বংনিউজ২৪x৭ডিজিটাল ডেস্কঃ নন্দীগ্রামে ভোট প্রচারে গিয়ে গতকালই আহত হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপরেই তাঁকে তড়িঘড়ি গ্রিন করিডর করে কলকাতায় এনে ভর্তি করা হয়েছে এসএসকেএম হাসপাতালে।
বাংলায় আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে, ভোটের আবহে নন্দীগ্রামে প্রচারে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর আহত হওয়ার ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে রাজ্য-রাজনীতি। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বুধবার মধ্যরাতে টুইট করে বিজেপিকে হুঁশিয়ারি দিলেন তৃণমূল সাংসদ তথা মুখ্যমন্ত্রীর ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পায়ে প্লাস্টার করা অবস্থার ছবি দিয়ে টুইট করেন তিনি। ওই টুইটে রাজ্য বিজেপির উদ্দেশে সরাসরি বার্তা দিয়ে তিনি লিখেছেন, ২ মে, রবিবার বাংলার মানুষের ক্ষমতা দেখার জন্য অপেক্ষা করুন। প্রস্তুত থাকুন।
https://twitter.com/abhishekaitc/status/1369758951797972993উল্লেখ্য, এবারের নির্বাচনে তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী নিজেই নন্দীগ্রামে প্রার্থী হয়েছেন। তাঁর বিপরীতে বিজেপির হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন শুভেন্দু অধিকারী। বুধবার নির্বিঘ্নেই হলদিয়ায় মনোনয়ন জমা দেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রথমে তাঁর মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে কলকাতায় ফিরে যাওয়ার কথা থাকলেও, পরে তিনি সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন এবং নন্দীগ্রামেই থাকার সিদ্ধান্ত নেন।
বুধবার বেশ কয়েকটি মন্দির দর্শন করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রেয়াপাড়ায় তাঁর বাড়ির কাছেই বরোলিবাজারে একটি মন্দিরে ভিড়ের মধ্যে ধাক্কাধাক্কিতে জখম হন মুখ্যমন্ত্রী। পায়ে, ঘাড়-সহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত লাগে তাঁর। এরপর প্রচার পর্ব অসম্পূর্ণ রেখেই তাঁকে ফিরিয়ে আনা হয় কলকাতায়। এই মুহূর্তে তিনি ভর্তি রয়েছেন এসএসকেএম হাসপাতালে। এর জেরে আজ স্থগিত হয়ে গেছে তৃণমূলের ইস্তেহার প্রকাশও।
উল্লেখ্য, আজ আবার মেডিক্যাল বোর্ডের চিকিৎসকরা তাঁর যাবতীয় শারীরিক পরীক্ষা করবেন। মুখ্যমন্ত্রীর চিকিৎসার জন্য একটি মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। এসএসকেএমের অধ্যক্ষ মণিময় বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়াও তিন বিভাগীয় প্রধান ও আরও পাঁচ বিশেষজ্ঞ রয়েছেন মেডিক্যাল বোর্ডে। সূত্রের খবর, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের এই দলে রয়েছেন, এসএসকেএম-এর অর্থপেডিক বিভাগের প্রধান মুকুল ভট্টাচার্য, মেডিসিনের বিভাগীয় প্রধান সৌমিত্র ঘোষ, নিউরো সার্জারি বিভাগ প্রধান শুভাশিস ঘোষ। এছাড়াও আছেন, জেনারেল সার্জারি বিভাগের চিকিৎসক দীপ্তেন্দ্র সরকার। আছেন কার্ডিওলজিস্ট সরোজ মণ্ডল, নিউরো মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক বিমানকান্তি রায়, এন্ডোক্রনোলজিস্ট সুজয় ঘোষ, এবং অ্যানাস্থেসিওলজিস্ট সর্বাণী সহাইকা। পাশাপাশি পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজিস্ট গোপালকৃষ্ণ ঢালীর।
অন্যদিকে হাসপাতাল সূত্রে খবর, তাঁর বাঁ পায়ের গোড়ালি ও পায়ের পাতার হাড়ে চিড় ধরেছে। ওই পায়ের পেশিতেও চোট লেগেছে। মুখ্যমন্ত্রীর বাঁ পা ফুলে রয়েছে। গতকাল রাতে এমআরআই-এর পর পায়ে টেম্পোরারি প্লাস্টার করা হয়েছে। শুরু হয়েছে অ্যান্টিবায়োটিক। পায়ের ফোলা ভাব কমলে, আজ প্লাস্টার করা হতে পারে। এছাড়া আঘাত লেগেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডান কাঁধ ও কনুইয়ে। চোট রয়েছে ঘাড়েও। রাতে মুখ্যমন্ত্রীকে ব্যথা কমানোর ওষুধ দেওয়া হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, ইসিজি রিপোর্ট সন্তোষজনক হলেও, বুকে ব্যথা এবং শ্বাসকষ্টের কথা মুখ্যমন্ত্রী চিকিৎসকদের জানিয়েছেন।
এই বুকে ব্যথার কারণ আঘাতজনিত কিনা জানতে সিটি স্ক্যান করা হবে। এছাড়া, আজ আবার করা হবে ইসিজি। করা হতে পারে ইকো-ও। রক্তের একাধিক রুটিন পরীক্ষা করা হবে। মুখ্যমন্ত্রীকে ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন চিকিৎসকরা।