শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

অঙ্গ প্রতিস্থাপনের ইতিহাসে নয়া নজির সৃষ্টি! মাবনদেহে প্রতিস্থাপিত হল শূকরের কিডনি

১১:৫৪ এএম, অক্টোবর ২১, ২০২১

অঙ্গ প্রতিস্থাপনের ইতিহাসে নয়া নজির সৃষ্টি! মাবনদেহে প্রতিস্থাপিত হল শূকরের কিডনি

বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ বিশ্বব্যাপী বহু মানুষ কিডনির রোগে ভুগছেন। কিডনি ফেলিওরের জেরে প্রতিবছরই অনেক মানুষের মৃত্যু হয়। অনেকেই সুস্থ জীবনযাপন করা থেকে দূরে রয়েছেন। তবে, এবার সুখবর রয়েছে। কিডনি ফেলিওরের কারণে, আর কাউকে এখন থেকে প্রাণ হারাতে হবে না, কিডনি প্রতিস্থাপনে এবার এমনই এক উপায় খুঁজে পেয়েছেন চিকিৎসকেরা। এবার গোটা বিশ্বের অসংখ্য মানুষ ফের নিজেদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবেন বলেই আশা করা হচ্ছে।

অঙ্গ প্রতিস্থাপনের ইতিহাসে নয়া নজির সৃষ্টি করলেন চিকিৎসকেরা! অসম্ভবকে সম্ভব করে দেখালেন চিকিৎসকেরা। পাশাপাশি আরও একবার প্রমাণিত হল যে, মাবনদেহে প্রতিস্থাপিত হল শূকরের কিডনি। দ্য সানের রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, বিশ্বে প্রথমবার মানবদেহে শূকরের কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। নিউইয়র্ক সিটির এনওয়াইইউ ল্যাঙ্গোন হেলথ মেডিকেল সেন্টারের সার্জনরা গোটা বিশ্বের কাছে নিজেদের এই অসামান্য করে দেখিয়েছেন। এক রোগীর দেহে স্বাভাবিকভাবেই কাজ করছে সেই কিডনি। এখনও পর্যন্ত কোনও খারাপ প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। স্বাভাবিকভাবেই এই অস্ত্রোপচার চিকিৎসাবিজ্ঞানের ক্ষেত্রে বড় সাফল্য বলেই মনে করছেন মার্কিন চিকিৎসকরা। জানা গিয়েছে, এই অস্ত্রোপচারের আগে শূকরের জিন পালটে দেওয়া হয়েছিল। যাতে তার কিডনি মানবদেহে প্রতিস্থাপন করা হলে তাৎক্ষণিকভাবে প্রত্যাখ্যান না করে।

জানা গিয়েছে, নিউইয়র্কে যে রোগীর দেহে ওই কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়েছে আগে থেকে তাঁর ‘ব্রেইন ডেড’ ছিল। লাইফ সাপোর্টে থাকা ওই রোগীর কিডনিও নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। তাই তাঁর পরিবারের অনুমতি নিয়েই, এই কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়। জানা গিয়েছে, প্রাথমিকভাবে চিকিৎসকরা ওই রোগীর পেটের বাইরে পায়ের উপরের অংশে কিডনিটি রেখে রক্তনালীর সঙ্গে যুক্ত করে দেওয়া হয়। তারপর তাঁকে তিনদিন ধরে পর্যবেক্ষণ করা হয়।

অস্ত্রোপচারের নেতৃত্বে থাকা সার্জন ড. রবার্ট মন্টগোমারি জানিয়েছেন, ‘প্রতিস্থাপনের পর স্বাভাবিকভাবে কাজ করেছে নতুন কিডনি। মানুষের কিডনি যে পরিমাণ মূত্র নিষ্কাশনের তৈরি করে শূকরের কিডনি একই কাজ করছে।’ চিকিৎসক আরও জানিয়েছেন, কিডনি গ্রহীতার দেহে ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা অস্বাভাবিক ছিল। কিন্তু কিডনি প্রতিস্থাপনের পর তা স্বাভাবিক হয়েছে।

সুত্রের খবর, এই চিকিৎসকরা গত কয়েক দশক ধরেই পশুদেহ থেকে মানবদেহে অঙ্গ প্রতিস্থাপনের সম্ভাবনা নিয়ে কাজ করছিলেন। কিন্তু এক্ষেত্রে মূল সমস্যা ছিল, মানবদেহ যাতে তাৎক্ষণিকভাবে সেই অঙ্গ প্রত্যাখ্যান না করে, তা নিশ্চিত করা। এবার সেটাই কাজে করে দেখালেন তাঁরা। তবে, আজ থেকে নয়, এই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল অনেকদিন আগেই।

নিউইয়র্কের গবেষকরা জানিয়েছেন, তাঁরা শূকরের জিন বিন্যাস থেকে আলফা-গ্যাল নামে একটি অংশ বাদ দেন। জিনের এই অংশ শর্করা তৈরি করত। এরপর সরকারের থেকে অনুমতি নেওয়ার ছিল। পরিবর্তিত জিনের নতুন শুকরের জন্ম দিয়ে সেটি বড় করে তোলেন তাঁরা। এই পরীক্ষামূলক প্রতিস্থাপন চিকিৎসাক্ষেত্রে নয়া দিগন্ত খুলে দিল বলে মনে করছেন চিকিৎসক মহল।