বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

একসময় যার লেখা গানে গলা মিলিয়েছেন সিধু-ইমন, সেই গীতিকার বাম্পাই চৈত্র সেলে বেচছেন জামা-কাপড়!

০১:৪০ পিএম, এপ্রিল ৭, ২০২১

একসময় যার লেখা গানে গলা মিলিয়েছেন সিধু-ইমন, সেই গীতিকার বাম্পাই চৈত্র সেলে বেচছেন জামা-কাপড়!

তাঁর লেখা ও সুরে গলা দিয়েছেন ঊষা উত্থুপ, সিধু, ইমন চক্রবর্তী, রূপঙ্কর বাগচী, জয় সরকারের মতো নামীদামী সব সঙ্গীত শিল্পী। গত বছর মুক্তি পাওয়া ‘বুড়ো সাধু’ ছবিতে তিমির বিশ্বাসের সঙ্গে প্লেব্যাকেও মিলিয়েছেন তিনি। সারা বাংলা জেনেছে তাঁর নাম। এমনকি ‘নেরোল্যাক’ এবং ‘বঙ্গশ্রী’র মতো বিশেষ সম্মাননাও এসেছে তাঁর ঝুলিতে। তবে সেই বাম্পাই চক্রবর্তী এখন সঙ্গীত জগৎ ছেড়ে বসেছেন ফুটপাতে। চৈত্র সেলে বিক্রি করছেন জামা-কাপড়। দৈনন্দিন দিনগুজরানে এটাই বর্তমানে তাঁর একমাত্র অবলম্বন।

পেশাদারী প্রশিক্ষণ নেই। তবুও গানের সুর বা কথার মাধ্যমে শ্রোতাদের মন ভোলাতে হাজরার বাসিন্দা বাম্পাইয়ের জুড়ি মেলা ভার। আধুনিক গান বা লোকসঙ্গীত, সবেতেই সাবলীল তিনি। সেসব গান বহুদিন ধরেই স্টুডিওতে রেকর্ডও হয়ে আসছে। তাবড়-তাবড় শিল্পীরা গলাও মেলাচ্ছেন তাতে। তবে গতবছর লকডাউনের পর পরিস্থিতিটা যেন বদলেই গিয়েছে অনেকটা। সংসারে ঢুকেছে অভাব। তাই দিনগুজরানের তাগিদে গান ছেড়ে অন্যান্য কাজেও হাত লাগিয়েছিলেন তিনি। কারণ বাম্পাইয়ের কথায় কোনও কাজই ছোটো নয়। মাছের বাজারে মাছ বিক্রি থেকে শুরু করে ফুটপাতে জামা বিক্রি, সব কাজের অভিজ্ঞতাতেই ভরা শিল্পীর ঝুলি।

[embed]https://www.facebook.com/BumpaiChakrabortyofficial/posts/895211617987857[/embed]

গত বছর সরস্বতী পুজোর আগে বাড়িতে বসেই বিক্রি করেছেন ফেব্রিকের আকর্ষণীয় ডিজাইনের পাঞ্জাবী। নিজের স্ত্রী সঙ্গে মিলে দুজনেই তুলিতে এঁকেছেন সেসব ডিজাইন। তারপর জামা বিক্রির সেই পন্থাই চলছে আজও। বর্তমানে কালীঘাটের ফুটপাতে ঝাঁপ বন্ধ কোনও দোকানের সামনে দেখা যায় বাম্পাইকে। দেখা যায়, চৈত্র সেলে ৬০-৭০ টাকায় শার্ট বা অন্যান্য জামাকাপড় বিক্রি করছেন। অবশ্য সেটাই তিনি করছেন বেশ হাসি মুখে।

তবে তাঁর এই খারাপ সময়ে পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন বেশ কিছু বন্ধু। তাঁরাই বাম্পাইকে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন। আর্থিক সাহায্যের হাত বাড়িয়েছেন ‘চন্দ্রবিন্দু’ ব্যান্ডের উপলও। পাশাপাশি নিজের স্ত্রীর অবদানও একবাক্যে স্বীকার করে নেন বাম্পাই। তবে এসবের মাঝেই নিজের শিল্পী সত্ত্বাকে নষ্ট হতে দেননি তিনি। এখনও চাইলেই হাতে তুলে নেন পেন, লিখতে থাকেন গান-কবিতা। এভাবেই জীবন জয়ের যুদ্ধে জয় লাভ করবেন তিনি। করবেনই... সেই বিশ্বাসও তাঁর রয়েছে।