বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

কাবুলে ভারতীয়দের কোনও অপহরণের ঘটনা ঘটেনি! কী বলছে রিপোর্ট?

০৪:২৭ পিএম, আগস্ট ২১, ২০২১

কাবুলে ভারতীয়দের কোনও অপহরণের ঘটনা ঘটেনি! কী বলছে রিপোর্ট?

বংনিউজ ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ ক্রমশ ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে আফগানিস্তানের পরিস্থিতি। তালিবানি দখলে যাওয়ার পর থেকেই অশান্ত কাবুল। আফগানিস্তানের পরিস্থিতি নিয়ে এই মুহূর্তে চিন্তিত গোটা দেশ, ভীত ভারতীয়রাও। এই অবস্থায় এদিন দুপুরে খবর মেলে যে, কাবুল বিমানবন্দরে প্রবেশের আগেই মোট ১৫০ জনকে বন্দি বানিয়েছে তালিবানরা। যদিও, এই খবর তালিবানদের পক্ষ থেকে অস্বীকার করা হয়। তবে, বর্তমানে জানা গিয়েছে যে, পাসপোর্ট যাচাই করার পর ১৫০ জন বন্দিদেরই মুক্তি দিয়েছে তালিবানরা।

কাবুলে ভারতীয়দের কোনও অপহরণের ঘটনা ঘটেনি বলেই জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা। এদিন দুপুরেই খবর পাওয়া যায় যে, কাবুল বিমানবন্দরের সামনে গ্যারেজ থেকে ১৫০ জনকে অপহরণ করে বন্দি বানিয়েছে তালিবান। বন্দিদের মধ্যে আফগান নাগরিক ও শিখ আফগানও রয়েছেন, তবে, বেশিরভাগই ভারতীয়। এই ঘটনা প্রসঙ্গে এক ব্যক্তি জানিয়েছেন যে, আচমকাই বিমানবন্দরের সামনে বেশ কিছু তালিবান হাজির হয়। তাদের হাতে কোনও অস্ত্র ছিল না। তাঁরা বিমানবন্দরের অন্য গেট দিয়ে প্রবেশ করানোর প্রতিশ্রুতি দেয়। এরপর গাড়ির দরজা খোলা হলেই, ভিতরে থাকা পুরুষদের মারধর করা শুরু হয় এবং গাড়িটি নিয়ে তাঁরা কাবুলের দিকে চলে যায়। যদিও আহমাদুল্লাহ ওয়াসেক এই অভিযোগ অস্বীকার করেন।

পরে অবশ্য জানা যায় যে, ওই ১৫০ জনের পাসপোর্ট যাচাই করে তাঁদের ছেড়ে দিয়েছে তালিবানরা। তাঁরা এরপর ফের কাবুলের হামিদ কারজাই বিমানবন্দরের দিকে রওনা দেন। বন্দিদের কোনও ক্ষতি করেনি তালিবানরা, এমনটাই সূত্রের খবর। সংবাদ সংস্থা সূত্রের দাবি, কাবুলে সমস্ত ভারতীয় সুরক্ষিত আছেন। জানা গিয়েছে, ওই ১৫০ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ এবং তাঁদের ডকুমেন্টস পরীক্ষার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বলে সূত্রের খবর।

শনিবার সকালেই কাবুল বিমানবন্দর থেকে ৮৫ জন ভারতীয়কে নিয়ে রওনা দেয় বায়ুসেনার সি-১৩০ জে পণ্যবাহী বিমান। জানা গিয়েছে, এই বিমানে বেশ কিছু আফগান নেতা, হিন্দু ও শিখ সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরাও রয়েছেন। শেষ অবধি জানা গিয়েছিল, বিমানটি তাজিকিস্তানে জ্বালানি ভরতে অবতরণ করেছিল। আজ বিকেলের মধ্যেই বিমানটি গাজিয়াবাদের বায়ুসেনার ঘাঁটিতে পৌঁছে যাবে। এই বিমান রওনা হতেই, এই ‘অপহরণ’- এর খবর ছড়ায়। বেশ কয়েকটি আফগান মিডিয়া রিপোর্ট দাবি করে যে, ১৫০ জনকে অপহরণ করেছে তালিবানরা। যদিও সঙ্গে সঙ্গেই তালিবানদের পক্ষ থেকে জানানো হয় যে, এমন কোনও ঘটনা ঘটেনি।

[caption id="attachment_27825" align="alignnone" width="1280"] কাবুল বিমানবন্দর (প্রতীকী ছবি)[/caption]  

সূত্রের খবর, তালিবানরা বাধা দিতে পারে, এই আশঙ্কায় এয়ারলিফ্টের পরিকল্পনা ও সময় সম্পূর্ণ গোপন রাখা হয়েছিল। ভারতীয় নাগরিকরা বিমানে ওঠার পরও দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়। এরপর মার্কিন বাহিনীর সবুজ সংকেত মিলতেই তা উড়ান শুরু করে। এদিকে একাধিক দেশের উদ্ধারকারী বিমান হাজির হওয়ায় এয়ার ট্রাফিক সামলানো কঠিন হয়ে পড়েছে।

এই মুহূর্তে, মার্কিন বাহিনীই বিমানবন্দরের সমস্ত দায়িত্ব সামলাচ্ছে। নিরাপত্তা থেকে শুরু করে বিমানের ওঠানামা-সবকিছুই নিয়ন্ত্রণ করছে তাঁরা। অন্যদিকে, গতকালই একটি ভুয়ো খবর ছড়িয়ে পড়ে যে, বিমানবন্দরে উপস্থিত সকলকেই উদ্ধার করে নিয়ে যাবে মার্কিন বিমান। এরপরই সকলে বিমানবন্দরের দিকে ছোটে। বিমানবন্দরের বাইরে চরম বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। কাবুলবাসীদের গেট ভেঙে ঢোকা থেকে আটকাতে, কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করতে বাধ্য হয় মার্কিন বাহিনী।

উল্লেখ্য, এই মুহূর্তে দলে দলে কাবুল ছাড়ছেন বিদেশি নাগরিকেরা। সুযোগ পেলে, দেশ ছাড়ছেন আফগান নাগরিকরাও। কাবুলের দূতাবাসে কর্মরত আধিকারিকদের ফিরিয়ে আনা হলেও, এখনও অনেক নাগরিক আটকে রয়েছেন। তবে, কাবুলে থাকা ভারতীয়দের কাছে কাবুল বিমানবন্দরে পৌঁছনোই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ, এখন গোটা কাবুলের রাজপথে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে তালিবান। আফগানিস্তানের পরিস্থিতি ক্রমেই আরও খারাপের দিকেই যাচ্ছে।