শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

‘নন্দীগ্রামে হেরে গিয়েছেন আমাকে ফোন করে বলেছিলেন শুভেন্দু’! বিস্ফোরক রাজীব

আত্রেয়ী সেন

প্রকাশিত: মার্চ ১২, ২০২২, ০৫:৩৫ পিএম | আপডেট: মার্চ ১২, ২০২২, ১১:৪৭ পিএম

‘নন্দীগ্রামে হেরে গিয়েছেন আমাকে ফোন করে বলেছিলেন শুভেন্দু’! বিস্ফোরক রাজীব
‘নন্দীগ্রামে হেরে গিয়েছেন আমাকে ফোন করে বলেছিলেন শুভেন্দু’! বিস্ফোরক রাজীব

বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ নন্দীগ্রামে ভোটের ফল নিয়ে বারবার সরব হয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নন্দীগ্রামে ভোট স্বচ্ছ হয়নি বলেই দাবি করেছিলেন তিনি। এবার এই ইস্যুতে নতুন করে বিস্ফোরক দাবি করলেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। যিনি একুশের নির্বাচনের আগে তৃণমূল থেকে বিজেপিতে গিয়েছিলেন। কিন্তু নির্বাচনের পরে, তৃণমূল ক্ষমতায় ফিরলে, পুরোনো রাজনৈতিক শিবিরে ফিরে আসেন।  এবার রাজীবের মন্তব্যেই নন্দীগ্রামকে কেন্দ্র করে ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠল রাজ্য রাজনীতি। এবার একুশের বিধানসভা নির্বাচনে নন্দীগ্রামের ফলাফল নিয়ে বিস্ফোরক দাবি করলেন তৃণমূল নেতা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। 

আজ শনিবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন কুণাল ঘোষ। তাঁর সঙ্গে ছিলেন রাজীব এবং জয়প্রকাশ মজুমদার। এদিন একাধিক বিষয়ে শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে সরব হতে দেখা গিয়েছে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে। রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেছেন যে, নন্দীগ্রামে একুশের বিধানসভা ভোট স্বচ্ছ হয়নি। শুভেন্দু অধিকারী নাকি তাঁকে ফোন করে গণনার দিনই বিকেলে জানিয়েছিলেন যে, তিনি হেরে গিয়েছেন। তাহলে, এরপরেও কীভাবে জিতলেন? এবার এমনই বিস্ফোরক প্রশ্ন তুলে দিলেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই শোরগোল পড়ে গিয়েছেন রাজ্য-রাজনীতিতে। পাশাপাশি তিনি আরও এক নতুন দাবি করেছেন। 

এদিন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন যে, নন্দীগ্রামে ফের ভোট করানো হোক। তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য, কারচুপি করে জিতেছেন শুভেন্দু অধিকারী। এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন যে,আমি আজ দায়িত্ব নিয়ে বলতে পারি। নন্দীগ্রামের কথা উনি বার বার বলেন। আমিও সেই সময় ভারতীয় জনতা পার্টিতে ছিলাম। বুকে হাত দিয়ে বলুন তো, নন্দীগ্রামের ভোট কতটা স্বচ্ছ হয়েছে! বাংলার মানুষ জানে, নন্দীগ্রামের ভোট কীভাবে হয়েছে। নন্দীগ্রামের ভোট স্বচ্ছ হয়নি। যেদিন ফলাফল ঘোষণা হয়, তিনি নিজে আমায় বিকেলে ফোন করে বলেছিলেন, নন্দীগ্রামে হেরে গিয়েছেন। তারপর কোন জাদুবলে আবার নন্দীগ্রামে তিনি জিতলেন? হাইকোর্টে যে মামলা হয়েছে, আমরা চাই এর বিচার হোক, যাতে হয় পুনরায় নির্বাচন না হলে পুনরায় ভোট গণনা হোক। তাহলেই কী আছে তা পুরোপুরি স্পষ্ট হয়ে যাবে।’

রাজীবের আরও দাবি, ‘আমি বিজেপিতে থাকাকালীন দেখেছি শুভেন্দুকে ব্যক্তি কুৎসা করতে। সেই সময় তাঁকে অনেক বোঝানোর চেষ্টা করেছিলাম।’ রাজীবের নন্দীগ্রামের ভোটের ফল নিয়ে এই দাবি নতুন কিছু নয়, এই একই দাবি, আগেও বহুবার উঠেছে। রাজীব সেই দাবিকেই ফের একবার উস্কে দিলেন। নন্দীগ্রামের ফল প্রকাশের পরদিনই ভোট নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। এবার আজ বিকেলে পদ্ম শিবির থেকে জোড়াফুল শিবিরে আসা রাজীব এবং জয়প্রকাশ উভয়েই দাবি করেছেন যে, তাঁদের কাছে খবর ছিল, শুভেন্দু অধিকারী হেরে গিয়েছেন। রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় তো একধাপ এগিয়ে জানিয়েছেন যে, শুভেন্দু অধিকারী নিজেই ফোনে জানিয়েছিলেন যে, তিনি হেরে গিয়েছেন। 

অন্যদিকে, নন্দীগ্রাম ইস্যুতে রাজীবকে সমর্থন জানিয়ে জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, ‘২০২১ এর ফলের পর আমি হেস্টিংস থেকে পিসি করে বলেছিলাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নন্দীগ্রামে জিতেছেন। পরে জানলাম জিতলেন শুভেন্দু। পরে তাঁকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম। রহস্যময় হেসে বলেছিল, জয়প্রকাশদা, অনেক কায়দা করতে হয়েছে।’  তবে, কি কায়দা, সে বিষয়ে স্পষ্টভাবে কিছু বলতে চাননি প্রাক্তন এই বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার।

এখানেই শেষ নয়, এদিন জয়প্রকাশ মজুমদার আরও ভয়ঙ্কর দাবি করেন শুভেন্দুকে নিয়ে। তিনি জানিয়েছেন যে, ‘দিলীপ ঘোষের অনীহা ছিল শুভেন্দুবাবুর যোগদানে। ওই সময় শুভেন্দুর বিরুদ্ধে নানা কেস অন্তরালে পাঠিয়ে দেওয়ার কাজ শুরু হয়। আমি দেখেছিলাম নারদা নিয়ে শুভেন্দুর ভিডিও।’ পরে শুভেন্দুর যোগদানের কারণ নাকি জানতে চেয়েছিলেন বলেও এদিন জানিয়েছেন। জয়প্রকাশের দাবি, তখন তাঁকে বলা হয়েছিল যে, নিজেকে বাঁচাতে আসছে। কেন্দ্রীয় তদন্তের হাত থেকে বাঁচবে এটাই ছিল তাঁর উদ্দেশ্য। এদিকে, এইসব দাবি প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য জানিয়েছেন যে, সবই পদ পাওয়ার চেষ্টা।