শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

‘আমি মানুষের উপর আস্থা রেখেছি,’ চণ্ডীপুরের জনসভা থেকে বললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

০৫:৪৭ পিএম, মার্চ ২৮, ২০২১

‘আমি মানুষের উপর আস্থা রেখেছি,’ চণ্ডীপুরের জনসভা থেকে বললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

বংনিউজ ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ আজ রাজ্যে দোল উৎসব। আর আজই তৃণমূলের তারকা প্রার্থী সোহমের হয়ে চণ্ডীপুরে জনসভা করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ চণ্ডীপুরের জনসভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, আগামী ২ মে বাংলায় আরও একটা দোলযাত্রা হবে। সবুজ আবিরে দোলযাত্রা হবে।

অতীতে এই আসনে দু’দুবার হেরেছেন সোহম। এবার মুখরক্ষা হয় কিনা সেটাই দেখার। নন্দীগ্রামে ঢোকার পূর্বে শেষ সভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বেশ ভালরকম ভোকাল টনিক দিলেন। পাশাপাশি দলীয় কর্মীদের উদ্দেশে বললেন যে, খেলাটা মা-বোনেদের উপর ছেড়ে দাও। এদিন তৃণমূল নেত্রী পরিষ্কার বুঝিয়ে দিলেন যে, এবার তাঁর তুরুপের তাস মহিলা ভোট।

এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সভামঞ্চে উপস্থিত ছিলেন রাজারহাটের প্রার্থী তথা সঙ্গীতশিল্পী অদিতি মুন্সী। এদিন শুরুতেই তৃণমূল নেত্রী বলেন যে, ‘অদিতি আমার হয়ে দাঁড়িয়েছে। আজ দোলের দিন অদিতিকে দেখলে সবাই খুশি হবে। আজ ও নন্দীগ্রামে গান গাইবে। দোল উৎসবে যোগ দেবে।‘

অন্যদিকে চণ্ডীপুরে কেন সোহম, অনেকের মনেই সে প্রশ্ন দানা বাঁধলেও, তিনি বলেন যে, ‘কাবুলকে টিকিট দিতে পারলাম না। কারণ ওঁকে দিয়ে অন্য কাজ করাব আমি। সোহম ফ্লিমস্টার বলে টিকিট পায়নি। ও অনেক কাজ করে। মিটিং মিছিল করে। আসে যায়, চলে যায় না সোহম।‘ এর পাশাপাশি তিনি এও বললেন যে, ‘সোহম অদিতি ভুলে যান। মনে রাখবেন, প্রার্থী আমি। আমায় সরকার গড়তে হবে।‘ অর্থাৎ সেই এক কথা যা শুরু থেকে তিনি বলে আসছেন যে, প্রতি আসনে তিনিই প্রার্থী।

এদিনের সভাতেও তিনি গদ্দারের প্রসঙ্গ ফের তুলে ধরেন। তিনি বলেন যে, ‘নন্দীগ্রাম তো চন্ডীপুর দিয়েই যেতে হয়। জমি আন্দোলনের সময় আমাকে এখানে ঘন্টার পর ঘন্টা আটকে রেখেছিল। যারা বড় বড় কথা বলছে আজ, তাদের সেদিন আমি পাইনি। আমি ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়ে ছিলাম। মীরজাফর গদ্দাররা বাড়িতে ঘুমিয়ে ছিল। আমি খারাপ কথা বলিনা। আজ বললাম।‘

উল্লেখ্য, এদিকে সবেমাত্র প্রথম দফার ভোট হয়েছে। এখন ৭ দফার ভোট বাকি। তারপর ফল ঘোষণা। তাও ২ মে। তবে তার আগেই প্রথম দফার ফল ঘোষণা করে দিলেন অমিত শাহ। ২ মে পর্যন্ত অপেক্ষা করতে রাজি নন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।

প্রথম দফার ভোটের পরের দিনই প্রথম দফার ভোটের ফল একপ্রকার ঘোষণা করে দিলেন তিনি। দিল্লিতে সাংবাদিক বৈঠক করে তিনি দাবি করলেন, প্রথম দফার ৩০ টি আসনের মধ্যে ২৬ টি আসনেই জিতবে বিজেপি। তিনি দাবি করেছেন, বিজেপি বাংলায় ২০০ আসনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে চলেছে। প্রথম দফার ভোটের পরে এমনই স্পষ্ট ইঙ্গিত কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর।

অমিত শাহের এই মন্তব্যের পাল্টা নির্বাচনী প্রচার সভা থেকে জবাব দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বললেন, তৃণমূলের হয়ে জবাব মানুষ-ই দেবে। তাঁর আলাদা করে কিছু বলার প্রয়োজন পড়বে না।

বললেন, 'কাল ৩০ আসনে ভোট হয়েছে। কটা আসন পাব, আমি কী করে জানব? আমি কি মেশিনের মধ্যে ঢুকে যাব! ৩০ এ ২৬ কেন বলছ। বল না ৩০ টাই পাবে। ৩০ এর মধ্যে নাকি ২৬ পাবে। আমি একটাও বলব না। আমি মানুষের ওপর ছেড়ে দিয়েছি।'

আজ বহিরাগত তোপ দাগলেন আরও একবার মমতা। একই সঙ্গে আধা সামরিক বাহিনীর দাদাগিরি নিয়েও মুখ খুললেন। বললেন, ‘সেন্ট্রাল পুলিশ দিয়ে কাল কেন মেরেছে? উত্তর কাঁথিতে বহিরাগত গুন্ডা ধরা পড়ল। তাঁরা বহিরাগত।'

আজ শুভেন্দু অধিকারী, শিশির অধিকারীদের নাম না নিয়েই মমতা আক্রমণ করলেন, বললেন, ‘ এমনি ভোটে জেতার ক্ষমতা নেই। বাবা, ছেলে, জ্যাঠারা ভোট লুঠ করেছে। জ্যাঠার ছেলে টাকা দিয়েছে সেদিন, ধরা পড়েছে। গ্রেফতার করেনি যদিও।‘

এদিনের সভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশ্ন, এত পেট্রোল পাম্প, ট্রলার কোথা থেকে এল। কো-অপারেটিভ- এর টাকা কোথা থেকে এল?’ অধিকারীদের নাম না নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন বলেন, ‘আমি ভালোবাসা দিয়েছিলাম। জানতাম না কেউটে, গোখরো বেরোবে। এত বড় ক্রিমিনাল কাণ্ড করে জানতাম না। মনে রাখবেন আমারও চোখ আছে। এই জেলায় কী হবে দেখব। কারণ আমার দোষ, আমি বড় বড় গদ্দার, মীরজাফর পুষেছি এখানে। ভাবছে দিল্লির দালালি করে সব পাওয়া যায়।’

এদিনের সভায় নয়া ভঙ্গিতে মমতার বাণী, ‘বিজেপির হাতে স্টেনগান, জনগণ সাবধান। বহিরাগতের হাতে স্টেনগান, জনগণ সাবধান।‘

সভা শেষ হওয়ার আগে, কেন্দ্রীয় বাহিনীকে পেশীশক্তি প্রয়োগ না করারও অনুরোধ করলেন মমতা। বললেন, "কেন্দ্রীয় বাহিনীকে সম্মান করে বলছি, তোমরা আমাদের অতিথি। গ্রামে গ্রামে গিয়ে বিজেপিকে ভোট দিতে বলো না। যোগীর ভোট, মোদির ভোট এখান থেকে হয় না। তোমরা নিজেদের কাজ করো। না হলে আমায় মুভমেন্ট করতে হবে।’