়ের আনুষ্ঠানিক প্রকাশ হয়। সোমবার রবীন্দ্রস্মৃতি পুরস্কার প্রদান করা হয় সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, বিজ্ঞানী বিকাশ সিনহা, লেখিকা ফ্রাঁসো ভট্টাচার্যর হাতে। তবে, লেখিকা বর্তমানে প্যারিসে থাকেন। তাই তাঁর হয়ে পুরষ্কার গ্রহণ করেন লেখিকার বোন।