শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

‘যারা অটোরিকশা চালাত, তাঁদের সাংসদ-বিধায়ক বানিয়েছি’! একনাথকে কটাক্ষ উদ্ধবের

আত্রেয়ী সেন

প্রকাশিত: জুন ৩০, ২০২২, ০১:৩৪ পিএম | আপডেট: জুন ৩০, ২০২২, ০৭:৪০ পিএম

‘যারা অটোরিকশা চালাত, তাঁদের সাংসদ-বিধায়ক বানিয়েছি’! একনাথকে কটাক্ষ উদ্ধবের
‘যারা অটোরিকশা চালাত, তাঁদের সাংসদ-বিধায়ক বানিয়েছি’! একনাথকে কটাক্ষ উদ্ধবের

বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ গতকালই মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন মহারাষ্ট্রের সদ্য প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে। সেই সঙ্গে গতকালই বিগত কয়েকদিন ধরে চলা মহারাষ্ট্রের মহানাটকের সমাপ্তি ঘটেছে। আস্থা ভোট অনুষ্ঠিত হওয়ার আগেই উদ্ধব ঠাকরে মুখ্যমন্ত্রীর আসন থেকে সরে দাঁড়ানোয় এখন বিজেপি শিবিরে খুশির হাওয়া। এরপরই নাম না করে দলের বিদ্রোহী বিধায়ক একনাথ শিন্ডেকে কটাক্ষ করার পাশাপাশি আক্রমণ করলেন মহারাষ্ট্রের সদ্য প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা শিবসেনা প্রধান উদ্ধব। তিনি বলেন, ‘যারা অটোরিকশা, ঠেলাগাড়ি চালাত, আমরা তাঁদের সাংসদ, বিধায়ক বানিয়েছি। আমি যাদের সবকিছু দিয়েছি, তাঁরাই এমন করেছে।’

উল্লেখ্য, রাজনীতিতে আসার আগে অটোরিকশা এবং টেম্পো চালক ছিলেন শিন্ডে। সেই একনাথের মহারাষ্ট্রের রাজনীতির ময়দানে  উত্থান স্বপ্নের মতই। গতকাল তিনি মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগের পর জানান যে, ‘আমি এখানে থাকব এবং আমি আবার শিবসেনা ভবনে বসব। আমি আমার সমস্ত মানুষকে একত্র করব।’

আজই আস্থা ভোটের নির্দেশ দিয়েছিলেন মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল। কিন্তু উদ্ধব ঠাকরে সেই সিদ্ধান্ত খারিজের দাবিতে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিলেন। শীর্ষ আদালতে সেই মামলার শুনানি যখন শুরু হয় গতকাল, তখনই মন্ত্রিসভার বৈঠক ডাকেন উদ্ধব ঠাকরে। সেই বৈঠকে শিবসেনার একাধিক মন্ত্রী অনুপস্থিত থাকলেও, ছিলেন এনসিপি এবং কংগ্রেসের বেশিরভাগ মন্ত্রী। 

সূত্রের দাবি, মন্ত্রিসভার বৈঠকের শেষ তিন মিনিটে আবেগপ্রবণ উদ্ধব ঠাকরে নিজের ইস্তফার ইঙ্গিত দেন। সেই সঙ্গে আড়াই বছর ধরে সঙ্গে থাকার জন্য কংগ্রেস এবং এনসিপিকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি। আগামী দিনেও তিনি এইরকম সাহায্য তাঁদের থেকে প্রার্থনা করেন বলেও জানিয়েছেন। তাঁর ছেলেও ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে, সুপ্রিম কোর্টের রায় তাঁদের অনুকূলে না গেলে ইস্তফা দিতে পারেন উদ্ধব ঠাকরে। কিন্তু আখেরে সেই ইঙ্গিতই বাস্তবে সত্যি প্রমাণিত হয়। সুপ্রিম কোর্টে বুধবার প্রায় ঘণ্টা তিনেক সময় ধরে শুনানি চলে। 

এরপর রায় দেয় সুপ্রিম কোর্ট। সেই রায়ে বলা হয় যে, আগামীকালই হবে আস্থা ভোট। এরপরই ইস্তফা দেন উদ্ধব ঠাকরে। ফেসবুক লাইভে বললেন, ‘নিজের লোকেরাই বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। আস্থাভোটে যোগ দেব না’। তিনি আরও বলেন যে, ‘আমি মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছেড়ে দেওয়ার জন্য অনুশোচনা করব না, আমি আবার নতুন শিবসেনা তৈরি করব। আমি এনসিপি এবং কংগ্রেসের জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে চাই যে তাঁরা আমাকে সমর্থন করেছেন’। 

এদিন ফেসবুক লাইভে মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল, কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী এবং এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ারকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন উদ্ধব ঠাকরে। তিনি বলেন, ‘আমরা আপনাদের আর্শীবাদ নিয়ে সরকার চালিয়েছি। শিবাজির আদর্শ মেনে কাজ করেছি। কৃষি ঋণ মকুবের চেষ্টা করেছি। রিকশা চালকদের মন্ত্রী-সাংসদ করেছি। কিন্তু সবকিছু দিয়েও তাঁদের সন্তুষ্ট করতে পারিনি।’ এখানেই শেষ নয়, ‘আমি যদি অনিচ্ছাকৃতভাবে কাউকে আঘাত করে থাকি তবে আমিও ক্ষমাপ্রার্থী’, বলেন শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরে। শুধু মুখ্যমন্ত্রী পদ নয়, বিধান পরিষদের সদস্যপদও ছেড়েছেন উদ্ধব ঠাকরে। তিনি জানিয়েছেন, আদালতের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।