বংনিউজ ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ উত্তরপ্রদেশে লখিমপুরে খেরিতে অশান্তি ঠেকাতে গোটা এলাকা জুড়ে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। পাশাপাশি বন্ধ রাখা হয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবাও। প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, রাজনৈতিক নেতারা ঘটনাস্থলে গেলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠতে পারে। সেই কারণেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে না ওঠা পর্যন্ত কোনও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে লখিমপুরে ঢুকতে দেওয়া হবে না। তবে, কৃষকদের লখিমপুরে প্রবেশের ক্ষেত্রে কোন বাধা দেওয়া হবে না বলেই জানানো হয়েছে। গতকালই পুলিশি নির্দেশ অমান্য করে লখিমপুরে যাওয়ার চেষ্টা করায় মাঝ পথেই আটক হন কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। সোমবার ভোর সাড়ে পাঁচটা নাগাদ তাঁকে আটক করে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। তাঁকে সীতাপুরের একটি অতিথিনিবাসে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এবার রাজনৈতিক নেতাদের আটকানোর প্রভাব দেখা গেল লখনউয়ে।
এদিন সকালেই সমাজবাদী দলের নেতা অখিলেশ যাদব লখিমপুরে যাওয়ার কথা থাকলেও, পুলিশের পক্ষ থেকে তাঁকে গৃহবন্দী থাকতে বলা হয়। এরপরই অখিলেশের বাড়ির সামনেই দাঁড়িয়ে থাকা গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দিল সপা সমর্থকরা। পুলিশ ইতিমধ্যেই অখিলেশ যাদবকে গ্রেফতার করেছে। তাঁকে গ্রিন গার্ডেনে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, তবে সমর্থকরা সেই কাজে বাধা দিচ্ছে।
https://twitter.com/ANINewsUP/status/1444889137727737859উল্লেখ্য, গতকাল কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী অজয় মিশ্র ও রাজ্যের উপ মুখ্যমন্ত্রী কেশব মৌর্যর সফরের প্রতিবাদে এবং কেন্দ্রের নয়া তিন কৃষি আইনের প্রতিবাদে সকাল থেকে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন এলাকার কৃষকরা। অভিযোগ, সেই সময় কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর কনভয়ের একটি গাড়ি ৪ কৃষককে পিষে দেয়। সেই গাড়িতে ছিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অজয় মিশ্রর ছেলে। ওই খবর ছড়িয়ে পড়তেই হিংসা ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। লখিমপুর খেরির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অরুণ কুমার সিং জানিয়েছেন, ওই সংঘর্ষে ৪ কৃষক সহ মোট ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।
গতকালই প্রিয়াঙ্কা গান্ধী এবং অখিলেশ যাদব জানিয়েছিলেন, তাঁরা লখিমপুরে যাবেন। কিন্তু পুলিশের পক্ষ থেকে দুজনকেই গৃহবন্দী থাকতে বলা হয়। সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদবও সকালে লখনউয়ের বিক্রমাদিত্য় মার্গের বাড়ি থেকে লখিমপুরে যাওয়ার চেষ্টা করেন। পুলিশের বাধা দেওয়ায় তিনি বাড়ির সামনেই পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে শুরু করেন। ধর্ণায় বসে অখিলেশ যাদব বলেন, ‘ব্রিটিশরাও কৃষকদের উপর এতটা অত্যাচার করেনি, যা বিজেপি সরকার করছে। উপ মুখ্যমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রীর ইস্তফা দেওয়া উচিত। যে সমস্ত কৃষকরা প্রাণ হারিয়েছেন, তাদের পরিবারকে ১ কোটি টাকা করে দিতে হবে এবং তাদের পরিবারের সদস্য়দের সরকারি চাকরিও দিতে হবে।’
এখানেই শেষ নয়, লখিমপুরে ১৪৪ ধারা জারি করার প্রসঙ্গে অখিলেশ যাদব, ‘সরকার ওখানে কোনও রাজনৈতিক নেতাদের যেতে দিচ্ছেন না। সরকার কী লুকোতে চাইছে?’ এদিকে, ধর্ণা চলাকালীনই সমাজবাদী পার্টির কিছু সমর্থকরাই অখিলেশ যাদবের বাড়ির অদূরেই দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশের ভ্যানে আগুন লাগিয়ে দেয়। যদিও দলের পক্ষ থেকে এই অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিশকর্মীরা সেই আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে বুঝেই পুলিশ অখিলেশ যাদবকে আটক করে এবং তাঁকে অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে পুলিশ। কিন্তু সপা সমর্থকরা রাস্তায় শুয়ে পড়ে সেই কাজে বাধা দেয়।
এদিকে, আজই মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে তৃণমূলের পক্ষ থেকে কাকলি ঘোষ দস্তিদার, দোলা সেন, প্রতিমা মণ্ডল, আবির রঞ্জন বিশ্বাস এবং সুস্মিতা দেব লখিমপুরে যাবেন। তবে, পরিস্থিতি যাতে উত্তপ্ত না হয়ে ওঠে তার জন্য তাঁদেরও গ্রামে ঢুকতে দেওয়া হবে না বলেই জানা গিয়েছে।