টোকিওতে নিজের জীবনের প্রথম অলিম্পিক্স পদক জিতেছিলেন তিনি। কিন্তু ৮ মাসের এক শিশুর চিকিৎসার খরচ যোগাতে সেই পদকই নিলামে তুলে দিলেন পোল্যান্ডের জ্যাভেলিন থ্রোয়ার মারিয়া আন্দ্রেজিক। টোকিও অলিম্পিক্সে মেয়েদের জ্যাভেলিন থ্রোয়ে রুপোর পদক গলায় ঝোলান তিনি। সেটি বিক্রি করেই পোল মিলোসজেক নামক এক শিশুপুত্রের হৃদযন্ত্র অস্ত্রোপচারের জন্য ১ লক্ষ ২৫ হাজার ডলার সংগ্রহ করলেন পোলিশ অ্যাথলিট।
শিশুটি বর্তমানে স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটি মেডিক্যাল সেন্টারে চিকিৎসারত। হৃদযন্ত্রের এক জটিল রোগে আক্রান্ত শিশুটির অস্ত্রোপচারের জন্য ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ২ কোটি ৮৬ লক্ষ টাকা প্রয়োজন। এ কথা জানার পরই তার জন্য তহবিল গড়ার সিদ্ধান্ত নেন মারিয়া। ঠিক করেন অলিম্পিক্সে নিজের পাওয়া একমাত্র রুপোর পদকটি বিক্রি করেই সেই অর্থ যোগাবেন। যেমন ভাবা, তেমনই কাজ! সময় নষ্ট না করেই পদকটি নিলামে তোলেন পোলিশ তারকা অ্যাথলিট।
সম্প্রতি নিজের ফেসবুক পেজে ৮ মাসের ঐ শিশুটির কথা জানান মারিয়া। তিনি লেখেন, 'শিশুটির হৃদযন্ত্রে গুরুতর সমস্যা রয়েছে। ওর খুব দ্রুত অস্ত্রোপচারের দরকার। তাই আমার সাহায্যের দরকার। এই কারণেই পদকটি নিলামে তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।' এরপর সোমবার ইনস্টাগ্রামে তিনি ফের জানান, নিলাম থেকে ১ লক্ষ ২৫ হাজার মার্কিন ডলারের বিনিময়ে তাঁর পদকটি কিনে নিয়েছে পোল্যান্ডের সুপার মার্কেট চেন জাবকা। সেই অর্থই শিশুটির পরিবারের হাতে তুলে দেওয়ার হবে বলে জানান মারিয়া।
https://www.instagram.com/p/CSpLODRMFL4/?utm_medium=copy_linkযদিও এরপরই ঘটনায় আসে নাটকীয় মোড়! মারিয়ার প্রথম অলিম্পিক্স পদকটি ফিরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় জাবকা। তবে তাদের তরফে অসুস্থ শিশুটির চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ দান করার কথা জানিয়ে দেওয়া হয়। পদকটি ফিরে পেয়ে মারিয়াও উচ্ছ্বসিত। যদিও তাঁর মানবিকতার প্রশংসা এখন মুখে মুখে৷
প্রসঙ্গত, ২০১৬ রিও অলিম্পিক্সে মাত্র ২ সেন্টিমিটারের জন্য পদক হাতছাড়া হয় মারিয়ার। তার পরের বছরই, ২০১৭ সালে কাঁধের চোটের জন্য খেলা থেকে সরে যান তিনি। ২০১৮ সালে জানা যায় বোন ক্যান্সারে আক্রান্ত তিনি। শেষ পর্যন্ত মনের জোরে সুস্থ হয়ে ট্র্যাকে ফিরে আসেন মারিয়া। চলতি টোকিও অলিম্পিক্সে জ্যাভেলিন ছুঁড়ে রুপোর পদকও গলায় ওঠে তাঁর। এখনও পর্যন্ত এটিই তাঁর প্রথম ও একমাত্র অলিম্পিক্স পদক৷