শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

কোভিড আক্রান্ত হওয়া সত্ত্বেও নথি যাচাইয়ে ক্যাম্পাসে ডাকা হল ছাত্রীকে! কাঠগড়ায় রবীন্দ্রভারতী

০৬:৫৭ পিএম, জানুয়ারি ৭, ২০২২

কোভিড আক্রান্ত হওয়া সত্ত্বেও নথি যাচাইয়ে ক্যাম্পাসে ডাকা হল ছাত্রীকে! কাঠগড়ায় রবীন্দ্রভারতী

কোভিড আক্রান্ত হওয়া সত্ত্বেও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির নথি যাচাইয়ের জন্য ছাত্রীকে সশরীরে ডেকে পাঠানো হল ক্যাম্পাসে৷ চাঞ্চল্যকর এই অভিযোগ উঠল রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সল্টলেক ক্যাম্পাসের বিরুদ্ধে। আর অভিযোগটি করলেন খোদ সেই ছাত্রীই। দমদমের বাসিন্দা উষসী চক্রবর্তী নামে সেই ছাত্রীর দাবি, শুক্রবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে ফোনে তাঁকে নথি যাচাইয়ের জন্য ক্যাম্পাসে ডাকা হয়। তিনি করোনা আক্রান্ত জানার পরও সে কথার কোনও গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। উল্টে তিনি না এলে তাঁর ভর্তি বাতিল হওয়ার ভয়ও দেখানো হয়।

গোটা বিষয়টি নিয়ে এরপরই নেটমাধ্যমে সরব হন উষসী। ফেসবুকে গোটা ঘটনাটি উল্লেখ করে রবীন্দ্রভারতীর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে তিনি লেখেন, এই বছর রবীন্দ্রভারতীর বিধাননগর ক্যাম্পাসে সোশ্যাল ওয়ার্ক নিয়ে স্নাতকোত্তরে ভর্তি হয়েছেন তিনি। বৃহস্পতি এবং শুক্রবার ছিল ভর্তির নথি যাচাইয়ের দিন। কিন্তু বৃহস্পতিবারই তাঁর কোভিডের পজিটিভ রিপোর্ট আসে। এ কথা জানানোর পরও তাঁকে ক্যাম্পাসে ডাকা হয়। কোভিড আক্রান্ত হওয়া সত্ত্বেও বাধ্য হয়েই ভর্তি হওয়ার জন্য তিনি বাড়ি থেকে বেরোচ্ছেন। তাঁর জন্য কেউ আক্রান্ত হলে তার দায়ভার রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের। তাঁর কোনও দায়ভার নেই।

https://www.facebook.com/100006221521932/posts/3004951343055554/

বংনিউজ২৪x৭-কে ফোনে উষসী জানিয়েছেন, "রাজু দাস নামে এক কর্মী আমাকে ফোন করে নথি যাচাইয়ের জন্য ক্যাম্পাসে উপস্থিত হতে বলেন। আমি তাঁকে জানাই আমি কোভিড আক্রান্ত। কিন্তু সেই খবরে তিনি পাত্তা না দিয়ে উল্টে বলেন, না গেলে ভর্তি প্রক্রিয়া আটকে যেতে পারে। তখন আমি বাধ্য হয়ে ক্যাম্পাসে যাই। এরপর নথি যাচাইয়ের লাইনেও দাঁড়াই। এরপর যখন আমার সময় আসে তখন আমার কাছে নথিগুলির ফটোকপি চাওয়া হয়। তখন আমি আমার শারীরিক অসুস্থতা এবং সংক্রমণের কথা জানিয়ে বলি আমার পক্ষে বেশি ছুটোছুটি করা সম্ভব নয়।"

উষসী আরও বলেন, "সেই কথা শুনে সেখানে থাকা এক কর্মী আমাকে পাল্টা বলেন তাহলে আপনি করোনা নিয়ে এলেন কেন? আমি তখন রাজু দাসের কথা উল্লেখ করে সমস্তটা বলি। আমাকে তখন তিনি বলেন, 'আপনি বাড়ি চলে যান। নথিগুলো হোয়াটসঅ্যাপ করে দিন।' আমি বাড়ি এসে সেই সব নথি হোয়াটসঅ্যাপ করে দিই।"

এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে অ্যাডমিশন বিভাগের এক নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মীর দাবি, ওই ছাত্রীর আগেই নথি যাচাইয়ের জন্য আসার কথা ছিল। কিন্তু তিনি আসেননি। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে ৬ এবং ৭ ডিসেম্বর ফের নথি যাচাইয়ের তারিখ দেওয়া হয়। যদিও এই বিষয়ে উষসীর দাবি, ‘এমন কোনও তারিখের কথা আমি জানতাম না। প্রমাণ চাইলে ওরা দিতে পারবে না। ৬ তারিখই আমাকে ফোন করে নথি যাচাইয়ের জন্য প্রথম আসতে বলা হয়। এরপর আমার পজিটিভ রিপোর্ট এলে তা রাজু দাসকে জানালেও তিনি আমল দেননি।"

বংনিউজ২৪x৭-র কাছে উষসীর আরও অভিযোগ, "বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যক্ষাই অন্যান্য সংবাদ মাধ্যমে বলেছেন তিনি গোটা বিষয়ে কিছুই জানতেন না। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট থেকে নম্বর নিয়ে তাঁকে ফোন করলেই নাকি এই অসুবিধার মুখে পড়তে হতো না। কিন্তু আমি তো এখানে পুরনো পড়ুয়া নই। এখানে হয়তো এরকমই হয় আমার তা জানা নেই। আমাকে ফোন করে যেমন জানানো হয়েছিল সেই মতোই আমি সংক্রমণ নিয়েও ক্যাম্পাসে হাজির হয়েছিলাম। আমার থেকে কেউ আক্রান্ত হলে তার দায় আমার নয়।"