এবার কি তবে বুদ্ধ-হীন ব্রিগেড?
মুহূর্তের জন্য হলেও ব্রিগেডে রবিবারের সমাবেশে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে চাই। ব্যক্তিগতভাবে না আসতে পারলেও ওই সভায় অন্তত একটি ‘ই-বার্তা’ দিন বুদ্ধদেব। সূত্রের খবর, বাম ছাত্র-যুবদের এই আরজি নিয়ে রীতিমত ফাঁপড়ে পড়েছেন বুদ্ধবাবুর পরিবার।
তাঁর মুখ্যমন্ত্রীত্ব শেষ হয়েছে বছর দশেক আগে। কিন্তু এখনো একইভাবে সমর্থকদের কাছে আবেগের জায়গা রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। তিনি অনুপ্রেরণা যুব বাম সম্প্রদায়ের কাছে। ৭৭ বছরের বর্ষিয়ান এই বাম নেতা শারীরিক অসুস্থতার কারণে এখন অনেকটাই ন্যুব্জ। বাড়িতেও চলাফেরা করতে পারেন না তিনি। প্রায় সব সময়ই বাইপ্যাপ সাপোর্টে থাকতে হয় তাঁকে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন কোনও ভাবেই জন সমক্ষে নিয়ে যাওয়া যাবে না তাঁকে।
২০১৯ এর ৩ ফেব্রুয়ারি চিকিৎসকদের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ব্রিগেড সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন বুদ্ধবাবু। প্রায় কুড়ি মিনিট নিজের গাড়িতে বসে বক্তৃতা শুনেছিলেন দলীয় নেতাদের। সেই সময় তাঁর সর্বদা সঙ্গী ছিল নাকে নল ও অক্সিজেন সিলিন্ডার। সমর্থকরা তাঁকে একবার মঞ্চে উঠে হাত নাড়ানোর আবেদন জানালেও বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল ধুলো ও শারীরিক অসুস্থতা।
প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর একটি বার্তাই পার্টির কর্মী—সমর্থকদের কাছে যথেষ্ট। এক্ষেত্রে চেষ্টা হবে প্রযুক্তির সাহায্য নিয়ে ভিডিও বার্তা দেওয়ার। জানা যাচ্ছে, পাম অ্যাভিনিউয়ের বাড়ির ভারচুয়াল মঞ্চ থেকে ব্রিগেডের উপস্থিত বাম জনতার উদ্দেশে ভাষণ দিতে পারেন বুদ্ধ বাবু। সেই চেষ্টা ব্যর্থ হলে দ্বিতীয় ভাবনা, তাঁর অডিও বার্তা শোনানো হবে।
করোনা পরিস্থিতিতে ব্রিগেডে সভা। সুস্থ থাকলেও তাঁকে আনা সম্ভব নয়। কিন্তু ভোট বড় বালাই। তাঁর জনপ্রিয়তাকে ভোট ময়দানে কাজে লাগাতে হবে। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর একটি বার্তাই পার্টির কর্মী—সমর্থকদের কাছে যথেষ্ট।তাই যে কোনওভাবে বুদ্ধবাবুকে ব্রিগেডে আনতে উদগ্রীব লালপার্টির ম্যানেজাররা।
দলের এক নেতার কথায়, “বুদ্ধদেববাবু ধুলোয় বেরোতে না পারলেও তাঁর ভার্চুয়াল বার্তা পেলে দলের লড়াই আরও শক্তি পাবে। তাই আমরা মনে করছি, তিনি দলের সমাবেশে উপস্থিত না হতে পারলেও কমপক্ষে লিখিত বার্তা পাঠাবেনই।’’
২০১৫ সালে ২৭ ডিসেম্বর কলকাতায় সিপিএমের সাংগঠনিক প্লেনাম উপলক্ষে ব্রিগেড সমাবেশ করেছিল সিপিএম। সেই সমাবেশে প্রধান বক্তা ছিলেন বুদ্ধদেবই। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের কথায়, ‘‘জ্যোতি বসুর শরীরও খুব ভাল ছিল না তখন। তবু দলের অনুরোধে ২০০৮ সালের জানুয়ারির ব্রিগেডে জ্যোতিবাবু এসেছিলেন। বলেছিলেন, এত মানুষ এসেছেন। আমি না এসে পারলাম না”|