শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

স্বপ্ন হল সত্যি! পক্ষাঘাতকে জয় করে ভারতীয় সেনার পরীক্ষায় সফল যুবক

মৌসুমী মোদক

প্রকাশিত: জুন ১৪, ২০২২, ০৭:৩৪ পিএম | আপডেট: জুন ১৫, ২০২২, ০১:৩৪ এএম

স্বপ্ন হল সত্যি! পক্ষাঘাতকে জয় করে ভারতীয় সেনার পরীক্ষায় সফল যুবক
স্বপ্ন হল সত্যি! পক্ষাঘাতকে জয় করে ভারতীয় সেনার পরীক্ষায় সফল যুবক

এভাবেও ফিরে আসা যায়!  জটিল রোগে পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়লেও হাল ছাড়েননি। তাই হয়তো অসম্ভবকে সম্ভব করে দেখালেন জম্মুর বছরের একুশের তরুণ দানিশ ল্যাঙ্গার (Danish Langer)। পক্ষাঘাতকে জয় করেই তিনি আজ সফল ভারতীয় সেনার (Indian Army) কঠিন পরীক্ষায়৷ তাঁর সাফল্যের কাহিনী শুনে অবাক গোটা দেশ৷

ছেলেবেলা থেকেই স্বপ্ন ছিল, বড় হয়ে যোগ দেবেন সেনাবাহিনীতে। দেশরক্ষায় নিয়োজিত করে দেবেন নিজেকে৷ কিন্তু বাধ সাধল শরীর৷ সেই ২০১৭ সাল থেকে জটিল অসুখে আক্রান্ত হলেন দানিশ। যার নাম, গালিয়ান ব্যারে সিনড্রোম। চিকিৎসক মহলে যা জিবিএস (GBS) নামে পরিচিত। এই জটিল রোগে ভয়ানকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয় স্নায়ু৷ রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতাই ভেঙে পড়ে আক্রমণ চালায় শরীরে।

জিবিএসেএ আক্রান্ত হওয়ার পরেই পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন দানিশ। প্লাজমা থেরাপির মাধ্যমে চলত রোগের চিকিৎসা৷ তবে দানিশের চোখে তখনও ছিল সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার স্বপ্ন। যদিও সকলে ভেবেছিলেন তিনি আর পারবেন না। ইচ্ছে থাকলেও সঙ্গ দেবে না শরীর। এমনকি দানিশের পরিবারও তেমনটাই ভেবেছিল৷ কিন্তু দানিশ হাল ছাড়েননি৷

অবশেষে সকলের ভাবনাকে ভুল প্রমাণ করে দিয়ে সেনা বাহিনীর পরীক্ষায় দুর্দান্ত ফলাফল করলেন দানিশ। সম্প্রতি উত্তরাখণ্ডের সেনা অ্যাকাডেমি থেকে যে ২৮৮ জন পরীক্ষার্থী সফল হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে একজন হলেন দানিশও। নিজের স্বপ্নকে তিনি সত্যি করেই ছাড়লেন। দেখিয়ে দিলেন ইচ্ছে এবং মানসিক দৃঢ়তা থাকলে সকল বাধা পেরিয়ে অসম্ভবকেও সম্ভব করে ফেলা যায়।

ছেলের এই কৃতিত্বে স্বাভাবিকভাবেই উচ্ছ্বসিত দানিশের মা-বাবা। একইসঙ্গে তাঁরা গর্বিতও বটে৷ দানিশের বাবা রাজেশ ল্যাঙ্গারের কথায়, "আমরা ছেলের জন্য গর্বিত। ও কম বয়সে যেভাবে কঠিন চ্যালেঞ্জ সামলে সাফল্য পেয়েছে তা অনেকেই পারে না৷ অনেকেই এমন লড়াই ছেড়ে দেয়। কিন্তু দানিশের লক্ষ্যই ছিল ভারতীয় সেনায় যোগ দেওয়া। সেটাই করে দেখালো।"

অন্যদিকে, দানিশের মা অঞ্জু ল্যাঙ্গার জানান, যেহেতু ছোট থেকেই সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার স্বপ্ন ছিল দানিশের তাই ওকে বাড়ি থেকে সেনাস্কুলেই ভর্তি করতে চেয়েছিলেন তাঁরা৷ কিন্তু তখন ঠাকুমা আপত্তি তোলেন। যদিও সেই আপত্তি অগ্রাহ্য করেই দানিশকে আর্মি স্কুলে ভর্তি করানো হয়। সেখান থেকে উত্তরাখণ্ড মিলিটারি অ্যাকাডেমিতে গিয়ে এই সাফল্য দানিশের।

আসলে যেভাবে শারীরিক প্রতিবন্ধকতার বিরুদ্ধে লড়াই করে সাফল্য অর্জন করেছে দানিশ তা হয়তো খুব সহজ নয়। কিন্তু তিনি তা করে দেখিয়েছেন। আসলে দানিশের মূলমন্ত্র একটাই, নিজের লক্ষ্যে পৌঁছতে গেলে নিজেকে উজার করে দিতে হবে। মোটেই হাল ছাড়লে চলবে না। আর তা করেই সাফল্য আজ হাতের মুঠোয় ধরা দিয়েছে এই দৃঢ়প্রতিজ্ঞ তরুণের।