মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪

দেখতে দেখতে ৪৮ বসন্ত পার ‘ক্রিকেট দেবতা’র! ফিরে দেখা সচিন তেন্ডুলকর

আত্রেয়ী সেন

প্রকাশিত: এপ্রিল ২৪, ২০২২, ১২:২১ পিএম | আপডেট: এপ্রিল ২৪, ২০২২, ০৬:৪৪ পিএম

দেখতে দেখতে ৪৮ বসন্ত পার ‘ক্রিকেট দেবতা’র! ফিরে দেখা সচিন তেন্ডুলকর
দেখতে দেখতে ৪৮ বসন্ত পার ‘ক্রিকেট দেবতা’র! ফিরে দেখা সচিন তেন্ডুলকর

বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ ক্রিকেট মানেই সচিন তেন্ডুলকর, আবার সচিন তেন্ডুলকর মানেই ক্রিকেট। আবার ক্রিকেট যদি ধর্ম হয়, তবে, সচিন সেই ধর্মের দেবতা। ক্রিকেটের দেবতা হিসেবেই পূজিতা হন সচিন তেন্ডুলকর। ক্রিকেটের এমন কোনও রেকর্ড নেই, যেখানে তাঁর নাম নেই। সে যেমনই রেকর্ড হোক না কেন। সর্বাধিক রান করার নজির হোক বা সেঞ্চুরি সংক্রান্ত রেকর্ড হোক না কেন। সচিন এখনও সবার শীর্ষে। 

উল্লেখ্য, ভারতের প্রথম ক্রীড়াবিদ হিসেবে দেশের সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান ‘ভারতরত্ন’ পেয়েছিলেন। তাও এক নজির। শুধু ‘ভারতরত্ন’ সম্মানই হোক, পদ্মশ্রী, পদ্মবিভূষণ, রাজীব গান্ধী খেলরত্ন পুরষ্কার, অর্জুন পুরষ্কার তো আছেই। এহেন ক্রিকেটের দেবতা মাঠে যেভাবে ধরা দেন, বা তাঁকে মাঠে যে রূপে দেখা যায়, মাথের বাইরে সেই তিনিই সম্পূর্ণ আলাদা একটা মানুষ। মাঠে ২২ গজে যতটা বিধ্বংসী, মাঠের বাইরে সেই মানুষটাই ততোধিক মানবিক। ‘আপনালয়’ নামক একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার মাধ্যমে প্রতি বছর ২০০ জন ছেলে-মেয়েদের ভরণপোষণের দায়িত্ব পালন করছেন। 

বিশিষ্ট সঙ্গীত পরিচালক সচিন দেব বর্মণকে খুবই পছন্দ করতেন সচিনের বাবা প্রয়াত রমেশ তেন্ডুলকর। তাই বাড়ির সবথেকে ছোট সন্তানের নাম সাধ করে রেখেছিলেন সচিন। সচিনের ছোট বেলা কেটেছে, আর পাঁচটা মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলের মতোই বাড়ি, পাড়া ও স্কুলে দুষ্টুমি করে। দুষ্টুমির পাশাপাশি সাহিত্য সহবাসের বন্ধুদের সঙ্গে চলত জমিয়ে ক্রিকেট খেলা। সচিনের ক্রিকেটটা হবে, এটা বুঝতে পেরেছিলেন, সচিনের দাদা অজিত তেন্ডুলকর। তাই ছোট ভাইকে সঙ্গে নিয়ে চলে যান শিবাজী পার্কে। সময় নষ্ট না করে। সেই সালটা ছিল ১৯৮৪।  শুরু হল এক নতুন অধ্যায়ের প্রয়াত রমাকান্ত আচরেকরের তত্ত্বাবধানে। 

তবে, রমাকান্ত আচরেকরের অধীনে তাঁর কোচিং শুরু হলেও, যাত্রাটা এতটা সহজ ছিল না। প্রথম কয়েকদিন ছোট্ট সচিনের ব্যাটিং দেখার পর দাদা অজিতকে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন রমাকান্ত। তবে, অজিতের অনেক অনুনয় বিনয়ের পর রমাকান্তের মন পরিবর্তন হয়। শোনা যায়, একদিন একটি গাছের আড়াল থেকে খুদে সচিনের ব্যাটিং দেখেছিলেন। সেটা দেখেই তিনি সচিনকে প্রশিক্ষণ দিতে রাজি হয়ে যান। শুধু কি তাই! সচিনের ক্রিকেট শিক্ষা আরও সঠিক করতে স্কুলও বদলে ফেলেছিলেন এই কোচ।

১৯৮৮ সালের ১১ ডিসেম্বর ১৫ বছর ২৩২ দিন বয়সে মুম্বইয়ের হয়ে রঞ্জি ট্রফিতে অভিষেক ঘটান তিনি। অবশ্য গুজরাতের বিরুদ্ধে সেই ম্যাচে বলা যায়, সচিনের রাজকীয় অভিষেক ঘটেছিল। ১২৯ বলে ১০০ রানে অপরাজিত থেকে সর্বকনিষ্ঠ ক্রিকেটার হিসেবে শতরান করার নজির গড়েছিলেন তিনি। এমনকি দলীপ ট্রফি ও ইরানি ট্রফির অভিষেক ম্যাচেও তিনিই একমাত্র ভারতীয় যিনি শতরান করেছিলেন। আর সেই রেকর্ড এখনও কেউ ভাঙতে পারেনি। 

সেই ক্রিকেটের দেবতার যাত্রা শুরু। মাত্র ১৬ বছর বয়সে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তাঁর টেস্ট অভিষেক ঘটে যায়। এরপর দীর্ঘ ২৪ বছর ধরে ক্রিকেট দুনিয়াকে অসাধারণ খেলা উপহার দিয়েছেন, একের পর এক রেকর্ড করেছেন। দেশকে গর্বিত করেছেন। এর সবচেয়ে গৌরবজনক অধ্যায় হল ২০১১ সালের ২ এপ্রিল ঘরের মাঠ ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপ জয়। 

ব্যাট-বল- এর সঙ্গে বাইশ গজ থেকে সরে এসেছেন ৯ বছর অতিক্রান্ত হল। তাঁর নামের পাশে এখন ‘প্রাক্তন’ শব্দ লেখা আছে। তবুও এখনও তাঁর অন ড্রাইভ, কভার ড্রাইভ, আপার কাট-এর পুরনো ভিডিও দেখে, মানুষ একইভাবে রোমাঞ্চিত হয়। এমনই ৪৯ বছরে পা দেওয়া ‘ক্রিকেট দেবতা’-র জাদু। ভাল থাকবেন ‘ক্রিকেট দেবতা’। জন্মদিনের অনেক শুভেচ্ছা ‘গড অফ ক্রিকেট’।