শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

বাংলায় চিকিৎসকদের অভাব পূরণ করতে বড় সিদ্ধান্ত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের!

০৭:০২ পিএম, আগস্ট ২৬, ২০২১

বাংলায় চিকিৎসকদের অভাব পূরণ করতে বড় সিদ্ধান্ত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের!

বংনিউজ ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ বাংলায় এবার চিকিৎসকদের অভাব পূরণ করতে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার এসএসকেএম হাসপাতাল পরিদর্শনে যান তৃণমূল সুপ্রিমো তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভবিষ্যতে স্বাস্থ্য পরিষেবা আরও কীভাবে উন্নত করা যায় সেই লক্ষ্যে আজ এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসক, নার্স এবং হাসপাতাল অধিকর্তাদের সঙ্গে একটি বৈঠকের আয়োজন করা হয়। এই বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে, চিকিৎসক ও নার্সদের বিনামূল্যে জমি দেবে রাজ্য সরকার। এছাড়াও হাসপাতাল প্রাঙ্গণে এক বিল্ডিং থেকে অন্য বিল্ডিং-এ স্বাস্থ্যকর্মীদের যাতায়াতের সুবিধা সুনিশ্চিত করার জন্যেও একাধিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এদিন তাই তিনি হাসপাতালের স্বাস্থ্যব্যবস্থা খতিয়ে দেখতে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী।

এই বৈঠকের পর, নার্সদের দায়িত্ব এবং সম্মান বৃদ্ধির সিদ্ধান্তের পাশাপাশি তাঁদের পদোন্নতি নিয়ে বড় ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি গ্রামীণ প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলির চিকিৎসা পরিকাঠামোতেও বড় বদলের ঘোষণা করেন তিনি।

বৈঠক সেরে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে তিনি জানান, ‘সকল চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা আমাদের গর্ব, আমাদের সম্পদ। তাঁদের স্বাচ্ছন্দ্য, সুযোগ-সুবিধা সুনিশ্চিত করা রাজ্য সরকারের প্রধান কর্তব্য। প্রথম দিন থেকেই আমরা সেই লক্ষ্যে কাজ করে চলেছি।’ তিনি বলেন, ‘ভালো কাজ করলে অভিজ্ঞ নার্সদের পদোন্নতি দেব। তাঁরা হবেন প্র্যাকটিশনার সিস্টার। রোগী দেখতে পারবেন। আগামী দিনে নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারবেন নার্সরা।’

এদিন মুখ্যমন্ত্রী জানান যে, রাজ্যে ডাক্তারদের অভাব দূর করতে গ্রামে গ্রামে কোয়াক ডাক্তারদের কাজে লাগানো হচ্ছে।  মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘আমরা জানি ডাক্তারদের অভাব রয়েছে। ডাক্তার চাইলেই পাওয়া যায় না। সেজন্য কোয়াক ডাক্তারদের কাজে লাগিয়েছি। অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় কোয়াক ডাক্তারদের উপরে কাজ করে নোবেল পেয়েছেন। আমার ভাবনায় ছিল, প্রাথমিক নির্দেশিকা দিয়ে গ্রামে গ্রামে কোয়াকদের দিয়ে কাজ করানো যেতে পারে। সে রকম জুনিয়র ডাক্তাররা এবং নার্সরা আসল কাজ করেন। তার মানে ডাক্তার কাজ করেন না তা বলছি না। ডাক্তারদের নির্দেশ মেনে চলেন জুনিয়র ডাক্তার ও নার্সরা। সে কারণে হাসপাতালগুলি ভালোভাবে চলে।’

এখানেই শেষ নয়, মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন যে, ‘আমি মনে করি, সিস্টাররা অনেকেই আছেন ডাক্তারের সমান কাজ করতে পারেন। স্যালাইন ও রক্ত দেওয়া, আলট্রা সোনোগ্রাফি থেকে এমআরআই-সব তাঁরা করেন। ডাক্তারবাবু অপারেশন করে, রোগী দেখে দেয়। আমরা পুরুষ সিস্টারও অনুমোদন করেছি। যাঁরা ভালো কাজ করবেন এবং অভিজ্ঞ হবেন, তাঁদের পদোন্নতি দেব। তাঁদের প্র্যাকটিশনার সিস্টার বলব। অর্থাৎ তাঁরা প্র্যাকটিস করতে পারবেন। এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য দফতর নির্দেশিকা তৈরি করে দেবে।’

https://www.facebook.com/MamataBanerjeeOfficial/posts/4585390858194886

আর এমনটা হলে, রাজ্যে চিকিৎসকদের অভাব কিছুটা হলেও পূরণ করা সম্ভব হবে বলেই মনে করছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি এ প্রসঙ্গে আরও জানিয়েছেন যে, ‘প্র্যাকটিশনার সিস্টার দায়িত্ব নিয়ে চিকিৎসা করতে পারবেন। এতে বাড়বে নার্সের সংখ্যা। ডাক্তারদের চাহিদাও পূরণ হবে। সিস্টাররা আগামী দিনে নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারবেন।’

অন্যদিকে, এদিন হবু চিকিৎসকদের থাকার জায়গার সমস্যার সমাধান করতেও উদ্যোগ নিল রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ডাক্তারি পড়ুয়াদের জন্য লি রোডে ১০ তলা হস্টেল তৈরি হচ্ছে। পাশাপাশি হেস্টিংসেও এর জন্য জমি খোঁজা হচ্ছে। যেখানে মেডিক্যাল কলেজের প্রিন্সিপ্যালদের জন্য হস্টেল তৈরি হবে।

আবার নার্সদের হস্টেল তৈরির জন্য জমি খোঁজার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে পরিবহণমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে। এখানেই শেষ নয়, ডাক্তার ও নার্সদের আবাসনের জন্য ১০ একর জমির খোঁজ করতে বলেছেন হিডকো চেয়ারম্যান ফিরহাদ হাকিমকে। ডাক্তার, নার্সদের বিনামূল্যে জমি দেবে রাজ্য। যাতে তাঁরা নিজেরা টাকা দিয়ে বাড়ি বানিয়ে নিয়ে থাকতে পারেন।