কথায় বলে, কর্মই জীবন! আর সে কথাই যেন সত্যি করে দেখালেন এক বেসরকারি সংস্থার কর্মী। কাজই তাঁর জীবন। কাজ ছাড়া জীবনে আর কোনও মুহূর্তই নেই তাঁর। তাই দীর্ঘ ২৭ বছরের কর্মজীবনের একদিনের জন্যও নেননি ছুটি! শুনে চমকে উঠলেন তো? কিন্তু ঠিক এমনটাই করে দেখিয়েছেন বার্গার কিংয়ের ( Burger King) কর্মচারী কেভিন ফোর্ড (Kevin Ford)।
একটানা ২৭ বছর ধরে বার্গার কিং-এর সঙ্গে কাজ করছেন ৫৪ বছর বয়সী কেভিন। কিন্তু এই কর্মজীবনের একদিনও তিনি ছুটি নেননি। কোনও অনুষ্ঠান বা ফেস্টিভ্যাল তো বাদই থাক, এমনকি সপ্তাহান্তে কোনো অফ ডে অর্থাৎ সাপ্তাহিক ছুটিও নিতেন না। কাজের প্রতি তাঁর ভালোবাসা ও একনিষ্ঠতার জন্যই নিয়মিত কর্মক্ষেত্রে এসে হাজির হতেন কেভিন। মন দিয়ে করতেন নিজের কাজ।
কাজের প্রতি কেভিনের এই একাগ্রতা ও নিষ্ঠার জন্য বার্গার কিং-এর তরফে প্রচুর উপহার তুলে দেওয়া হয়েছে তাঁর হাতে। মেমেন্টো থেকে শুরু করে চকলেট, পেন সিনেমার টিকিট কী নেই! উপহারে ভরে গিয়েছে কেভিনের ব্যাগ। তবে তাঁর জন্য সবচেয়ে সবচেয়ে বড় চমক তুলে রেখেছিলেন মেয়ে সেরিনা। কেভিন স্বপ্নেও ভাবেননি যে, তাঁর মেয়ে বাবার জন্য এত কিছু করতে পারে।
বাবার এই কঠোর পরিশ্রমের স্বীকৃতি দিতে সেরিনা বেছে নিয়েছিলেন অনলাইন মাধ্যমকে। অনলাইনেই অনুদানের জন্য ক্রাউড-ফান্ডিং ওয়েবসাইটে `গো ফাউন্ড মি`-তে বাবার কাহিনী তুলে ধরেছিলেন তিনি। সেখানে সেরিনা জানিয়েছিলেন, দীর্ঘ ২৭ বছর ধরে তাঁর বাবা একটানা কাজ করে চলেছেন। নিজের ছেলে-মেয়েকে ভালোভাবে লেখাপড়া করানো, সংসার চালানোর জন্যই এত বড় আত্মত্যাগ করেছেন তিনি। আর সেই কারণে বাবাকে ধন্যবাদ স্বরূপ অনুদানের আবেদন জানান সেরিনা।
বলাই বাহুল্য, সেরিনার আবেদনে মেলে বিপুল সাড়া। কেভিনের আত্মত্যাগ ও লড়াইয়ের কাহিনী শুনেই কেউই হাত গুটিয়ে বসে থাকেননি। ইতিমধ্যেই ২ লাখ মার্কিন ডলারের বেশি অর্থ জমা পড়েছে কেভিনের ঝুলিতে। ভারতীয় মুদ্রায় যা প্রায় ১ কোটি ১৭ লক্ষ টাকা। মার্কিন কমেডিয়ান ও অভিনেতা ডেভিড স্পেড সবার প্রথম ৫ হাজার ডলার দান করেছেন। এরপর থেকে আরও বেশি অনুদান আসছে কেভিনের কাছে। তবে অনেকেই মনে করছেন, যে সংস্থার জন্য কেভিন এই কাজ করেছেন, সেই সংস্থার উচিৎ ছিল তাঁকে অনেক আগে স্বীকৃতি দেওয়া। সংস্থা যেটুকু দিয়েছে তা যথেষ্ট নয়৷ তবে নেটিজেনদের এহেন সাহায্য এবং সকলকে এভাবে পাশে পেয়ে আপ্লুত মেয়ে সেরিনা।
আপনার মতামত লিখুন :