বংনিউজ২৪×৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ রেলগেটে ছিল না কোনও সিগন্যল। ছিল না কোনও লাইনম্যানও। তাই লাইন পেরোতে সোজা রেললাইনে উঠে পড়ে একটি যাত্রীবোঝাই গাড়ি। আর তাতেই ঘটে বিপত্তি। দুরন্ত গটিতে ছুটে আসা একটি ট্রেন ধাক্কা মারে গাড়িটিকে। টেনে নিয়ে যায় প্রায় ১ কিলোমিটার। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ১১ জনের। আহত অবস্থায় ৬ জনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাদের মধ্যে ৫ জনেরই অবস্থা আশঙ্কাজনক।
এই ভয়াবহ দুর্ঘটনাটি ঘটেছে বাংলাদেশের চট্টগ্রামে। শুক্রবার বেলা দেড়টা নাগাদ চট্টগ্রামের মিরসরাই বড়তাকিয়া রেলস্টেশনের কাছে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে গাড়িটি। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রের খবর, চট্টগ্রামমুখী মহানগর প্রভাতী ট্রেনটি বড়তাকিয়া পেরিয়ে যাচ্ছিল। অন্যদিকে গাড়ি করে খৈয়াছড়া ঝরনা থেকে স্নান সেরে ফিরছিলেন হতাহতরা। সেই সময় রেললাইন পারাপার করতে গিয়েই ট্রেনটি ধাক্কা মারে গাড়িটিকে।
জানা গিয়েছে, নিহতদের প্রত্যেকেই হাটহাজারির আমানবাজার এলাকার বাসিন্দা। তাঁদের মধ্যে ১০ জন হাটহাজারীর জুগিরহাট আর অ্যান্ড জে কোচিং সেন্টারের ছাত্র-শিক্ষক। নিহতরা হলেন, আর অ্যান্ড জে কোচিং সেন্টারের শিক্ষক মোস্তফা মাসুদ রাকিব (২৮), জিয়াউল হক সজীব (২৮), রিদোয়ান চৌধুরী (৩১) ও ওয়াহিদুল আলম জিসান (৩২)। শিক্ষার্থী তথা এসএসসি পরীক্ষার্থী হিশাম (১৮), আয়াত (১৮), মারুফ (১৭), তাসফির (১৮) ও হাসান (১৯)। নিহত গাড়ির চালক গোলাম মোস্তফা (৩৫) হাটহাজারী উপজেলার চিকনদণ্ডী এলাকার বাসিন্দা।
অন্যদিকে আহতরা হলেন তাছমীর পাভেল (১৬), মো. মাহিম (১৮), মো. সৈকত (১৮), তানভীর হাসান হৃদয় (১৮), মো. ইমন (১৯) ও মাইক্রোবাসের চালকের সহকারী তৌকিদ ইবনে শাওন (২০)। আহতদের প্রত্যেকেই চমেক হাসপাতালের ২৪ ও ২৮ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছেন।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় পরিবহণ কর্মকর্তা আনসার আলি জানান, ট্রেনটি বড়তাকিয়া পেরিয়ে যাওয়ার সময়ই রেললাইনে উঠে যায় গাড়িটি। জানা গিয়েছে, লেভেল ক্রসিং এর বাঁশ ঠেলে গাড়িটি রেললাইনে উঠে গিয়েছিল। আর সেই সময় ধাক্কা মারে ট্রেনটি। ট্রেনের ইঞ্জিনের ধাক্কায় বেশ খানিকটা এগিয়ে যায় যাত্রীবোঝাই গাড়িটি। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় গাড়ির চালক সহ ১১ জনের। উদ্ধারকার্যে হাত লাগায় প্রত্যক্ষদর্শী থেকে শুরু করে ফায়ার সার্ভিস, রেলপুলিশ ও থানা পুলিশ।
দুর্ঘটনা প্রসঙ্গে ট্রেনের এক যাত্রী জানিয়েছেন, ট্রেনটি তখন মহাসড়কের দিকে যাচ্ছিল। সে সময় বৃষ্টিও পড়ছিল। অন্যদিকে খৈয়াছড়া ঝরনা লেভেলক্রসিংয়ে ছিল না কোনও সিগনাল বা লাইনম্যান। ফলে কোনওরকম বাধা ছাড়াই গাড়িটি রেললাইনে উঠে পড়ে। যার জেরেই ঘটে এত বড় দুর্ঘটনা। ঘটনার পর বেশ কিছুক্ষণ ওই লাইনে ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল। জানা গিয়েছে, দুর্ঘটনার তদন্ত করতে ইতিমধ্যেই তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :