1. প্রথম পাতা
  2. কলকাতা
  3. রাজ্য
  4. রাজনীতি
  5. অপরাধ
  6. দেশ
  7. আন্তর্জাতিক
  8. খেলা
  9. কর্ম সন্ধান
  10. বিনোদন
  11. ব্যবসা বাণিজ্য
  12. টেক নিউজ
  13. লাইফস্টাইল
  14. ভাইরাল
  15. আবহাওয়া
  16. রাশিফল

চিরঘুমের দেশে ‘ট্র্যাজেডি কিং’ দিলীপ কুমার!

০৯:৩৯ এএম, জুলাই ৭, ২০২১

চিরঘুমের দেশে ‘ট্র্যাজেডি কিং’ দিলীপ কুমার!

বংনিউজ ২৪x৭ বিনোদন ডেস্কঃ জীবনকে শেষ বিদায় জানিয়ে, চিরঘুমের দেশে পাড়ি দিলেন কিংবদন্তি অভিনেতা দিলীপ কুমার। বুধবার সকাল ৭.৩০ মিনিট নাগাদ তাঁর মৃত্যু হয়। চলচ্চিত্র জগতের এই দিকপালের মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৯৮ বছর। জুন মাসের শেষে মুম্বইয়ের হিন্দুজা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল তাঁকে। সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে।

দীর্ঘদিন ধরেই বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় ভুগছিলেন এই কিংবদন্তি অভিনেতা। মুম্বইয়ের হিন্দুজা হাসপাতালের আইসিইউ-তে ভর্তি ছিলেন তিনি। কয়েকদিন আগেই তাঁর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল বলেই জানিয়েছিলেন স্ত্রী তথা কিংবদন্তি অভিনেত্রী সায়রা বানু। শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যার পাশাপাশি তাঁর ফুসফুসেও জল জমেছিল। সঙ্গে দেখা দিয়েছিল কিডনির সমস্যাও।

https://twitter.com/TheDilipKumar/status/1412600233062699008 https://twitter.com/ANI/status/1412598610932293632

উল্লেখ্য, প্রথমে গত ৬ জুন দিলীপ কুমারকে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা হওয়ার কারণে মুম্বইয়ের হিন্দুজা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। সেই সময় তাঁকে অক্সিজেন সাপোর্ট দেওয়া হয়। এরপর ১১ জন তিনি হাসপাতাল থেকে ছাড়াও পান। কিন্তু গত মাসেই দ্বিতীয়বারের জন্য ফের হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। ৩০ জুন তাঁকে দ্বিতীয়বার হিন্দুজা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গত কয়েকমাস ধরেই শারীরিক সমস্যা বেড়েছিল বর্ষীয়ান অভিনেতার। এর আগেও বেশ কয়েকবার হাসপাতালেও ভর্তি করা হয়েছিল তাঁকে।

১৯২২ সালে অবিভক্ত ভারতের কিসসা খাওয়ানি বাজারের সম্ভ্রান্ত জমিদার তথা ফল ব্যবসায়ী লালা গোলাম সারওয়ার খান ও আয়েশা বেগমের ঘরে জন্মগ্রহণ করেন বলিউডের এই প্রবাদপ্রতীম অভিনেতা। জন্মসূত্রে তাঁর নাম মহম্মদ ইউসুফ খান হলেও রুপোলি পর্দায় তিনি পরিচিত ছিলেন দিলীপ কুমার হিসেবে। এক সময় বাবার সঙ্গে মতপার্থক্যের জেরে, বাড়ি ছাড়েন দিলীপ কুমার। পরিচয় গোপন করে ক্যান্টিন কন্ট্রাক্টরের কাজ করেন। পরে আর্মি ক্লাবে স্যান্ডউইচও বিক্রি করা শুরু করেন। এভাবেই ৫০০০ টাকা জমিয়ে, তাঁর মায়ানগরী মুম্বইয়ে আসা।

সিনেমার জগতে দিলীপ কুমারের প্রবেশ দেবিকা রানির বম্বে টকিজ প্রযোজনা সংস্থার কর্মী হিসেবে। মাসিক ১২৫০ টাকার বিনিময়ে এই কাজ শুরু করেছিলেন তিনি। সেখানেই অশোক কুমার ও শশধর মুখোপাধ্যায়ের সান্নিধ্য আসেন এই কিংবদন্তি অভিনেতা। অভিনেতা দিলীপ কুমারের বলিউডে আত্মপ্রকাশ ১৯৪৪ সালে ‘জোয়ার ভাটা’ সিনেমার মাধ্যমে। তবে, নায়ক হিসেবে তাঁকে পরিচিতি দেয় ১৯৪৭ সালে মুক্তি পাওয়া ‘জুগনু’ চলচ্চিত্র। তারপর থেকেই বলিউডে শুরু হয় দিলীপ কুমারের ‘নয়া দওর’। তিনি চলচ্চিত্র জগতে ছয় দশকের অধিক সময় ধরে বিচরণ করেছেন এবং অভিনয় করেছেন ৬০টির বেশি ছায়াছবিতে।

[caption id="attachment_21449" align="alignnone" width="1000"] দিলীপ কুমার[/caption]

তিনি বিভিন্ন ধরনের বৈচিত্রময় ভূমিকায় অভিনয় করেছেন, যেমন- রোমান্টিক ধাঁচের চলচ্চিত্র হিসেবে ১৯৪৯ সালের আন্দাজ, ১৯৫২ সালের বেপরোয়া বা হঠকারী এবং চালবাজ চরিত্রে আন, ১৯৫৫ সালে নাটকীয় চলচ্চিত্র দেবদাস, ১৯৫৫ সালের হাস্যরসাত্মক চলচ্চিত্র আজাদ, ১৯৬০ সালে ঐতিহাসিক চলচ্চিত্র ‘মুঘল-এ-আজম এবং ১৯৬১ সালের সামাজিক ঘরানার চলচ্চিত্র গঙ্গা যমুনা-তে। ‘মধুমতী’ থেকে ‘ক্রান্তি’, ‘মশাল’, ‘কর্মা’, ‘সওদাগর’, ‘কিলা’ প্রায় পাঁচ দশক ধরে বলিউডে রাজত্ব করেছেন কিংবদন্তি অভিনেতা। তিনিই প্রথম প্রতি ছবি পিছু ১ লক্ষ টাকা করে পারিশ্রমিক নিতে শুরু করেন। ১৯৭৬ সালে, দিলীপ কুমার ছবিতে অভিনয় থেকে পাঁচ বছর বিরতি নেন। এরপর আবার শুরু। ১৯৯৮ সালে শেষবার সিনেমায় অভিনয় করেন বর্ষীয়ান এই অভিনেতা। ১৯৬৬ সালে অভিনেত্রী সায়রা বানুর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন দিলীপ কুমার। ‘গোপী’, ‘সাগিনা’ চলচ্চিত্রে তাঁরা জুটি বেঁধে কাজ করেছেন।

গত বছর করোনায় নিজের দুই ভাইকেই হারিয়েছেন কিংবদন্তী এই অভিনেতা। আসলাম খান মারা গিয়েছেন ৮৮ বছরে এবং এহসান খান প্রয়াত হয়েছেন ৯০ বছরে। ২০২০ সালের মার্চ মাস, অর্থাৎ প্রথম লকডাউনের সময় থেকেই স্ত্রী সায়রা বানুর সঙ্গে নিজেকে আইসোলেশনে রেখেছিলেন দিলীপ কুমার। চিকিৎসার প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে বেরতে দেখা যায়নি তাঁকে।

সেরা অভিনেতা হিসেবে ৮টি ফিল্ম ফেয়ার পুরস্কার জিতেছেন দিলীপ কুমার। সবচেয়ে বেশি পুরস্কার জেতার গিনিস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডও রয়েছে তাঁর। ভারত সরকারের পক্ষ থেকে ১৯৯১ সালে পদ্মভূষণ সম্মান দেওয়া হয় দিলীপ কুমারকে। ভারতীয় সিনেমায় অসামান্য অবদানের জন্য ১৯৯৪ সালে 'দাদা সাহেব ফালকে' পুরস্কার পান দিলীপ কুমার। ২০১৫ সালে ভারত সরকারের তরফে 'পদ্মবিভূষণ' সম্মানও দেওয়া হয় তাঁকে। ২০০০ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত রাজ্যসভার সাংসদও ছিলেন তিনি। এমনকি ১৯৯৮ সালে দিলীপ কুমারকে নিশান-ই-ইমতিয়াজ সম্মানে সম্মানিত করে পাক সরকার। দিলীপ কুমারকে হিন্দি চলচ্চিত্রের ইতিহাসে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ অভিনেতাদের একজন হিসেবে বিবেচনা করা হয়।