বংনিউজ ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ আবারও পিছল নন্দীগ্রাম মামলার শুনানি। কলকাতা হাইকোর্টের পক্ষ থেকে এদিন শুনানিতে বলা হয়েছে, নন্দীগ্রামে ভোট গণনায় কারচুপির অভিযোগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দায়ের করা মামলায় কেন শুভেন্দু অধিকারী হাইকোর্টের উপর আস্থা রাখতে পারছেন না, তা লিখিত আকারে জানাতে হবে তাঁকে। এদিন এমন নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি শম্পা সরকার। আগামী ২৯ নভেম্বরের মধ্যে তাঁকে লিখিত আকারে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে ১ ডিসেম্বর।
নন্দীগ্রামে ভোট গণনায় কারচুপি হয়েছে, এই অভিযোগে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই মামলার শুনানি ধার্য হয় বিচারপতি কৌশিক চন্দের আদালতে। কিন্তু ওই বেঞ্চ মামলায় শুনানি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর আপত্তি থাকায়, মামলা পাঠানো হয় বিচারপতি শম্পা সরকারের বেঞ্চে। তৃণমূলের অভিযোগ ছিল, কৌশিক চন্দের সঙ্গে বিজেপির যোগাযোগ ছিল। অন্যদিকে, হাইকোর্টে বেঞ্চ বদল হওয়ায় সুবিচার পাবেন না এই অভিযোগ তুলে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন শুভেন্দু অধিকারী।
এই মামলা প্রথম উঠেছিল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি কৌশিক চন্দের ডিভিশন বেঞ্চে। কিন্তু বিচারপতির সঙ্গে বিজেপির যোগসাজশ থাকায় মুখ্যমন্ত্রীর তরফে আবেদন জানানো হয় যেন, এই মামলাটি অন্য বিচারপতির বেঞ্চে সরিয়ে দেওয়া হয়। এর কারণ হিসেবে দাবি করা হয়, কৌশিক চন্দকে একাধিক সময় বিজেপির নানা অনুষ্ঠানে দেখা গিয়েছে। তিনি ‘বিজেপি মনোভাবাপন্ন’ বলেও দাবি করে তৃণমূলের আইনজীবী সেল। ফলে যে মামলাটি খোদ বিজেপি বিধায়কের বিরুদ্ধে, তার শুনানি কৌশিক চন্দের এজলাসে হলে নিরপেক্ষ রায় নাও হতে পারে, এমন আশঙ্কা ছিল তৃণমূল নেত্রীর। অনেক তর্কবিতর্কের পর, বিচারপতি মামলাটি থেকে সরে দাঁড়ান। তবে, মামলাটি ছেড়ে দেওয়ার সময় বিচারপতি অভিযোগে বলেন, ‘বিচার ব্যবস্থাকে কলুষিত করা হয়েছে।’ অন্যদিকে, হাইকোর্টে বেঞ্চ বদল হওয়ায় সুবিচার পাবেন না এই অভিযোগ তুলে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন শুভেন্দু অধিকারী।
অপরদিকে, মামলা স্থানান্তরের জন্য সুপ্রিম কোর্টে করা আবেদনের শুনানি ২৯ নভেম্বর অবধি পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাই সেই দিকে নজর রেখে কলকাতা হাইকোর্ট এই মামলা শুনানি ১ ডিসেম্বর অবধি মুলতবি রাখল।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, নন্দীগ্রামে বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারীর কাছে ১৭৩৬ ভোটে পরাজিত হয়েছেন তৃণমূলপ্রার্থী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর পরই ভোটগণনায় কারচুপির অভিযোগ তুলতে শুরু করে তৃণমূল। গত ১৭ জুন ভোটের ফলকে চ্যালেঞ্জ করে আদালতে নির্বাচনী মামলা দায়ের করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মামলাটি বিচারপতি কৌশিক চন্দর বেঞ্চে ওঠে। এতে আপত্তি জানিয়ে মামলা স্থানান্তরের দাবিতে সরব হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপর মামলা থেকে অব্যহতি নেন বিচারপতি চন্দ। মামলাটি যায় বিচারপতি শম্পা সরকারের বেঞ্চে।
অন্যদিকে, কিন্তু এরই মধ্যে মামলা রাজ্যের বাইরে সরানোর আবেদন জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন শুভেন্দু। যার জেরে তিন মাসের জন্য মামলার শুনানি স্থগিত করে দেন বিচারপতি সরকার। তারপর সোমবার অর্থাৎ এদিন ছিল মামলার শুনানি। কিন্তু এদিন ফের মামলার শুনানি পিছনোর আবেদন জানান শুভেন্দুবাবু। সঙ্গে জানান হাইকোর্টের বিচারে ভরসা নেই তাঁর। এর পরই বিচারপতি সরকার শুভেন্দুবাবুর আইনজীবীকে নির্দেশ দেন, কেন বিরোধী দলনেতার হাইকোর্টের বিচারে আস্থা নেই তা আগামী ২৯ নভেম্বরের মধ্যে লিখিত আকারে তাঁকে জানাতে হবে।