বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

তিনি মীরজাফর নন! মমতাকে কটাক্ষ করে, ব্যাখ্যা দিয়ে বুঝিয়ে দিলেন শুভেন্দু

০৯:০০ পিএম, মার্চ ১৬, ২০২১

তিনি মীরজাফর নন! মমতাকে কটাক্ষ করে, ব্যাখ্যা দিয়ে বুঝিয়ে দিলেন শুভেন্দু

বংনিউজ ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ সামনেই বাংলায় বিধানসভা নির্বাচন। বাকি হাতে গোনা আর মাত্র কয়েকটা দিন। এবারের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ৮ দফায়। এই মুহূর্তে বাংলার শাসনক্ষমতা দখলে ঝাঁপিয়ে পড়েছে প্রতিটি রাজনৈতিক দল।

এবারের নির্বাচনের সবথেকে হাই-ভোল্টেজ লড়াই হতে চলেছে নন্দীগ্রামে। এই কেন্দ্রে এই প্রথম একে অপরের প্রতিপক্ষ হয়ে ভোট-সমরে নামছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং শুভেন্দু অধিকারী। অনেক আগেই নন্দীগ্রামে জনসভা করে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন যে, এবারের নির্বাচনে তিনি নন্দীগ্রাম থেকে লড়াই করবেন। এরপর থেকে একাধিকবার তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যোগ দেওয়া শুভেন্দু অধিকারী বলেছিলেন যে, তিনি নন্দীগ্রামে প্রার্থী হন বা নাই হন, বিজেপি নন্দীগ্রাম কেন্দ্রে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হাফ লক্ষ ভোটে  হারাবে।

পরে বিজেপির প্রকাশিত প্রার্থী তালিকায় দেখা যায় যে, নন্দীগ্রামে বিজেপির হয়ে নির্বাচনে দাঁড়াচ্ছেন শুভেন্দু অধিকারী। যদিও তিনি নিজেও এই কেন্দ্র থেকে লড়াই করার ইচ্ছে প্রকাশ করেছিলেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে।

এদিকে মঙ্গলবার ফের একবার বাঁকুড়ার সভা থেকে নাম না করে, মুখ্যমন্ত্রী শুভেন্দুকে 'মীরজাফর' বলে কটাক্ষ করেন। তবে, এটা প্রথমবার নয়, এর আগেও ভুবার তাঁকে 'মীরজাফর' বলে কটাক্ষ করা হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে। মঙ্গলবারই বাঁকুড়ার মেজিয়ার সভা থেকে শুভেন্দুর নাম উল্লেখ না করে মমতা বলেছেন, 'আমাদের দল থেকে কয়েকজন বেরিয়ে যাওয়ায় এই দল এখন শুধুই মানুষের দল। মীরজাফররা চলে গিয়েছে, গুন্ডারা চলে গিয়েছে। আমি বেঁচে গিয়েছি।' তারই জবাব এবার এদিন নন্দীগ্রাম থেকে দিলেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। তৃণমূল কেন ছাড়লেন, তারই ব্যাখা দিতে গিয়ে, নিজেকে 'ঘরের ছেলে' দাবি করে শুভেন্দু বলেন, রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলকে তিনি কোনও রাজনৈতিক দল বলেই মনে করেন না। তাঁর দাবি এটা আসলে একটা প্রাইভেট কোম্পানি। আর এই কোম্পানির মালিকের আসনে রয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুভেন্দুর দাবি, তিনি সবসময় ইয়েস ম্যাম বলতে পারেননি, আর সেটাই ছিল তৃণমূল কংগ্রেস কোম্পানির প্রধান সমস্যা।

উল্লেখ্য, বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর থেকে বারবার শুভেন্দু অধিকারী নরেন্দ্র মোদী কী কী উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন তারই ব্যাখ্যা দিয়ে গেছেন। এমনকি নন্দীগ্রাম দিবসের দিন, তিনি নন্দীগ্রামবাসীর উদ্দেশে ব্যাখ্যা করেন, নন্দীগ্রাম আন্দোলনে বিজেপির বিরাট ভূমিকার কথা।

তিনি এও দাবি করেন যে, 'গত বছর পর্যন্ত যাঁরা নন্দীগ্রামে আসেননি, আগামী বছর যাঁরা আসবেন না, তাঁরা এখন এখানে আসছেন। যাঁরা নন্দীগ্রামে গুলি চালিয়েছিল, তাদের দলে নিয়েছে তৃণমূল, অভিযুক্ত পুলিশ অফিসারের পদোন্নতি দিয়েছে। কিন্তু আমি, আপনাদের গ্রামের ছেলে সেইসব শহিদ পরিবারেরে কাছে দায়বদ্ধ।' এইভাবেই তিনি বারবার বোঝাতে চাইছেন, নন্দীগ্রাম আন্দোলনে তাঁর কতোটা ভূমিকা ছিল আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরই বা কতোটা ভূমিকা ছিল।

বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর থেকেই শুভেন্দু অধিকারী প্রতিটা রাজনৈতিক সভাতেই অনুরোধের সুরে বলছেন, 'বাংলাকে মোদিজির হাতে তুলে না দিলে বাংলা বাঁচবে না।' এদিনও তিনি নরেন্দ্র মোদীর পক্ষে সওয়াল করেন। তৃণমূলকে নিশানা করতে গিয়ে বলেন, লকডাউনে নরেন্দ্র মোদী সরকার বিনা পয়সায় রেশন দিয়েছেন। বিনামূল্যে গ্যাস দিয়েছে। আর এখন তৃণমূল বলছে, ক্ষমতায় ওরা না এসে, বিজেপি ক্ষমতায় এলে এসব বন্ধ করে দেবে। একইসঙ্গে এদিনও তিনি আত্মবিশ্বাসের সুরে বলেন যে, 'আমিই জিতব, আমিই জিতব, আমিই জিতব।' যদিও তৃণমূলের কটাক্ষ, নন্দীগ্রামে নিজের হার নিশ্চিত জেনেই, এ ধরনের অসংলগ্ন কথাবার্তা বলছেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী।