মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪

কাতারের সবচেয়ে বড় স্টেডিয়াম গড়ায় বাংলার এই যুবকের হাত! সেখানেই হবে বিশ্বকাপের মেগা ফাইনাল

মৌসুমী মোদক

প্রকাশিত: নভেম্বর ৩০, ২০২২, ০৩:৫৪ পিএম | আপডেট: নভেম্বর ৩০, ২০২২, ০৯:৫৪ পিএম

কাতারের সবচেয়ে বড় স্টেডিয়াম গড়ায় বাংলার এই যুবকের হাত! সেখানেই হবে বিশ্বকাপের মেগা ফাইনাল
কাতারের সবচেয়ে বড় স্টেডিয়াম গড়ায় বাংলার এই যুবকের হাত! সেখানেই হবে বিশ্বকাপের মেগা ফাইনাল

জমে উঠেছে ২০২২ কাতার বিশ্বকাপ। ফুটবল ফিভারে কাঁপছে বিশ্ব। মেসি, রোনাল্ডো, নেইমার, মুলার জ্বরে এখন আক্রান্ত ফুটবলপ্রেমীরা। নব্বই মিনিটের টান টান উত্তেজনা যেন সোজা  স্টেডিয়াম থেকে সোজা ঢুকে পড়েছে ড্রয়িং রুমে। আর যেখানে ফুটবল থাকবে সেখানে একজনও বাঙালি থাকবে না, তা আবার হয় নাকি! এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। আজ শোনাবো এমন এক বাঙালি যুবকের কথা, যার হাতে নাকি তৈরি কাতার বিশ্বকাপের স্বপ্ন। যিনি না থাকলে কাতারে হয়ত আয়োজিতই হতো না এই বিশ্বকাপ।

কাতারের অন্যতম স্টেডিয়াম হিসেবে উঠে এসেছে যার নাম সেটি লুসাইল  স্টেডিয়াম। এটিই কাতারের সবচেয়ে বড়ো স্টেডিয়াম, যা পুরোটাই বাতানুকূল। বহু অর্থ খরচ করে সেই স্টেডিয়াম বানানো হয়েছে। শুধু অর্থ নয়, বহু প্রবাসীর ঘামঝরা পরিশ্রম রয়েছে এই স্বপ্নের স্টেডিয়াম তৈরিতে। যেখানে ৮০ হাজার মানুষ একসঙ্গে বসে চোখের সামনে ফিফা ওয়ার্ল্ড কাপ দেখার আনন্দ উপভোগ করতে পারবেন। এই স্টেডিয়ামেই নাকি খেলা হবে বিশ্বকাপের মেগা ফাইনাল ম্যাচ। সেরা বিশ্বের সেরা হওয়ার স্বপ্নে লড়বে দুই যোগ্য দেশ। যদিও ফাইনাল ম্যাচ হতে এখনও বেশ দেরি। তবে মেগা ফাইনালের জন্য কাতারের লুসাইল স্টেডিয়াম এখন থেকেই সেজে উঠছে আলাদা রুপে।

আর কাতারের সেই স্টেডিয়াম তৈরিতেই যোগদান দিয়েছে জলপাইগুড়ি নিউটন পাড়ার বিমান দে সরকার। জলপাইগুড়ি ফণীন্দ্রদেব ইনস্টিটিউশনের ছাত্র বিমান সেই স্কুল থেকেই মাধ্যমিক পাশ করেন। এরপর মেকানিক্যাল বিভাগে জলপাইগুড়ি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে পড়াশোনা। তারপর প্রযুক্তিতে স্নাতক ডিগ্রী। স্নাতক হওয়ার পর দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি সংস্থায় বিমানের চাকরিজীবনের শুরু। ২০১৭ সালে নতুন একাধিক বিদেশি সংস্থায় কাজে যোগদানের সুযোগ মেলে। সেখান থেকে তিনি পৌঁছে যান কাতারে।

২০১৭ সালেই বিমানের হাতে সুযোগ আসে লুসাইলের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ স্টেডিয়াম তৈরির। দ্বিতীয় বার চিন্তা করে সময় নষ্টের চেয়ে তিনি পৌঁছে যান সুদূর কাতারে। সে সময়ই দেশের মাটি ছেড়ে বিমানে করে কাতারে পাড়ি দেন বিমান। এরপর হাত লাগান স্টেডিয়াম তৈরির কাজে। আজ তাঁর হাত ধরেই সেজে উঠবে কাতারের সেরা স্টেডিয়াম। বিমান জানিয়েছেন, "স্টেডিয়াম তৈরি করতে ৬ বছর সময় লেগেছে। এই স্টেডিয়াম আমার জীবনের স্বপ্ন। কারণ, এই প্রথম এতো বড় কাজ করলাম। বাঙালির সেরা খেলা ফুটবল, সেই খেলার মূল জায়গা তৈরি করতে কিছুটা অংশ যোগদান দেওয়াতে অত্যন্ত খুশি।"

বিমানের এহেন সাফল্যের স্বভাবতই গর্বে বুক ভরে উঠছে পরিবারেরও। বিমানের বাবা জানান বাচ্চু দে সরকার জানান, "আমার ছেলে এতো বড় জায়গায় কাজে অংশগ্রহণ করেছে, আমি ভীষণ খুশি। আমি কখনও ভেবেই উঠতে পারেনি যে ফিফা ওয়ার্ল্ড কাপ যেখানে খেলা হবে সেই স্টেডিয়াম আমার ছেলে তৈরি করবে। আমি অত্যন্ত খুশি।" অন্যদিকে, বিমানের কাজে গর্বিত তার ছোটবেলার স্কুলও। স্কুলের প্রধান শিক্ষক জানিয়েছেন, বিমানের জন্য তিনি অত্যন্ত গর্বিত। তাঁর স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র এত বড় জায়গায় এই ধরনের কাজে অংশগ্রহণ করেছে। এর ফলে স্কুলের অন্যান্য ছাত্ররাও আগামীদিনে অনুপ্রাণিত হবে বলে মনে করছেন তিনি।