শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

‘বিজেপি ত্রিপুরাকে নিজের পৈতৃক সম্পত্তিতে পরিণত করেছে, গণতন্ত্র বিপন্ন’, বিস্ফোরক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়

১২:৪৯ পিএম, আগস্ট ৮, ২০২১

‘বিজেপি ত্রিপুরাকে নিজের পৈতৃক সম্পত্তিতে পরিণত করেছে, গণতন্ত্র বিপন্ন’, বিস্ফোরক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়

বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ রাজনীতিতে এই মুহূর্তে অন্যতম আলোচিত ঘটনা ত্রিপুরায় তৃণমূলের যুব কর্মীদের উপর আক্রমণ। শনিবার থেকেই উত্তপ্ত আগরতলা। গতকালই দুপুরে সংগঠনের কাজে যাওয়ার পথে আক্রান্ত হন যুব তৃণমূলের নেতারা। সেখানে লাঠি, রড দিয়ে তাঁদের উপরে হামলা করা হয় বলে অভিযোগ। ভেঙে দেওয়া হয় গাড়ির কাচ। ইটের আঘাতে মাথা ফাটে তৃণমূলের যুব নেতা সুদীপ রাহার। আক্রান্ত হন দেবাংশু ভট্টাচার্য এবং জয়া দত্তও।

এই ঘটনার পর, আজ সকালে মহামারী আইনে গ্রেফতার করা হয়েছে এই তৃণমূলের নেতাদের। অভিযোগের তীর বিজেপির দিকেই। এদিকে গতকালের ঘটনা এবং আজ দেবাংশুদের গ্রেফতারির পর, ত্রিপুরা পৌঁছেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। গতকালের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি টুইট করে বিজেপির বিরুদ্ধে সরব হন। দুই সপ্তাহ পরে, ত্রিপুরায় যাওয়ার কথা থাকলেও, গতকালের ঘটনার জন্যই আক্রান্ত যুব নেতাদের পাশে দাঁড়াতে আজই ত্রিপুরায় পৌঁছালেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

গতকালই রাতে তৃণমূলের যুব নেতাদের আক্রান্ত হওয়ার ঘটনায় টুইট করে লেখেন যে, ‘তৃণমূল কর্মীদের উপরে বর্বরোচিত হামলা করেছে বিজেপির গুন্ডারা। সব কর্মীদের পাশে দাঁড়াতে আগামিকাল আমি ত্রিপুরা আসছি। প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, আমার রক্তের শেষ বিন্দু পর্যন্ত লড়াই করব। বিপ্লব দেব পারলে আমায় আটকান। #TripuraDeservesBetter।’

জানা গিয়েছে যে, ইতিমধ্যেই খোয়াই থানায় আক্রান্ত এবং গ্রেফতার হওয়া তৃণমূল নেতা-কর্মীদের সঙ্গে দেখা করতে গেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কথা বলছেন ধৃত তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে। এদিকে, থানার বাইরে অভিষেককে ‘গো ব্যাক’ স্লোগান দেওয়া হচ্ছে।

আজ ত্রিপুরায় পৌঁছেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপিকে নিশানা করে বলেন যে, ‘বিজেপি ত্রিপুরাকে নিজের পৈতৃক সম্পত্তিতে পরিণত করেছে। বিপ্লব দেব ভাবছেন ত্রিপুরায় আসতে গেলে ভিসা নিয়ে ঢুকতে হবে। বিরোধীদের রাস্তায় নামার অধিকার নেই। কর্মসূচি করার অধিকার নেই। ত্রিপুরায় ঢুকলে পুলিস দিয়ে গ্রেফতার করাচ্ছে। গণতন্ত্র বিপন্ন। মানুষ আক্রান্ত। চ্যালেঞ্জ করলে জেলে ঢোকানো হচ্ছে। আক্রান্তদের জেলে ঢোকানো হয়েছে।’

এদিন তিনি রীতিমতো চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বলেছেন, ‘যত ক্ষমতা আছে প্রয়োগ করুক, ত্রিপুরায় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হবেই। এখানে আইনের শাসন নয়, শাসনের আইন চলছে। আমরা শরীরের শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে লড়ব। তৃণমূল বিজেপিকে এক ছটাক জমি ছাড়বে না।’

অন্যদিকে, জানা গিয়েছে যে, আদালত নয়, গ্রেফতার হওয়া তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের থানা থেকেই জামিনের চেষ্টা করছে তৃণমূল নেতৃত্ব। এদিন শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশ আসার আগেই থানায় পৌঁছে যান ব্রাত্য বসু, কুণাল ঘোষ এবং দোলা সেন। উল্লেখ্য, শনিবার রাতে খোয়াই থানার পুলিশ ধলাবিল চৌহমুনী এলাকা থেকে দেবাংশু, সুদীপ রাহা, জয়া দত্ত-সহ ১৪ জন তৃণমূল নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার করে। বাকিরা হলেন- তানিয়া পোদ্দার, মনোরঞ্জন দেবনাথ, শিবতনু সাহা, আশিসলাল সিং, রণবীর ভৌমিক, মেহেদি হাসান, স্বপন মিঁয়া, অমল ভৌমিক, সুমন মিঁয়া, সুরজিৎ সূত্রধর এবং দেব সরকার।

জানা গিয়েছে যে, এদের সকলের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির আন্ডার সেকশন ১৮৮ এবং ১৮৯৭-এর মহামারি আইনের তিনটি ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। ১৪ জনকেই আটক করে প্রথমে খোয়াই ধলাবিলের পুলিশ লাইনে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর রবিবার ভোরে তাঁদেরকে নিয়ে যাওয়া হয় খোয়াই থানায়। গ্রেফতার হওয়া তৃণমূল নেতা-কর্মীদের খোয়াই চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে তোলা হবে বলে খবর।