আজ ফের লোকাল ট্রেন চালুর দাবিতে রেল অবরোধ যাত্রীদের!

বংনিউজ ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ কালকের পর, আজ আবার লোকাল ট্রেন চালু করার দাবিতে রেল অবরোধ করলেন নিত্যযাত্রীরা। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই সোনারপুর, ঘুটিয়ারি শরিফ-সহ শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখার একাধিক স্টেশনে রেল অবরোধ করেন নিত্যযাত্রীরা। সোনারপুরে অবরোধের জন্য দাঁড়িয়ে পড়ে ক্যানিং স্টাফ স্পেশাল ট্রেন। এই নিয়ে পরপর দু’দিন রেল অবরোধ হল।

উল্লেখ্য, আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত বাংলায় জারি করেছে কড়া বিধিনিষেধ। বন্ধ রয়েছে গণপরিবহন ব্যবস্থা। করোনা অতিমারির জেরে বন্ধ রাখা হয়েছে লোকাল ট্রেন। ফের আবার কবে নাগাদ চলবে লোকাল ট্রেন, সেই অপেক্ষায় রয়েছেন সাধারণ মানুষ। এদিকে সরকারি এবং বেসরকারি অফিসে কম সংখ্যক কর্মী নিয়ে কাজ শুরু হয়েছে। তবে, গণপরিবহন ব্যবস্থা একদিকে যেমন বন্ধ রয়েছে, তেমনই অধিকাংশ বেসরকারি সংস্থা তাঁদের কর্মীদের যাতায়াতের জন্য কোনও ব্যবস্থা করেনি। মেট্রো পরিষেবা চালু হলেও, একাধিক শর্ত মানতে হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে প্রতিদিন অফিসে, কাজে পৌঁছানই বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে মানুষের কাছে। পাশাপাশি অতিরিক্ত টাকাও খরচ হচ্ছে গন্তব্যে পৌঁছাতে।

এহেন অবস্থায় সাধারণ মানুষের একটাই দাবি, সবরকম করোনা সতর্কতা মেনে, লোকাল ট্রেন চালু করা হোক অবিলম্বে। কিছু মানুষের কাজে যাওয়ার জন্য ট্রেন চলবে, আর কিছু মানুষ কাজে যেতে পারবেন না ট্রেনে করে, এই বিভাজন অবিলম্বে বন্ধ করা হোক। প্রত্যেক মানুষেরই পরিবারের প্রয়োজন মেটাতে কাজে যেতে হবে, তবে, তার জন্য ট্রেন চালু হওয়া আবশ্যিক এই মুহূর্তে, বিশেষ করে যখন করোনা সংক্রমণ রাজ্যে অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। লোকাল ট্রেন চালু করা না গেলে, অন্তত স্টাফ স্পেশালে উঠতে দেওয়া হোক। এই দাবিতেই বুধবারের পর আজ ফের রেল অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান যাত্রীরা।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গতকাল সোনারপুর স্টেশনে ট্রেন চালানোর দাবিতে রেল অবরোধ করেন নিত্যযাত্রীরা। স্পেশাল ট্রেনে নিত্য যাত্রীদের উঠতে না দেওয়ায় এবং লোকাল ট্রেন চালানোর দাবিতে রেল লাইনেই বসে পড়েন নিত্যযাত্রীরা। বুধবার সকালে সোনারপুর স্টেশনে কয়েকশো মানুষ বিক্ষোভ দেখান। এই বিক্ষোভকারীদের মধ্যে অধিকাংশই শহর কলকাতায় জীবিকার সন্ধানে আসা পরিচারিকরা এবং শ্রমিক শ্রেণির মানুষ ছিলেন। বুধবার সকালে এই অবরোধের জেরে শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখার বারুইপুর, ক্যানিং, ডায়মন্ডহারবার, লক্ষ্মীকান্তপুর, নামখানা লাইনে আপ ও ডাউন ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ফলে জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত কর্মীদেরও কর্মক্ষেত্রে পৌঁছতে সমস্যায় পড়তে হয়। স্পেশাল ট্রেন পরিষেবাও ব্যহত হয়।

এদিকে রেলসূত্রে খবর, লোকাল ট্রেন পরিষেবা চালু করার আবেদন জানিয়ে, এর আগেই পরিবহণ সচিবকে চিঠি দিয়েছে পূর্ব ও দক্ষিণ পূর্ব রেল। রেলের তরফে বলা হয়েছে, স্টাফ স্পেশাল ট্রেনে অতিরিক্ত ভিড় হচ্ছে। এর ফলে সংক্রমণের ঝুঁকি রয়েছে। তবে, রেলের তরফে আগেই জানানো হয়েছে, লোকাল ট্রেন পরিষেবা কবে নাগাদ চালু করা হবে, তা নিয়ে রাজ্য সরকারই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।

বাংলায় করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের মোকাবিলায় বন্ধ করা হয় লোকাল ট্রেন পরিষেবা। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ার পর, পূর্ব ও দক্ষিণ পূর্ব শাখায় একাধিক রেলকর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। সেই কারণে ট্রেনের সংখ্যাও কমাতে হয়েছিল। সংক্রমণ বাড়তে থাকায় এরপর, বাধ্য হয়েই সংক্রমণ ঠেকাতে বন্ধ রাখা হয়, লোকাল ট্রেন। স্পেশাল ট্রেন চললেও, তাতে সাধারণ যাত্রীদের ওঠার অনুমতি ছিল না। এর জেরে চরম সমস্যায় পড়েন নিত্যযাত্রীরা। বুধবার এবং আজ ফের যাত্রী বিক্ষোভে সেই ক্ষোভই আবার প্রকাশ পেল।