বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

তথাগত রায়ের বিতর্কিত মন্তব্যে ক্ষুন্ন তনুশ্রী! নালিশ জানালেন দিলীপ-মোদি-শাহকে

১১:০৫ পিএম, মে ৫, ২০২১

তথাগত রায়ের বিতর্কিত মন্তব্যে ক্ষুন্ন তনুশ্রী! নালিশ জানালেন দিলীপ-মোদি-শাহকে

একুশের নির্বাচনে ভরাডুবি হয়েছে বিজেপি থেকে টিকিট পাওয়া রুপোলি পর্দার মুখদের। যা নিয়ে কার্যত দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তথাগত রায়। মঙ্গলবার নিজের ফেসবুক পেজে এই নিয়ে রাজ্য নেতাদেরকেই কটাক্ষ করেন কট্টর বিজেপি নেতা তথাগত রায়। পাশাপাশি বিজেপি থেকে টিকিট পাওয়া অভিনেত্রীদের 'নগরীর নটি' বলেও সম্বোধন করেন তিনি। তাঁর এই মন্তব্যের পরেই টুইট করে পাল্টা জবাব দিলেন অভিনেত্রী তথা বিজেপি নেত্রী তনুশ্রী চক্রবর্ত্তী।

বরাবরই চাঁচাছোলা কথা বলার জন্য বিতর্কের মুখে পড়েছেন এককালীন মেঘালয়ের রাজ্যপাল তথাগত রায়। এদিন তথাগত বাবু নিজের ফেসবুক পোস্টে বিজেপিতে আগত সেই নব্য মুখ দের বিরুদ্ধেই কটাক্ষ ছুড়ে দিলেন। তিনি নিজের ফেসবুক পোস্টে লেখেন, "পায়েল শ্রাবন্তী পার্নো ইত্যাদি ‘নগরীর নটীরা’ নির্বাচনের টাকা নিয়ে কেলি করে বেড়িয়েছেন আর মদন মিত্রর সঙ্গে নৌকাবিলাসে গিয়ে সেলফি তুলেছেন (এবং হেরে ভূত হয়েছেন)"। এর পরেই তিনি প্রশ্ন তুলে বলেন, তাঁদেরকে টিকিট দিয়েছিল কে ? কেনই বা দিয়েছিল? একই সঙ্গে তার প্রশ্নের মুখে পড়েছে রাজ্য বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বরা। দিলীপ ঘোষ, কৈলাস বিজয়বর্গীয়, অরবিন্দ মেননের নাম উল্লেখ করে এই রূপালি পর্দার অভিনেতা অভিনেত্রীদের টিকিট দেওয়ার কারন জানতে চান বরিষ্ঠ নেতা।

https://twitter.com/tnusreec/status/1389852194074025984

তাঁর এই পোস্টের পরেই দলের একাংশের সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন তিনি। প্রশ্ন উঠেছিল মহিলাদের নিয়ে সর্বোপরি নিজের দলের মহিলা প্রার্থীদের নিয়ে কিভাবে তিনি এহেন মন্তব্য করতে পারেন। এমন কুরুচিকর মন্তব্যের বিরোধিতা করেছিলেন নুসরত জাহান, কাঞ্চন মল্লিক, শ্রীলেখা মিত্ররা। টুইটারে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পায়েল সরকারও। এবার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বুধবার তনুশ্রী নিজের টুইটারে লেখেন, "এক আত্মমর্যাদা সম্পন্ন মহিলা হয়ে আমি এই টুইট করছি। বিজেপিতে স্মৃতি ইরানি এবং প্রয়াত সুষমা স্বরাজের মতো নেত্রী রয়েছেন। যে মহিলারা সম্মান নিয়ে এতদিন কাজ করেছেন তাঁদের প্রতি কুরুচিকর মন্তব্য করা হয়েছে। পাবলিক ডোমেনে যে মন্তব্য তথাগত রায় করেছেন তাতে আমরা তিনজনই খুব কষ্ট পেয়েছি। দলের সদস্য হিসেবে আমি অবশ্য এটা অভ্যন্তরীণ কর্তৃপক্ষকে জানাব। কারণ আমি বরাবর এবং এখনও দলের শৃঙ্খলায় বিশ্বাস করি।" এই পুরো টুইটটি এই তারকা নেত্রী নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহ, অমিত মালব্য, দিলীপ ঘোষ, কৈলাস বিজয় বর্গীয়কেও ট্যাগ করেছেন।

https://twitter.com/tnusreec/status/1389854686778327044

প্রার্থী তালিকা প্রকাশ হতেই দলের অন্তর্দ্বন্দ্ব সামনে এসেছিল গেরুয়া শিবিরের। উত্তর থেকে দক্ষিণ, ‘না পসন্দ’ প্রার্থীদের নিয়েই বিক্ষোভ চরমে উঠেছিল বিজেপির অন্দরে। বিজেপির আদি নব্য নেতাদের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এসেছে। একুশের নির্বাচনে যখন রুপোলি পর্দার মুখদের টিকিট দেওয়ার হিড়িক লেগে গিয়েছিল তখন সেই দৌড়ে পিছিয়ে ছিল না গেরুয়া শিবিরও। দলের একাংশ অভিজ্ঞ নেতারা এই নবাগতদের টিকিট দিতে নারাজ ছিল। দলের বরিষ্ঠ দের একাংশের মত ছিল রাজনীতিতে অভিজ্ঞতা নেই এমন কাউকে যেন এবারের নির্বাচনে দাঁড় না করানো হয়। কিন্তু সেই কথাকে তোয়াক্কা না করে অন্য একাংশের চাপে প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়েছিলেন শ্রাবন্তী, পার্নো, পায়েল, তনুশ্রী, যশের মত অভিনেতা-অভিনেত্রীরা। কিন্তু ফলাফল ঘোষণার দিন দেখা গেছে খরগপুরের প্রার্থী একমাত্র হিরণ ছাড়া জিততে পারেননি কেউ।

তবে এটাই শুরু নয়। এর আগেও দোলের দিন যখন মদন মিত্রের সঙ্গে বিজেপি থেকে টিকিট পাওয়া এই অভিনেত্রীরা নৌকা বিহারের মত্ত ছিলেন, কখনো সেই ছবি পোস্ট করে বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন তথাগত বাবু। এ সময় তিনি লিখেছিলেন, "“নগরীর নটী চলে অভিসারে যৌবনমদে মত্তা”! এই নটীদের এখনো এই বোধ হয়নি যে রাজনীতিটা অভিসার নয়।

শেষপর্যন্ত বাসবদত্তার অবস্থা না হলেই ভালো।" যা নিয়ে বারবার সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন তিনি। যদিও সেই বিষয়ে যে বিন্দুমাত্র কর্ণপাত করেননি এই বরিষ্ঠ নেতা, তার প্রমাণ আরও একবার পাওয়া গেল তাঁর এই পোস্টেই।