বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

‘সবার চোখে ভালো হওয়া সম্ভব নয়’! অর্জুন সিংয়ের আবেগঘন ট্যুইট ঘিরে শুরু জল্পনা

চৈত্রী আদক

প্রকাশিত: এপ্রিল ২৯, ২০২২, ০৮:৩৬ পিএম | আপডেট: এপ্রিল ৩০, ২০২২, ০২:৩৬ এএম

‘সবার চোখে ভালো হওয়া সম্ভব নয়’! অর্জুন সিংয়ের আবেগঘন ট্যুইট ঘিরে শুরু জল্পনা
‘সবার চোখে ভালো হওয়া সম্ভব নয়’! অর্জুন সিংয়ের আবেগঘন ট্যুইট ঘিরে শুরু জল্পনা

বংনিউজ২৪×৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ দুদিন আগেই পাটশিল্পের করুণ দশা নিয়ে পীযূষ গয়ালের পর জুট কমিশনারের বিরুদ্ধে সরব হন অর্জুন সিং। ‘কয়েকদিনের মধ্যেই জুট কমিশনারের অফিসে ধর্না দেব’ এমনটাই হুঁশিয়ারি দেন ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং। জুট কমিশনার মলয় চক্রবর্তীর বিরুদ্ধাচরণ করে অর্জুন অভিযোগ করেন, পাটশিল্পকে ধ্বংস করার চক্রান্ত করছে কেন্দ্র। এই বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপেরও দাবি জানান তিনি। কিন্তু এরপর হঠাৎই শুক্রবার একটি আবেগঘন ট্যুইট করে বসেন অর্জুন সিং।

শুক্রবার সকালে ট্যুইট করে অর্জুন লেখেন, ‘সকলের নজরে ভালো থাকা সম্ভব নয়। চলো চেষ্টা করি নিজের চোখে নিষ্কলঙ্ক থাকার’। হঠাৎ এরকম পোস্ট কেন করলেন তিনি? এই আত্মোপলব্ধির কারণই বা কী? এই নিয়ে শুরু হয়েছে জোর জল্পনা। ব্যারাকপুরের বিধায়ক কি তবে নতুন কোনও লক্ষ্যে হাঁটছেন? বিশেষজ্ঞমহলে এই নিয়ে চর্চা তুঙ্গে।

দুদিন আগে এই বিধায়ককেই পাট শিল্পনীতি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধাচরণ করতে দেখা গিয়েছিল। অর্জুনের বক্তব্য ছিল, পাট শিল্পকে ধ্বংস করার ধারাবাহিক প্রচেষ্টা চলছে। জুট কমিশনের সর্বময় কর্তা মলয় চক্রবর্তী এই বিষয়ে প্লাস্টিক লবি ঢোকানোর চেষ্টা করছেন। তিনি জানান, ১৩ ডিসেম্বর লকেট ও‌ অর্জুন সিং জুট কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করেন। প্রতি টনে আড়াই হাজার টাকা ক্ষতি হলে খুব বেশিদিন জুটমিল চালানো সম্ভব হবে না। ইতিমধ্যেই ১৪ টি কারখানা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বন্ধ হওয়ার পথে আরও ১০ টি কারখানা। বর্তমানে ব্যারাকপুরে মাত্র ১৭ টি জুট মিল চালু রয়েছে।

জুট কমিশনারের বিরুদ্ধে সরব হওয়ার পাশাপাশি ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি গঠনের দাবি জানিয়েছেন তিনি। তিনি বলেছেন, জুট কমিশনের দুর্নীতি খুঁজতে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি তৈরি করা হোক। এই দুর্নীতির শিকার হচ্ছেন ২ কোটি সাধারণ মানুষ। এই বিষয়ে দ্রুত প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপের দাবি করেছেন তিনি। এর পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রীকেও বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখার জন্য অনুরোধ করেছেন। তিনি বলেছেন, বাংলার পাশাপাশি ওড়িশা, অসম ও বিহারের মুখ্যমন্ত্রীদেরও এই দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরব হওয়ার দরকার। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উচিৎ ট্রেড ইউনিয়নগুলোর সঙ্গে বৈঠক করা। এছাড়াও হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, দিলীপ ঘোষ, সুকান্ত মজুমদার, শুভেন্দু অধিকারী সহ তৃণমূল ও বাম শ্রমিক সংগঠনের সমর্থন নিয়ে দু-একদিনের মধ্যেই জুট কমিশনারের অফিসে তিনি ধর্না দেবেন।

এই প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, ২০০১ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত একটানা এতবছর তৃণমূলের বিধায়ক ছিলেন অর্জুন সিং। এরপর ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে টিকিট না পাওয়ায় আগেই দলবদল করে পদ্মশিবিরে যোগদান করেন তিনি। এক সময় এই অর্জুন সিং-এর দাপটেই ব্যারাকপুর, জগদ্দল, ভাটপাড়ায় রাজ করত তৃণমূল। তবে অর্জুন গেরুয়া শিবিরে যোগ দিলেও বিধানসভা হোক বা পৌরসভা, পদ্মফুলকে ধুলিস্যাৎ করে সর্বত্রই ফুটেছে ঘাসফুল। এরইমধ্যে শুক্রবার অর্জুন সিংয়ের আবেগঘন ট্যুইট কি তাহলে ২৩-এর লোকসভা ভোটের আগে নতুন কোনও সমীকরণ তৈরির সম্ভাবনা বহন করছে? সবটাই এখন সময়ের অপেক্ষা।