বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

মুখ্যমন্ত্রীর বিদেশ সফরে কাঁটা! বিদেশমন্ত্রকের অনুমতি না মেলায় বাতিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রোম সফর

০৩:৫৫ পিএম, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২১

মুখ্যমন্ত্রীর বিদেশ সফরে কাঁটা! বিদেশমন্ত্রকের অনুমতি না মেলায় বাতিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রোম সফর

অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে রোম সফরে যাওয়ার কথা ছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। কিন্তু সূত্রের খবর, সেই সফরে আপত্তি তুলেছে বিদেশমন্ত্রক। মুখ্যমন্ত্রীর পদের সঙ্গে অনুষ্ঠান সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। এই যুক্তিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সফরের অনুমতি দিল না কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে থাকা বিদেশ মন্ত্রক। শুক্রবার গভীর রাতে বিদেশ মন্ত্রকের এক যুগ্মসচিব চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন, যে কর্মসূচিতে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে, সেই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ একটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর জন্য যুক্তিযুক্ত নয়। ফলে পুজোর আগে বাতিল হয়ে গেল মমতার এই বিদেশ সফর।

অক্টোবরের ৬ ও ৭ তারিখ এক আন্তর্জাতিক সংস্থার আমন্ত্রণে রোমে যাওয়ার কথা ছিল রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। ইটালির এক সংগঠন তাঁকে আমন্ত্রণপত্র পাঠিয়েছিল। তারা জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মের্কেল, পোপ এবং ইটালির শীর্ষ রাজনৈতিক নেতৃত্বকেও আমন্ত্রণ জানিয়েছে। সেই আমন্ত্রণ সাড়া দিয়ে রোমের ওই অনুষ্ঠানে হাজির থাকবেন বলে কথাও দিয়েছিলেন মমতা। ঠিক ছিল, আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর ভবানীপুরের উপনির্বাচন এবং ৩ অক্টোবর ফলপ্রকাশের পর ৬ তারিখ রোম সফরে যাবেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রস্তুতিও সাড়া হয়ে গিয়েছিল। নিয়ম অনুযায়ী, ওই অনুষ্ঠানে যাওয়ার জন্য বিদেশ মন্ত্রকের অনুমতি লাগত। কিন্তু তারা চিঠি দিয়ে আপত্তি জানাতেই বাতিল হয়ে গেল যাত্রা।

উল্লেখ্য, ইটালির সংস্থার ওই অনুষ্ঠানটি মূলত শান্তি সম্মেলন। সেখানে কায়রোর গ্রেট ইমাম থেকে খ্রিস্টান অর্থোডক্স চার্চের প্রধান, সব ধর্মের প্রতিনিধিই আমন্ত্রিত। সেখানেই আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। কিন্তু বিদেশ মন্ত্রকের অনুমতি না মেলায় আপাতত সেখানে যাওয়া হচ্ছে না তাঁর। এরপরই অবশ্য তৃণমূলের একাংশ মনে করছেন, এর পিছনে রাজনৈতিক কোনও কারণ রয়েছে। মোদির আমেরিকা সফরের পরই মমতার ইউরোপ সফর বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। তাই হয়তো অনুমতি দেওয়া হল না।

ইতিমধ্যেই ঘটনার সমালোচনা করে তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেন, "বিষয়টি অত্যন্ত লজ্জাজনক। এটি নেতিবাচক সিদ্ধান্ত। কেন্দ্রের অনুমতি দেওয়াটা শুধুমাত্র ফর্মালিটি। এর আগেও মোদির বিদেশ মন্ত্রক শিকাগো যাওয়ার অনুমতি দেয়নি। এই কাজের নিন্দা করছি।" অন্যদিকে, বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্যের পাল্টা দাবী, "এটি বেশ স্পর্শকাতর বিষয়। শান্তির আড়ালে বহু জায়গায় বহু কিছু ঘটে। বিদেশ মন্ত্রক হয়তো মনে করছে, সেখানে একজন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য রাখা হয়ত যথেষ্ট নয়। সেই কারণেই অনুমতি দেয়নি।" তবে এ কথা ঠিক যে, এর আগেও মুখ্যমন্ত্রীর চিন সফর, শিকাগো সফর বাতিল করা হয়েছিল। সেই দুইবারও বিদেশমন্ত্রক কোনও না কোনও যুক্তি দেখিয়ে সফরে অনুমোদন দেয়নি। এবারও ফের অনুমতি মিলল না। তাই বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক তরজা বেশ তুঙ্গেই বলা চলে।