বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

যেন বাস্তবের 'টারজান'! ৪১ বছর ধরে অরণ্যে বসবাস এই ব্যক্তির! জানেন না 'নারী'র অস্তিত্বও

০৪:২৭ পিএম, জুন ২৯, ২০২১

যেন বাস্তবের 'টারজান'! ৪১ বছর ধরে অরণ্যে বসবাস এই ব্যক্তির! জানেন না 'নারী'র অস্তিত্বও

ছেলেবেলার গল্প-কমিকসে টারজানের কাহিনীর সঙ্গে আমরা প্রায় সকলেই বেশ পরিচিত। জঙ্গলের মধ্যেই বসবাস করত গল্পের সেই চরিত্র। পোশাক বলতে ছিল একটুকরো গাছের ছাল। জঙ্গলের প্রাণীরাই ছিল পরিবার। সম্প্রতি বাস্তবেও দেখা গিয়েছে এমনই এক ব্যক্তির৷ যিনি প্রায় ৪১ বছর ধরে ভিয়েতনামের গভীর অরণ্যে বসবাস করছেন। বাহ্যিক পৃথিবী সম্পর্কে কোনও ধারণাই নেই তাঁর। জানেন না, মহিলার অস্তিত্ব সম্পর্কেও। তিনি যেন ঠিক বাস্তবের 'টারজান'!

হো ভ্যাং ল্যাং। ১৯৭২ সালে ভিয়েতনাম যুদ্ধের সময় মার্কিন বোমা হামলায় মা এবং দুই ভাই নিহত হন। তারপরই বাবা এবং জীবিত আরেক ভাইয়ের সঙ্গে সভ্য জগত ছাড়েন তিনি। ভ্যাং ল্যাং তখন নিতান্তই শিশু। আস্তানা গাড়েন নাগাই প্রদেশের টে ট্রা জেলার গভীর জঙ্গলে। বর্তমানে ৪৬ বছর বয়সী ল্যাং, তার ভাই ত্রি এবং তাদের বাবা কুয়াং একসঙ্গেই বন্য জীবনযাপন করেন সেখানে। নিজেরাই বানিয়েছেন নিজেদের আশ্রয়। খাদ্য বলতে জঙ্গলের ফল এবং মধু বা বন্য কোনও জন্তু।

২০১৫ সালে আলভেরো সেরেজো নামের এক আলোকচিত্রী এই পরিবারের দেখা পান। সেরেজোর হাত ধরেই বাহ্যিক দুনিয়ার সঙ্গে পরিচয় হয় ভ্যাংয়ের। ওই ফটোগ্রাফারই জঙ্গলের বাইরে আনেন তিনজনকে। তিনিই জানান, নারীদের সম্পর্কে কোনও ধারণাই ছিল না ভ্যান ল্যাংয়ের। নারী-পুরুষ বা যৌনতা কী? এ বিষয়ে কিছুই জানতেন না তিনি। এছাড়াও প্রায় সারা জীবন জঙ্গলে কাটানোর দরুন অনেক মৌলিক সামাজিক ধারণা সম্পর্কেও অজ্ঞ ভ্যান ল্যাং। তবে সভ্য জগতে আসার পর সে সম্পর্কে কিছুটা ধারণা হয়েছে তাঁর।

বর্তমানে ওই জঙ্গলের পাশ্ববর্তী এক গ্রামে বসবাস করছেন ভ্যান ল্যাং ও তাঁর পরিবার। গ্রামের সংস্কৃতির সঙ্গে প্রথম প্রথম মানিয়ে নিতে বেশ কষ্ট হতো হো ভ্যান ল্যাংয়ের। তবে ধীরে ধীরে নতুন জীবনের সঙ্গে বেশ খুশি মনে মানিয়ে নিয়েছেন তিনি। তাঁর সম্পর্কে সেরেজো জানিয়েছেন, ভ্যাং ল্যাং শিশুর মতোই নিষ্পাপ ও সরল। তার দেখা সব থেকে ভালো মানুষ তিনি৷ ল্যাংয়ের ভাইও তাঁকে ‘মানুষের অবয়বে একটি শিশু’ বলে পরিচয় দিয়েছেন। তাই এখনও পর্যন্ত নারী ও পুরুষ আলাদা করতে পারলেও, তাঁদের মধ্যকার প্রয়োজনীয় পার্থক্য জানেন না ভ্যাং ল্যাং।