বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

ঐতিহাসিক! রাইসিনার সিংহাসন দখল প্রথম আদিবাসী মহিলার! জানুন দ্রৌপদী মুর্মুর জানা-অজানা কাহিনী

চৈত্রী আদক

প্রকাশিত: জুলাই ২২, ২০২২, ০৭:৩৪ এএম | আপডেট: জুলাই ২২, ২০২২, ০১:৩৪ পিএম

ঐতিহাসিক! রাইসিনার সিংহাসন দখল প্রথম আদিবাসী মহিলার! জানুন দ্রৌপদী মুর্মুর জানা-অজানা কাহিনী
ঐতিহাসিক! রাইসিনার সিংহাসন দখল প্রথম আদিবাসী মহিলার! জানুন দ্রৌপদী মুর্মুর জানা-অজানা কাহিনী

বংনিউজ২৪×৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ প্রথম আদিবাসী মহিলা রাষ্ট্রপতি হিসেবে রাইসিনার সিংহাসন দখল করলেন দ্রৌপদী মুর্মু। এ যেন এক ঐতিহাসিক জয়! গণনার প্রথম থেকেই বিরোধী দলের প্রার্থী যশবন্ত সিনহাকে পেছনে ফেলে অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছিলেন দ্রৌপদী। অবশেষে শেষ হাসি হাসলেন দ্রৌপদী মুর্মু। দেশের ১৫ তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে নির্বাচিত হলেন তিনি।

১৯৫৮ সালের ২০ জুন। ওড়িশার ময়ূরভঞ্জ জেলার বায়দাপোসি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন দ্রৌপদী। তাঁর বাবা ছিলেন গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান। প্রাথমিক পর্যায়ের পড়াশোনা শেষ করে তিনি ভর্তি হন ভুবনেশ্বরে রামদেবী উইমেন্স কলেজে। পড়াশোনা শেষ করে শুরু হয় কর্মজীবন।‌ ওড়িশা রাজ্য সরকারের অধীনে করণিক হিসেবে কর্মরতা ছিলেন তিনি। এরপর ১৯৭৯ সাল থেকে ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত রাজ্যের সেচ ও জ্বালানি বিভাগে জুনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবেও কাজ করেন দ্রৌপদী মুর্মু।

কেরিয়ার জীবনে শিক্ষকতাও করেছেন তিনি। ১৯৯৪ থেকে ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত ওড়িশার রায়েরংপুরের অরবিন্দ ইন্টিগ্রাল এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টারে শিক্ষক হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন। সেই বছরই অর্থাৎ ১৯৯৭ সালেই তাঁর প্রথম রাজনীতির ময়দানে পা রাখা। ২০০০ ও ২০০৯ সালে রায়েরংপুর আসনে বিজেপির হয়ে লড়েন দ্রৌপদী। জয়লাভের পর ওড়িশার বিধানসভার সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন এই রাজনীতিক।

২০০২ থেকে ২০০৪ সাল, এই চার বছর বিজু জনতা দল এবং বিজেপির জোট সরকারের মন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন দ্রৌপদী মুর্মু। প্রথমক্ষেত্রে বাণিজ্য ও পরিবহন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকলেও পরবর্তীকালে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব গ্রহণ করেন এই আদিবাসী রাজনীতিক। এরপর ২০০৬ সালে তফসিলি সম্প্রদায়ের বিজেপির রাজ্য শাখার সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হন দ্রৌপদী। ২০০৯ সাল পর্যন্ত এই পদেই অধিষ্ঠিত ছিলেন তিনি।

এরপর ২০১৫ সালে ঝাড়খণ্ডের প্রথম মহিলা রাজ্যপাল হিসেবে নিয়োজিত হন। ২০২১ সালের জুলাই মাস পর্যন্ত ঝাড়খণ্ডের রাজ্যপালের দায়িত্ব সামলেছেন দ্রৌপদী। প্রথম মহিলা রাজ্যপাল হিসেবে অল্প কিছুদিনের মধ্যেই বিপুল জনপ্রিয়তা অর্জন করেন তিনি। যদিও ঝাড়খণ্ডের রাজ্যপাল পদে অধিষ্ঠিত থাকাকালীন সক্রিয় রাজনীতিতে খুব একটা দেখা যায়নি দ্রৌপদী মুর্মুকে। কিন্তু ২০১৭ সালে রাজনীতিতে নতুন করে তাঁকে নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। কানাঘুষো শোনা যায়, সম্ভাব্য রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থীদের তালিকায় নাম রয়েছে দ্রৌপদী মুর্মুরও।

বহু বছর ধরে বিজেপির সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন তিনি। তাই এনডি-এর রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী হিসেবে তাঁর নাম ঘোষণা করার পর থেকেই তাঁর জয় প্রসঙ্গে একপ্রকার নিশ্চিত ছিলেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এমনকি তিনি বলেছিলেন, “শ্রীমতী দ্রৌপদী মুর্মুজি তাঁর জীবন উৎসর্গ করেছেন সমাজের সেবা এবং দরিদ্র ও প্রান্তিকদের ক্ষমতায়নের জন্য। তাঁর সমৃদ্ধ প্রশাসনিক অভিজ্ঞতা রয়েছে এবং রাজ্যপাল পদে অসামান্য এক মেয়াদ অতিবাহিত করেছেন তিনি। আমি নিশ্চিত তিনি আমাদের দেশের একজন মহান রাষ্ট্রপতি হবেন।”

এদিন রাষ্ট্রপতি হিসেবে দ্রৌপদী মুর্মুর জয় যেন এক ইতিহাস সৃষ্টি করল। ওড়িশার প্রথম ব্যক্তি এবং প্রথম উপজাতীয় মহিলা হিসেবে শীর্ষ সাংবিধানিক পদে অধিষ্ঠিত হতে চলেছেন তিনি। আগামী ২৪ জুলাই শেষ হতে চলেছে রামনাথ কোবিন্দের কার্যকালীন মেয়াদ। এরপরই ২৫ জুলাই দেশের নয়া রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেবেন দ্রৌপদী মুর্মু।