বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

প্রয়োজন বিশ্বের সবচেয়ে দামী ওষুধ! ১৬ কোটি টাকা দান করে শিশুর চিকিৎসায় সাহায্য করলেন ২ লাখ মানুষ!

০২:১৮ পিএম, মে ৮, ২০২১

প্রয়োজন বিশ্বের সবচেয়ে দামী ওষুধ! ১৬ কোটি টাকা দান করে শিশুর চিকিৎসায় সাহায্য করলেন ২ লাখ মানুষ!

মাস পাঁচেকের ছোট্ট শিশুটির নাম ধৈর্য্যরাজ সিং রাঠৌর। জন্ম আমেদাবাদে। আর জন্ম থেকেই প্রাণঘাতী রোগে জর্জরিত সে। স্পাইনাল মাসকপলার অ্যাট্রোফি টাইপ-১ নামে একটি অত্যন্ত বিরল নিউরোমাসকুলার রোগের শিকার শিশুটি। বিশ্বে জন্ম নেওয়া ১০ হাজার শিশুর মধ্যে মাত্র ১ জন এই রোগের কবলে পড়ে। সেই রোগই শরীর জুড়ে রয়েছে ৫ মাসের ছোট্ট শিশুটির।

রোগটির ফলে আসলে কী সমস্যা হয়? এই রোগে আক্রান্ত শিশুরা শরীরের কোনও অঙ্গই নাড়াচাড়া করতে পারে না। উঠে বসতে বা অন্য শিশুদের মতো হাত-পা ছুঁড়ে খেলতে পারে না। ধৈর্য্যরাজের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটেছিল। হাত-পা নাড়া তো দূর, এই শিশুটি মুখ খুলে খেতে পর্যন্ত পারত না। দ্রুত চিকিৎসা শুরু না করলে শিশুটিকে হয়তো বাঁচানোই যেত না!

কিন্তু এখানেই এল আরেক বিপদ! শিশুটির চিকিৎসার খরচ প্রায় আকাশছোঁয়া। বিরল এই রোগটির চিকিৎসার জন্য একটি বিশেষ ওষুধের প্রয়োজন ছিল। যা এখনও পর্যন্ত বিশ্বের সবচেয়ে দামি ওষুধ। নাম জলজেনসমা। যার দাম শুনলে চোখ কপালে উঠবেই। ১৬ কোটি টাকা! এই ওষুধটিই ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে যা শিশুটিকে দেওয়া হত।

ইঞ্জেকশনটি তৈরি করে আমেরিকার বায়োটেকনোলজি সংস্থা অ্যাভেক্সিস। ব্রিটেনের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের মতে, বিরল ওই রোগে আক্রান্তদের দেহে এসএমএন১ জিনটি থাকে না। শিরার মধ্যে দিয়ে ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে এই জিনটিই ঢুকিয়ে দেওয়া হয় শরীরে। এই জিন থেকে পেশী সক্রিয় রাখার প্রয়োজনীয় প্রোটিন সংশ্লেষ হয়। ওষুধের একটি ডোজই যথেষ্ট। তা শরীরে প্রবেশ করার পরই কাজ শুরু হয়ে যায়। শরীরের সমস্ত পেশী স্বাভাবিক হতে শুরু করে এরপর।

[embed]https://www.instagram.com/p/COe35LCg-Aq/[/embed]

কিন্তু ১৬ কোটি টাকা দামী এই ইঞ্জেকশন জোগাতে হিমশিম খেয়ে যান ধৈর্য্যরাজের পরিবার। তাঁদের ঘর-বাড়ি, গয়নাগাটি বিক্রি করলেও চিকিৎসার খরচ জোগানো সম্ভব হচ্ছিল না। এরপরই তাঁদের পাশে এসে দাঁড়ালেন ২ লাখ মানুষ। ক্রাউডফান্ডিং প্ল্যাটফর্মের সাহায্যে ১৬ কোটির টাকার ব্যবস্থা করে তুলে দিলেন শিশুটির মা-বাবার হাতে। সেই টাকাতেই এরপর চিকিৎসা শুরু হয়। আপাতত বিশ্বের সবচেয়ে দামি ইঞ্জেকশন শরীরে নিয়ে সুস্থ হওয়ার পথে এক ধাপ এগিয়েছে সে।