বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ করোনাকালে ১ বছরেরও বেশি সময় পর, বিদেশ সফর করলেন প্রধানমন্ত্রী। আর প্রথম বিদেশ সফর করলেন বন্ধু দেশ বাংলাদেশে। গতকালই তিনি দুদিনের বাংলাদেশ সফরে সেখানে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
আজ সফরের দ্বিতীয় দিনে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী সাতক্ষীরার শ্যামনগরের যশোরেশ্বরী মন্দিরে পুজো দিলেন। এই সাতক্ষীরার শ্যামনগরের যশোরেশ্বরী কালী মন্দির ৫১ শক্তিপীঠের মধ্যে অন্যতম। এখানে দেবী সতীর হাত পড়েছিল বলে কথিত আছে। পরবর্তীতে এখানে এক ব্রাহ্মণ মন্দির নির্মাণ করেন। এই মন্দির প্রায় ৪০০ বছরের বেশি পুরানো। আজ এই মন্দিরে প্রধানমন্ত্রী দেবীকে মুকুট পরালেন, শাড়ি নিবেদন করলেন। এরপর মন্ত্রোচ্চারণের মাধ্যমে পূজার্চনা করলেন।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর এই দুদিনের বাংলাদেশ সফরের কেন্দ্রে রয়েছে ওড়াকান্দিতে মতুয়াধামে যাওয়া। মতুয়া মন্দির দর্শন এবং মতুয়া সমাজের প্রতিষ্ঠাতা হরিচাঁদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করার কথা রয়েছে তাঁর। ঢাকা থেকে দেড়শ কিলোমিটার দূরে ওড়াকান্দিতে মতুয়া সমাজের সবচেয়ে বড় পীঠস্থান। মতুয়া মহাসংঘের প্রতিষ্ঠাতা হরিচাঁদ ঠাকুরের মন্দির রয়েছে। এ প্রসঙ্গে রাজনৈতিক মহলের ব্যখ্যা, বাংলার ভোটে ৮৪টি আসনে ১৭ লক্ষেরও বেশি মতুয়া ভোটার রয়েছেন। তাই রাজনৈতিক মহলের মত, ভোটের আগে, মোদীর বাংলাদেশ সফর বিশেষত মতুয়া মহাসঙ্ঘের আসল স্থানে যাওয়া প্রভাব ফেলবে বাংলায় মতুয়া ভোটারদের মনেও।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, শুক্রবার, ২৬ মার্চ ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠান। আবার এ-মাসেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীও পালন করছে বাংলাদেশ। সেই উপলক্ষেই বাংলাদেশের প্রধান অতিথি হিসেবে বাংলাদেশ সফরে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানেই বাংলাদেশের স্বাধীনতার যুদ্ধে শহিদ হওয়া সংগ্রামীদের স্মরণ করেন মোদী। সেই সঙ্গে ৭১-এর বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতীয়দের অংশগ্রহণের প্রসঙ্গও তোলেন
শুক্রবার বাংলাদেশের বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে নরেন্দ্র মোদী বলেন যে, ‘২০-২২ বছর বয়সে আমি এবং আমার কয়েকজন বন্ধু বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে শামিল হয়েছিলাম, অনশন করেছি। আমাদের জেলেও যেতে হয়েছে। এই স্বাধীনতার জন্য আমাদের বুকে ততোটাই অপেক্ষা ছিল, যতোটা আপনাদের ছিল।’
এদিন তিনি বাংলায় বলেন, এক সাগর রক্তের বিনিময়ে বাংলার স্বাধীনতা আনলে যারা আমরা তোমাদের ভুলব না। এদিন ভারত এবং বাংলাদেশের সঙ্গে বন্ধুত্বের সম্পর্ক আরও জোরালো কোর্টে দুটি প্রস্তাব দেন। তিনি বলেন যে, ‘বাংলাদেশের ৫০ জন উদ্যোগপতিকে আমি ভারতে আমন্ত্রণ জানাতে চাই। তাঁরা ভাতরে এসে আমাদের দেশের পুঁজিপতিদের সঙ্গে দেখা করুন। দুপক্ষেরই শেখা হোক।’ এই ঘোষণার পাশাপাশি বাংলাদেশের ছাত্রদের জন্য সুবর্ণজয়ন্তী স্কলারশিপ ঘোষণা করেন নরেন্দ্র মোদী। এছাড়াও এদিন সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়ার বার্তা দিলেন নরেন্দ্র মোদী। এদিন বাংলাদেশকে ১২ লক্ষ করোনা ভ্যাকসিন উপহার দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদি।