শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

দু'চোখে চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন! পড়াশোনার খরচ যোগাতে বাদাম বিক্রি করছেন বাংলাদেশের এই কৃতী ছাত্রী

০৩:৫৭ পিএম, মার্চ ১৮, ২০২১

দু'চোখে চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন! পড়াশোনার খরচ যোগাতে বাদাম বিক্রি করছেন বাংলাদেশের এই কৃতী ছাত্রী

বয়স মাত্র বছর কুড়ি। দু'চোখ ভরে স্বপ্ন চিকিৎসক হওয়ার। সদ্যই বিজ্ঞান বিভাগে এইচএসসিতে এ প্লাস পেয়ে মেডিকেল কলেজে ভর্তির জন্য আবেদন করেছেন। আগামী এপ্রিল মাসেই মেডিকেলের লিখিত পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতিও নিচ্ছেন। কিন্তু অভাবের সংসারে তাঁর পড়াশোনার খরচ জোগানের মতো পর্যাপ্ত অর্থ আর কোথায়? পড়াশোনার খরচ যোগাতে তাই এখন রাস্তায় বাদাম বিক্রি করছেন বাংলাদেশের নীলফামারির ছাত্রী কৃতী লতা রায়।

ওপার বাংলার নীলফামারী জেলার গোড়গ্রাম ইউনিয়নের ডারারপাড় নিজপাড়া গ্রামের মেয়ে লতা ছেলেবেলাতেই নিজের মাকে হারান। বাবা বিয়ে করে ঘরে আনেন দ্বিতীয় স্ত্রী। তাঁদের একটি বছর পনেরোর ছেলেও রয়েছে। সংসারে অভাব অনটন যেন নিত্যদিনের বিষয়। তাই ইঁটভাটায় শ্রমিকের কাজ করছেন লতার বাবা। মেয়ের পড়াশোনার খরচ যোগাতে তিনি একেবারেই অপারগ।

এদিকে লতার প্রচণ্ড মাথা যন্ত্রণার রোগ৷ অর্থের অভাবে সে চিকিৎসাও সম্ভব হয়নি। ভবিষ্যৎ গড়তে প্রাইভেট টিউশন পড়িয়ে নিজের লেখাপড়ার অর্থ জুগিয়েছেন এতদিন। কিন্তু সংসার চালাতে এবার নামতে হল পথেও৷ নিজের চিকিৎসা এবং লেখাপড়ার খরচ যোগাতে এখন রাস্তায় বাদাম বিক্রির পথ বেছে নিয়েছেন লতা। লোকচক্ষুর আড়ালে বোরখা পরেই পথে নামতে হচ্ছে তাঁকে। পাশাপাশি নিজের চিকিৎসার জন্যও অর্থ জমানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন এই কৃতী ছাত্রী।

[embed]https://www.youtube.com/watch?v=pWUXpaJe9P8[/embed]

বিষয়টি লোকচক্ষুর নজরে আসতেই খবর ছড়িয়ে পড়ে। তা জানতে পেরে নীলফামারীর সংসদ সদস্য সাবেক সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর মোবাইলে কথাও বলেছেন লতার সঙ্গে। ইতিমধ্যেই তিনি লতার চিকিৎসা সহ লেখাপড়ার সমস্ত খরচের দায়িত্বও নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন। সেই সঙ্গে কিছু অর্থও প্রদান করা হয়েছে ছাত্রীটিকে।

এই প্রসঙ্গে লতা জানিয়েছেন, "নিজের লেখাপড়ার খরচ জোগাতে বাদাম বিক্রি করতে রাস্তায় নামতে বাধ্য হই আমি। নীলফামারী শহরে এসে বাদাম বিক্রি করতাম; যা লাভ হতো তা খারাপ ছিল না। তবে এখন আমাদের সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূর আমার সব দায়দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। এক বড় হতাশা থেকে যেন মুক্তি পেলাম। সকলে আমার জন্য প্রার্থনা করবেন যেন মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়ে একজন চিকিৎসক হতে পারি। চিকিৎসক হতে পারলে এলাকার গরিব-দুঃখী মানুষের চিকিৎসাসেবা দিতে পারব।"