শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

'আমার থেকে শুভেন্দুও টাকা নিয়েছেন, তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়নি কেন?' বিস্ফোরক ম্যাথু স্যামুয়েল

০২:৩৩ পিএম, মে ১৭, ২০২১

'আমার থেকে শুভেন্দুও টাকা নিয়েছেন, তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়নি কেন?' বিস্ফোরক ম্যাথু স্যামুয়েল

নারদকাণ্ডে আজ সকালেই গ্রেপ্তার হন তৃনমূল কংগ্রেসের অভিযুক্ত চার নেতা-মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, মদন মিত্র, সুব্রত মুখোপাধ্যায় ও শোভন চট্টোপাধ্যায়। নিজাম প্যালেসে সিবিআই দপ্তরে নিয়ে আসা হয় তাঁদের। সূত্রের খবর, রাজ্যপালের অনুমতি মিললেই চার নেতা-মন্ত্রীর বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট পেশ করবে সিবিআই। জানা গিয়েছে, তাঁদের আদালতেও পেশ করা হবে। এরপরই সিবিআইয়ের গ্রেপ্তারি প্রসঙ্গে মুখ খুললেন নারদ কর্তা ম্যাথু স্যামুয়েল। হয়ে উঠলেন বিস্ফোরক।

ম্যাথু স্যামুয়েল প্রশ্ন তুলেছেন, "বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীও আমার থেকে টাকা নিয়েছিলেন। তা সত্ত্বেও তাঁকে কেন গ্রেফতার করা হল না?" পাশাপাশি ম্যাথু আরও বলেন, "নারদ তদন্তের বিচার পেতে অনেকটা সময় লেগে গেল। তবে শেষমেশ বিচার হল। কিন্তু চারজনকে গ্রেফতার করা হলেও শুভেন্দু অধিকারীকে করা হয়নি। উনিও তো আমার থেকে টাকা নিয়েছেন। সেটা রেকর্ড করাও হয়েছিল। তা সত্ত্বেও তাঁকে কেন গ্রেফতার করা হল না? বিচার সকলের জন্যই একই হওয়া উচিৎ।" শুভেন্দুর পাশাপাশি মুকুল রায়কে নিয়েও একই প্রশ্ন উঠেছে।

[embed]https://www.facebook.com/mathew.samuel.908/posts/10227763088291236[/embed]

সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুলেছে তৃণমূলও। দলের প্রশ্ন, একই অভিযোগে অভিযুক্ত হলেও নারদা-কাণ্ডে কেন ছাড় শুভেন্দু-মুকুলের? কেনই বা গ্রেপ্তার নন তাঁরা? তাহলে কি বিজেপিতে যোগদানের জন্যই ছাড় পেয়েছেন শুভেন্দু-মুকুল? এমনটাই ধারণা করছে তৃণমূল। তৃণমূলের তরফে বিজেপির বিরুদ্ধে প্রতিহিংসাপরায়ণ রাজনীতির অভিযোগও তোলা হয়েছে। তবে বিজেপির প্রাক্তন রাজ্যসভাপতি রাহুল সিনহার মতে, এই বিষয়টি সম্পূর্ণই সিবিআই-এর হাতে। এর মধ্যে বিজেপির যোগসাজশ নেই।

সিবিআই সূত্রে অবশ্য জানানো হয়েছে, নারদা কাণ্ডের অভিযোগের সময় সাংসদ পদে শুভেন্দু লোকসভায় আর মুকুল রাজ্যসভায় ছিলেন। তাঁদের গ্রেফতার করতে লোকসভার অধ্যক্ষ এবং রাজ্যসভার চেয়ারম্যানের অনুমতি প্রয়োজন৷ এই মামলায় অভিযুক্তর বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করার জন্য লোকসভা অধ্যক্ষের অনুমতি চাওয়া হয়েছে। কিন্তু এখনও সেই অনুমতি মেলেনি। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে এও খবর, যেহেতু মুকুলের বিরুদ্ধে তেমন কোনও তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি, তাই রাজ্যসভার চেয়ারম্যানের থেকে অনুমতিও চাওয়া হয়নি। ফলে দুই নেতার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হয়নি।

এদিকে বিধানসভার অধ্যক্ষ সূত্রে অভিযোগ, তাদের থেকে এমন কোনও অনুমতিই নেওয়া হয়নি। তৃণমূলের চার নেতা-মন্ত্রীর ক্ষেত্রে গ্রেপ্তারির অনুমোদন দিয়েছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। এই প্রসঙ্গে বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষোভের সঙ্গে জানিয়েছেন, "ফিরহাদ হাকিমদের গ্রেপ্তারি সম্পূর্ণ বেআইনি। আমাদের কাছে কলকাতা হাইকোর্ট জানতে চায়, কাউকে গ্রেপ্তার করার ক্ষেত্রে অধ্যক্ষের অনুমতি নেওয়া হয়েছে কিনা। সেখানেই জানানো হয়েছিল, আমাদের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ করা হয়নি। আমাকে কোনও চিঠিও দেওয়া হয়নি।"

রাজ্যপালের অনুমোদনের প্রসঙ্গে অধ্যক্ষ জানান, "হাইকোর্ট যেখানে স্পিকারের অনুমতি নিতে বলছে, সেখানে চার্জশিটের অনুমতি দিয়ে দিলেন রাজ্যপাল। অথচ তিনি যখন এই কাজ করলেন, তখন বর্তমানে আমি স্পিকার পদে বর্তমান। তাই আমার অনুমতি না নিয়ে রাজ্যপালের অনুমতি নিয়ে গ্রেপ্তারি সম্পূর্ণ বেআইনি।" সব মিলিয়ে নারদা-কাণ্ডে রাজ্য-রাজনীতি জুড়ে এখন চরম তুলকালাম!