শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

আচমকাই সুরবদল! বেঁফাস মন্তব্যে বারবার বিজেপির অস্বস্তি বাড়াচ্ছেন সৌমিত্র খাঁ!

০২:৪২ পিএম, জুলাই ৮, ২০২১

আচমকাই সুরবদল! বেঁফাস মন্তব্যে বারবার বিজেপির অস্বস্তি বাড়াচ্ছেন সৌমিত্র খাঁ!

বুধবার দুপুরেই বিজেপির রাজ্য যুব মোর্চার সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দেন সৌমিত্র খাঁ। সন্ধ্যায় আচমকাই সুরবদল তাঁর। সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে সৌমিত্র জানান, তিনি ইস্তফাপত্র ফিরিয়ে নিচ্ছেন। তবে তার আগেই যা হওয়ার হয়ে গিয়েছে৷ দুপুরে ইস্তফাপত্র দেওয়ার পরই দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছিলেন তিনি। নেতাদের বিরুদ্ধে একের পর এক তোপও দাগেন। তাঁর বেঁফাস মন্তব্যের জেরে বিজেপি ইতিমধ্যেই বেশ চাপে পড়ে গিয়েছে৷ তাই ইস্তফাপত্র ফিরিয়ে নিলেও সৌমিত্রর সোশ্যাল মিডিয়ার মন্তব্যে বিজেপির অন্দরমহল ভুগছে অস্বস্তিতে।

কিন্তু কেন এমন হঠাকারিতার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন সৌমিত্র? রাজনৈতিক মহলের মতে, বুধবার বাংলা থেকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীত্ব পেয়েছেন ৪ সাংসাদ। কিন্তু সেই তালিকায় সৌমিত্রের নাম নেই। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হওয়া হয়নি তাঁর। এ কারণেই হয়ত ক্ষোভ বেড়েছে সৌমিত্রর। এছাড়াও রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ এবং বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে তাঁর মতানৈক্যের কথাও শোনা যাচ্ছে। তিনি এক সংবাদ মাধ্যমে কটাক্ষ করে বলেছেন যে, গোটা বিজেপিটা তো এখন পূর্ব মেদিনীপুর এবং পশ্চিম মেদিনীপুর চালাচ্ছে।

বুধবারও সোশ্যাল মিডিয়ায় সৌমিত্রকে বলতে শোনা যায়, দলে নাকি তাঁকে কোনঠাসা করে রাখা হয়েছে৷ একইসঙ্গে দিলীপ ঘোষ ও শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে তিনি বলেন, “আমাদের রাজ্য সভাপতি অর্ধেক বোঝেন, অর্ধেক বোঝেন না। নতুন নেতা এসে দিল্লিকে ভুল বোঝানোর চেষ্টা করছেন। এমন দেখানো হচ্ছে, যেন উনি একাই আত্মত্যাগ করেছেন। আমাদের সবাই লড়াই, আত্মত্যাগ করেছে৷ বিরোধী দলনেতা আয়নায় একটু মুখ দেখুন। নিজেকে বড় বিজেপি নেতা হিসেবে দেখাচ্ছেন। দিল্লি গিয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের ভুল বোঝাবেন না। আপনি যেভাবে চাইছেন তাতে বাংলা এগোবে না।” তবে সমস্ত ক্ষোভ সরিয়ে সন্ধ্যেতে ফের ইস্তফাপত্র ফিরিয়ে নিয়েছেন সৌমিত্র।

অবশ্য এই প্রথম নয়, এর আগেও একাধিকবার এমন মন্তব্য এবং কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে দলের অস্বস্তি বাড়িয়েছেন সৌমিত্র। ২০২০ সালেও দিলীপ-সৌমিত্রর ঠাণ্ডা লড়াইয়ের কারণে রাজ্য বিজেপির যুব মোর্চার অফিসিয়াল হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে সৌমিত্র জানান তিনি ইস্তফা দিচ্ছেন। কিন্তু সেটাও ছিল কিছুক্ষণের জন্যই। সেবার ফের ইস্তফাপত্র ফিরিয়ে নিয়েছিলেন বিষ্ণুপুরের এই সাংসদ।

পাশাপাশি বেফাঁস মন্তব্যেও পিছিয়ে নেই তিনি। চলতি বছরের নির্বাচনী প্রচারে সৌমিত্র খাঁ জানান, রাজ্যে বিজেপি এলে দিলীপ ঘোষই মুখ্যমন্ত্রী হবেন। যদিও দিলীপ ঘোষ এই বিধানসভা ভোটে লড়েননি। এমনকি বিধানসভা নির্বাচনের পরেও জঙ্গলমহলকে পৃথক রাজ্য করার দাবি তুলে দলকে অস্বস্তিতে ফেলেন তিনি। যা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে ওঠে সমালোচনার ঝড়। গতকালও সোশ্যাল মিডিয়ায় একই ভাবে বেলাগাম মন্তব্যের জেরে যে বিজেপির অস্বস্তি বাড়বে, একথাও বলাই বাহুল্য।