শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

স্ত্রীর শরীরে বাসা বেঁধেছিল মারণ-ক্যান্সার! বেহালা বাজিয়ে চিকিৎসার খরচ জোগাড় করতেন কলকাতার এই বৃদ্ধ!

০৩:৫১ পিএম, এপ্রিল ১৩, ২০২১

স্ত্রীর শরীরে বাসা বেঁধেছিল মারণ-ক্যান্সার! বেহালা বাজিয়ে চিকিৎসার খরচ জোগাড় করতেন কলকাতার এই বৃদ্ধ!

বছর কুড়ি আগে স্ত্রীর শরীরে বাসা বেঁধেছিল মারণ রোগ। চিকিৎসার খরচ জোগাতে হিমশিম অবস্থা! তবু হাল ছাড়লেন না তিনি। হাতে তুলে নিলেন বেহালা। আর তার জাদুতেই শ্রোতাদের মুগ্ধতায় ভরিয়ে জোগাতে লাগলেন চিকিৎসার খরচ। দীর্ঘ ১৭টা বছর! ঠিক এভাবেই তিনি বেহালা বাজিয়ে স্ত্রীর চিকিৎসার খরচ জোগাড় করেছেন। তিনি, বেহালার বলরাম দে স্ট্রিটের বাসিন্দা স্বপন শেঠ।

সময়টা তখন ২০০২ সাল। স্ত্রীর জরায়ুতে ধরা পড়ে ক্যান্সার। স্বাভাবিকভাবেই চিকিৎসার খরচ বেশ ব্যয় বহুল। বেহালার বাসিন্দা, পেশায় আর্টিস্ট স্বপন বাবুর মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়ল। আঁকার পাশাপাশি বেহালা বাজানোতেও তাঁর বেশ ভালো হাত ছিল৷ স্ত্রীর জন্য খরচ জোগাতে তাই সুরসাধনাকেই বেছে নিলেন তিনি। শুরু হল পথ চলা। কলকাতা থেকে শুরু করে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বেহালা বাজিয়ে বেড়াতেন তিনি। উদ্দেশ্য একটাই, চিকিৎসার ফান্ড জমানো৷ সে কারণে যে যা অর্থ দিয়ে সাহায্য করতেন, তা-ই নিয়ে জমাতে লাগলেন স্বপন বাবু। পাশাপাশি চলতে লাগল ছবি আঁকাও।

অবশেষে জীবনযুদ্ধে জয়ী হন স্বপন বাবু৷ ২০১৯ সালে এসে তাঁর স্ত্রীকে সম্পূর্ণ সুস্থ বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। জরায়ুর ক্যান্সারও সম্পূর্ণ নিরাময় হয় তাঁর৷ কিন্তু এরপরও বেহালা বাজানো ছাড়তে পারেননি বছর সাতাত্তরের এই বৃদ্ধ। এখনও বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ঘুরে বেহালা বাজিয়ে বেড়ান তিনি। না কোনও ফান্ড জমাতে নয়। শুধুমাত্র শ্রোতাদের মনোরঞ্জনের জন্যই বেহালা বাজান তিনি। পথচলতি মানুষ তাঁকে দেখে থমকে দাঁড়িয়ে পড়ে। তিনিও তাঁদের হাসিমুখে বেহালা বাজিয়ে শোনান। গল্পও করেন।

[embed]https://twitter.com/ILoveSiliguri/status/1380554872223801348?s=20[/embed]

সম্প্রতি তাঁকে নিয়ে ভাইরাল হয়েছে একটি ভিডিও। সেখানেই দেখা যাচ্ছে বেহালা হাতে রাস্তায় দাঁড়িয়ে সুরের মূর্ছনায় চারপাশ মাতিয়ে তুলছেন স্বপন বাবু। ভিডিওটির সঙ্গেই এই বৃদ্ধের জীবন কাহিনীর সংক্ষিপ্ত বিবরণও দেওয়া। সেখান থেকেই জানা গিয়েছে, বর্তমানে বলরাম দে স্ট্রিটেই নিজস্ব এক স্টুডিও খুলেছেন স্বপন শেঠ। ইতিমধ্যেই নিজের গানের একটি সিডিও বানিয়ে ফেলেছেন তিনি। সুরের জাদুতে শহরকে মাতাতে তাঁর প্রচেষ্টা আজও একইরকমই রয়েছে। তাই আজও শহরের কোণায় কোণায় মাঝেমধ্যেই নজরে আসেন তিনি। বেহালা হাতে তিনি বুঁদ সুরের সাধনায়...