শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

২১ হাজার টাকা নিয়ে ব্যবসা শুরু করে দেশের অন্যতম শিল্পপতি! জানুন জামশেদজি টাটার অজানা কাহিনী

মৌসুমী মোদক

প্রকাশিত: মে ২০, ২০২২, ০৫:৪৫ পিএম | আপডেট: মে ২০, ২০২২, ১১:৪৫ পিএম

২১ হাজার টাকা নিয়ে ব্যবসা শুরু করে দেশের অন্যতম শিল্পপতি! জানুন জামশেদজি টাটার অজানা কাহিনী
২১ হাজার টাকা নিয়ে ব্যবসা শুরু করে দেশের অন্যতম শিল্পপতি! জানুন জামশেদজি টাটার অজানা কাহিনী

দেশের অন্যতম সফল শিল্পপতিদের মধ্যে অন্যতম হলেন জামশেদজি টাটা। ভারতীয় শিল্প ক্ষেত্রে জামশেদজি টাটার গুরুত্ব অপরিসীম। মাত্র ২১ হাজার টাকা দিয়ে ব্যবসা শুরু করে ক্রমে তিনি হয়ে উঠেছিলেন দেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ শিল্পপতি। শিল্প জগতে তাঁর নজিরও কম নয়! ভারতে আধুনিক শিল্প প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে অন্যতম পথীকৃত বলা যায় তাঁকে।

দেশের অন্যতম প্রখ্যাত এই শিল্পপতি ১৮৩৯ খ্রিস্টাব্দের ৩ মার্চ দক্ষিণ গুজরাটের এক ছোট্ট শহর নাভিসারিতে জন্ম নেন। সে সময় শহরটি ছিল বরোদা রাজ্যের অংশ। বাবা ছিলেন নাসরওয়ানজি টাটা ছিলেন পার্সি পুরোহিত। বংশপরম্পরায় পৌরোহিত্যই ছিল তাঁদের পেশা। মা ছিলেন জীবনবাই।

জামশেদজি টাটার পরিবারে বাবা নাসরওয়ানজি টাটা পর্যন্ত ২৫ প্রজন্ম ধরে পৌরহিত্যে যুক্ত ছিলেন তাঁরা। পরবর্তীতে সেই পেশা ছেড়ে ব্যবসা করার উদ্দেশ্যে তৎকালীন বোম্বেতে চলে আসে টাটার পরিবার। বাবা নাসরওয়ানজি টাটার হাত ধরেই এরপর শুরু ব্যবসার। বাবার সঙ্গেই এরপর জীবনের ২৯ বছর বয়স পর্যন্ত ব্যবসার কাজে যুক্ত ছিলেন জামশেদজি টাটা। এরপর ১৮৬৮ সাল নাগাদ ২১০০০ টাকা মূলধন নিয়ে এক ট্রেডিং কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। ক্রমে সেই ব্যবসা থেকে আরও বহু ব্যবসা ছড়িয়ে পড়তে থাকে চারপাশে।

জামশেদজি টাটার বিভিন্ন ক্ষেত্রে তার ব্যবসা থাকলেও তিনি মূলত লৌহ ইস্পাত শিল্পের জন্যই অমর হয়ে থাকবেন। শিল্প ক্ষেত্রে তাঁর অসামান্য কৃতিত্বের জন্য এক সময় পণ্ডিত জহরলাল নেহেরু তাঁকে আধুনিক ভারতের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা বলেও আখ্যা দেন। এমনকি তাঁর নামে গড়ে ওঠে জামশেদপুর শহরও। এছাড়াও আরও নানা ক্ষেত্রে তাঁর অবদান অপরিসীম।

জামশেদজি টাটার সম্পর্কে যেটুকু জানা যায়, তিনি সমাজের অত্যন্ত বিত্তশালী একজন মানুষ হলেও তাঁর স্বভাব-চরিত্র, হাব-ভাব ছিল একেবারেই সাধারণ। সমাজের অন্যান্য ধনী মানুষদের সঙ্গে তালে তাল মিলিয়ে মদপান অথবা অন্য কোনও নেশা করতে দেখা যায়নি তাঁকে। কখনই অযথা সময় বা অর্থ ব্যয় করতেন না।

নিজের সন্তানদেরও একই শিক্ষা দিয়েছিলেন জামশেদজি৷ সন্তানদের সর্বদা নম্র ও ভদ্র ব্যবহার করতে শিখিয়েছিলেন। সমাজের সকলের সঙ্গেই মিশে যাওয়ার প্রবণতা ছিল তাঁর৷ জামশেদজি-র মুম্বইয়ের বাড়ি বা এসপ্ল্যানেড হাউস, সব ক্ষেত্রেই বন্ধু-বান্ধব এবং আত্মীয়দের ছিল অবাধ প্রবেশ। এহেন মহান শিল্পপতি তথা ব্যক্তিত্ব ১৯০০ সালে জার্মানিতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর ১৯০৪ সালে ১৯ মে এই পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে পরলোকে পাড়ি দেন।