শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

স্বস্তির খবর, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে বেড়েছে সুস্থতার সংখ্যা, সংক্রমিতের সংখ্যা সাড়ে ১৯ হাজারের কাছাকাছি

০৯:১০ পিএম, মে ১০, ২০২১

স্বস্তির খবর, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে বেড়েছে সুস্থতার সংখ্যা, সংক্রমিতের সংখ্যা সাড়ে ১৯ হাজারের কাছাকাছি

বংনিউজ ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ রাজ্যে ক্রমশ বেড়েই চলেছে করোনার সংক্রমণ। বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যাও। ইতিমধ্যেই রাজ্যে করোনা সংক্রমণের মোকাবিলায় নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে রাজ্য সরকার।

তৃতীয়বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন যে, করোনা মোকাবিলা সবার আগে অগ্রাধিকার পাবে। ইতিমধ্যেই রাজ্যে জারি হয়েছে লকডাউন। লোকাল ট্রেন বন্ধ। অন্যান্য পরিবহন চলছে ৫০ শতাংশ যাত্রী নিয়ে। দিনে মাত্র ৫ ঘণ্টা খোলা রাখা হচ্ছে দোকান-বাজার।

বন্ধ রাখা হয়েছে রেস্তোরাঁ, শপিং মল, বিউটি পার্লার, জিম, সিনেমা হল। রাজ্য সরকারের তরফ থেকে বারবার মানুষকে সতর্ক থাকার কথা বলা হচ্ছে। তাও রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি ক্রমশ ভয়াবহ হচ্ছে। রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ১৯ হাজার ৪৫৫ জন। আর মৃত্যু হয়েছে ১৩৪ জনের। এই মুহূর্তে রাজ্যে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা বেড়েছে ৬৩৬ জন। আর এই মুহূর্তে রাজ্যে মোট সক্রিয় রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ১ লক্ষ ২৬ হাজার ৬৬৩ জন। তবে, আশার এবং স্বস্তির খবর, স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী, দৈনিক সুস্থতার সংখ্যা বেড়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১৮ হাজার ৬৭৫ জন।

এদিকে দৈনিক মৃত্যুতে আবারও প্রথম স্থানে উত্তর ২৪ পরগণা। এই জেলাতেই দৈনিক মৃত্যু হয়েছে ৪২ জনের। এই জেলাতে গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছেন ৩ হাজার ৯৭১ জন। আক্রান্ত এবং মৃত্যুর সংখ্যার নিরিখে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে কলকাতা। কলকাতায় গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৩ হাজার ৯৪৮ জন। আর মৃত্যু হয়েছে ৩৪ জনের। পাশাপশি উদ্বেগে রাখছে হুগলি, হাওড়া, নদিয়া, বীরভূমের সামগ্রিক করোনা পরিস্থিতিও। উল্লেখ্য, রাজ্যের করোনা পরিস্থিতিতে অনেকেই মনে করছিলেন যে, খুব শীঘ্রই রাজ্যে সম্পূর্ণ লকডাউন ঘোষণা হবে। তবে, আজ সেই আশঙ্কা দূর করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

এদিন নবান্নে সাংবাদিক সম্মেলনে রাজ্যে করোনা সংক্রমণ রোধে নতুন সিদ্ধান্ত নিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সম্পূর্ণ লকডাউন না করে, পরিবর্তে কড়া বিধি পালনের উপর জোর দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। আজ নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, লকডাউন হলে, দিন আনা দিন খাওয়া গরীব মানুষ সমস্যায় পড়বেন।

এদিন নবান্নে সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আগেরবার যেমন ঝড় সামলেছি, এবারও সামলাবো। সম্পূর্ণ লকডাউন করার পক্ষপাতী নই। বহু গরিব মানুষের সমস্যা হবে। ওদের তো দিন চালাতে হবে। বরং ভালভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন। মনে রাখবেন, মাস্ক পরতে হবে, ভাল করে স্যানিটাইজ করতে হবে, হাত বারবার ধোবেন। লোকাল ট্রেন বন্ধ হওয়ায় ঝুঁকি অনেকটা কমেছে। লকডাউনের মতো করেই চলুন সবাই।’

এদিন তিনি আরও জানিয়েছেন যে, কোভিড হাসপাতালের জন্য একটা বিল্ডিং দিচ্ছে সেন্ট জেভিয়ার্স। পাশাপাশি করোনা-যুদ্ধে সাধারণ মানুষের কাছে আর্থিক সাহায্যের আবেদন করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি, ভ্যাকসিন নিয়ে ফের একবার কেন্দ্রীয় নীতির বিরুদ্ধে সরব হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

ভ্যাকসিন প্রসঙ্গে এদিন তিনি বলে যে, ‘দেশের ৬৫ শতাংশ ভ্যাকসিন বাইরে গেলে, অন্য দেশ থেকে আনাতে হবে। কোথা থেকে ভ্যাকসিন আনানো হবে, কেন্দ্র ঠিক করুক। এ জন্য সুস্পষ্ট নীতির দরকার। বেসরকারি হাসপাতালগুলিকে ১ কোটি ভ্যাকসিন দেব। রাজ্যের সবাইকে নিখরচায় ভ্যাকসিন দেব।’

অন্যদিকে, প্রতিশ্রুতি মতো কাজ হচ্ছে কিনা, তা দেখার জন্য কমিটি গঠন করার কথা বলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন তিনি বলেন, বহিরাগতদের আরটিপিসিআর করাতে হবে। রিপোর্ট পজিটিভ হলে, ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। গরিব ছাড়া বাকিদের নিজেদের খরচে থাকতে হবে।