শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

নির্বাচনের ফল ঘোষণার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ৬ জনের মৃত্যু! নির্বাচন পরবর্তী হিংসা নিয়ে সরব দিলীপ ঘোষ

০৬:১৫ পিএম, মে ৩, ২০২১

নির্বাচনের ফল ঘোষণার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ৬ জনের মৃত্যু! নির্বাচন পরবর্তী হিংসা নিয়ে সরব দিলীপ ঘোষ

বংনিউজ ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ বাংলার বিধানসভা নির্বাচন শেষ হয়েছে। ফলও ঘোষণা হয়ে গেছে। বাংলা তৃণমূলেরই দখলে। আর এদিকে এর মধ্যেই শুরু হয়ে গেছে রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসা। ফল প্রকাশের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। রাজ্যের একাধিক জেলা থেকে এই হিংসার খবর আসছে।

সোমবার কালীঘাটের সাংবাদিক বৈঠক থেকে নির্বাচনে পরবর্তী হিংসা নিয়ে সরব হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কোচবিহারে, বর্ধমানে তৃণমূল কর্মীদের ওপর আক্রমণ হচ্ছে। আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করে ঘর-বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এমন অভিযোগ এদিন তুলেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো।

আর এবার সেই একই সুর শোনা গেল বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের গলাতেও। এনিয়ে এদিন তিনি বলেন যে, রাজ্যের অধিকাংশ জায়গায় আক্রান্ত হচ্ছেন বিজেপির কর্মী-সমর্থকরা। সোমবার মুরলিধর সেন লেনে সাংবাদিক বৈঠক করে দিলীপ ঘোষ বলেন, 'গতকাল নির্বাচনের ফল ঘোষণার আগে থেকেই রাজ্যে সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি হয়ে যায়। তিনি অভিযোগ করেছেন যে, যে দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে, তাঁদের উৎসাহে এবং পার্টি কর্মীদের উদ্যোগে বিজেপি পার্টির কার্যালয়, কর্মী, নেতা ও তাঁদের বাড়ি সব জায়গায় হামলা শুরু হয়েছে। পুলিশে অভিযোগ করলে, তাঁদের বক্তব্য আমরা কী করব?'

বিজেপির রাজ্য সভাপতির আরও দাবি, ‘রাজ্যে হিংসা নতুন কোনও ঘটনা নয়। হার-জিতের পর সামান্য উত্তেজনা থাকেই। তবে, ২৪ ঘণ্টাও কাটেনি, তার মধ্যে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। হাজার হাজার বাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। মানুষ ঘরছাড়া, দোকানপাট লুঠ হয়ে যাচ্ছে। সেইসব ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। প্রত্যেক বিধানসভা কেন্দ্র থেকে হিংসার খবর আসছে। জিতে অনেকেই তাঁদের আনন্দ ধরে রাখতে পারছেন না। উত্তর-দক্ষিণ সব জায়গায় এরকম ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এই অরাজকতা যদি এত বড় সমর্থন পাওয়ার পর চলতে থাকে, তাহলে দায়িত্ব কে নেবে?’

বিজেপি প্রতিনিধি দল এই নির্বাচন পরবর্তী হিংসার অভিযোগ জানাতে রাজ্যপাল এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দ্বারস্থ হবে বলেও জানিয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। এই ঘটনার পিছনে সরকারের সদিচ্ছার অভাব রয়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন দিলীপ ঘোষ।

রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসায় নিহতদের হিসেবও দিয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি। তিনি এ প্রসঙ্গে বলেন যে, ‘এখনও পর্যন্ত ৬ জন মারা গিয়েছেন। জগদ্দলে শোভারানী মণ্ডল মারা গিয়েছেন। তাঁর ছেলে ছিল বিজেপির বুথ কর্মী। তাঁর উপরে অত্যাচার হচ্ছিল। তাকে বাঁচাতে এসে তিনি মার খান। তাতেই মারা যান। রানাঘাটে উত্তম ঘোষ নামে এক বিজেপি সমর্থক মারা গিয়েছেন। বেলেঘাটায় অভিজিৎ সরকারকে পিটিয়ে মারা হয়েছে। উনি আমাদের পার্টির কর্মী ছিলেন। সোনারপুরে হারান অধিকারী নামে এক বিজেপি কর্মীকে খুন করা হয়েছে। শীতলকুচিতে মানিক মৈত্র নামে ১৯ বছরের এক যুবকের মাথায় গুলি করা হয়েছে। আইএসএফের এক কর্মীকে বোমা মেরে খুন করা হয়েছে।’

তিনি বলেন যে, ‘ফল প্রকাশ ২৪ ঘণ্টাও হয়নি, তার মধ্যে যদি এই অবস্থা হয় তাহলে পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে। নির্বাচন পরবর্তী হিংসা এখন আয়ত্বের বাইরে চলে গিয়েছে।’ তিনি আরও জানিয়েছেন যে, এইসব ঘটনা প্রসঙ্গে রাজ্য বিজেপি প্রশাসনের আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তবে, দিলীপবাবুর অভিযোগ, তাঁরা চুপ করে আছে। কোনও পদক্ষেপ নিচ্ছেন না। তিনি আরও অভিযোগ করেছেন যে, পুলিসের সামনেই হিংসা হচ্ছে। বিজেপির হাজার হাজার কর্মী ঘরছাড়া। তাদের বিভিন্ন জায়গায় রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

এছাড়াও রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে বলেন যে, ‘এখন করোনা সংক্রমণ নিয়ে মানুষ ভয়, ভীত। এই আবহে এই রাজনৈতিক সন্ত্রাস অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।’ অবিলম্বে এই রাজনৈতিক হিংসা বন্ধের আবেদন জানিয়েছেন দিলীপ ঘোষ।