বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে হারের আশঙ্কা করেই ‘নাটক’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের! দাবি বিজেপির

০৯:০৮ পিএম, মার্চ ১০, ২০২১

আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে হারের আশঙ্কা করেই ‘নাটক’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের! দাবি বিজেপির

বংনিউজ২৪x৭ডিজিটাল ডেস্কঃ আজই নন্দীগ্রামে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপর রেয়াপাড়ায় একটি মন্দিরে পুজো দিয়ে বেরানোর সময় ধাক্কাধাক্কিতে পায়ে, কোমরে, ঘাড়ে চোট লাগে তাঁর। আজ, বুধবার নন্দীগ্রামে তাঁর থাকার কথা ছিল। কিন্তু, প্রচারপর্ব অসম্পূর্ণ রেখেই, তিনি কলকাতায় ফিরছেন। গোটা ঘটনায় ষড়যন্ত্রের অভিযোগ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে।

গাড়িতে উঠে সাংবাদিকদের উদ্দেশে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'পা ফুলে গিয়েছে। ভিড় ছিল। ৪-৫ জন মিলে ধাক্কাধাক্কি করেছে। স্থানীয় পুলিস ছিল না। পুলিস সুপারও ছিল না। জেনেবুঝেই এটা করেছে। আমার বুকে যন্ত্রণা করছে, জ্বর এসেছে।’ এ প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানানোর কথাও তিনি জানিয়েছেন।

বুধবার হলদিয়ায় মনোনয়নপত্র পেশ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর নন্দীগ্রামে ফিরে প্রচারও শুরু করেন। বেশ কয়েকটি মন্দির দর্শন করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রেয়াপাড়ায় তাঁর বাড়ির কাছেই বরোলিবাজারে একটি মন্দিরে ভিড়ের মধ্যে ধাক্কাধাক্কিতে পড়ে যান তিনি। পা, মাথায়, ঘাড়ে, কোমরে আঘাত লাগে তাঁর। তাঁর পায়ে বরফও দেওয়া হয়। সাধারণত গাড়িতে সামনে চালকের আসনের পাশে বসেন মমতা। কিন্তু এ দিন যন্ত্রণায় কাতর মমতা বসতে পারছিলেন না। তাঁকে পাঁজাকোলা করে পিছনের সিটে শুইয়ে দেন নিরাপত্তারক্ষীরা। এই মুহূর্তে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এসএসকেএম-এ নিয়ে আসা হয়েছে।

এদিকে আজকের ঘটনায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘ষড়যন্ত্র’-এর অভিযোগকে উড়িয়ে দিয়েছেন বিরোধীরা। রাজ্য বিজেপির দাবি নন্দীগ্রামে নির্বাচনে হারের আশঙ্কা করেই, সহানুভূতি আদায়ের জন্য ‘নাটক’ করছেন তিনি। আজ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আঘাতকে নাটক বলে দাবি করেছেন বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং। একই দাবি রাজ্যে বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়রও। তিনি এও বলেছেন যে, এভাবে তিনি সহানুভূতি আদায় করতে পারবেন না।

কৈলাস বিজয়বর্গীয় বক্তব্য, ক্ষমতায় আসার পর নন্দীগ্রামকে দেখেননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শিল্পায়ন হয়নি, কৃষিতে উন্নয়ন হয়নি, নন্দীগ্রাম বঞ্চিত থেকেছে। শুভেন্দু অধিকারী সেখানকার ভূমিপুত্র। ওখানে মমতা হারবেন। আর তিনি সেটা নিজেও বুঝতে পেরেছেন যে, ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আসলে সহানুভূতি ছাড়া উনি জিততে পারবেন না। তাই এই নাটক। তিনি এও বলেন যে, বাংলার কোনও রাজনৈতিক দলের কর্মীর তাঁর উপরে আঘাত করার সাহস নেই।

অন্যদিকে বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংয়ের দাবি, ‘নিজের ভবানীপুর ছেড়ে নন্দীগ্রামে পালিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ‘z’ ক্যাটাগরির নিরাপত্তা পান। চারদিক থেকে তাঁকে ঘিরে রাখা হয়। সেই সমস্ত পুলিশকে সাসপেন্ড করা উচিত। চারজন আইপিএসকে সাসপেন্ড করা উচিত। এই ঘটনা কী করে সম্ভব! সবটাই ওনার নাটক। মিথ্যে বলে সহানুভূতি আদায় করার চেষ্টা করছেন।’ অন্যদিকে, বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য, তৃণমূলের ষড়যন্ত্রের অভিযোগের বিরুদ্ধে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত করার দাবি করেছেন।

উল্লেখ্য, এই মুহূর্তে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এসএসকেএম-এ নিয়ে আসা হয়েছে। এসএসকেএম-এর উডবার্ন ব্লকে তাঁকে রাখা হয়েছে। প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে ট্রমা কেয়ার সেন্টারেও। চিকিৎসকেরা রয়েছেন। প্রাথমিকভাবে একটি চিকিৎসার পদ্ধতিও ভেবে রাখা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ৫ জন বিশেষজ্ঞ টিম তৈরি করা হয়েছে। এই টিমে রয়েছে সার্জারি বিভাগের বিশেষজ্ঞ, মেডিসিন, কার্ডিওলজি, এণ্ডোক্রনলজি ইত্যাদি বিভাগের বিশেষজ্ঞরা। হাসপাতালে রয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, অরূপ বিশ্বাস, ফিরহাদ হাকিম প্রমুখরা। উপস্থিত আছেন অনেক দলীয় কর্মী এবং নেতা। পাশাপাশি কিছুক্ষণ আগেই এসে পৌঁছেছেন রাজ্যপাল। কিন্তু তিনি উপস্থিত হতেই তৃণমূল কর্মী- সমর্থকদের তরফ থেকে 'গো ব্যাক' স্লোগান দেওয়া হয়।