শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

‘হঠাৎই প্রবল ঝাঁকুনি অনুভব করি’! কীভাবে ঘটল এতো বড় ট্রেন দুর্ঘটনা? যা জানালেন চালক

০৭:৪৯ পিএম, জানুয়ারি ১৪, ২০২২

‘হঠাৎই প্রবল ঝাঁকুনি অনুভব করি’! কীভাবে ঘটল এতো বড় ট্রেন দুর্ঘটনা? যা জানালেন চালক

বংনিউজ ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ বৃহস্পতিবার বিকালে জলপাইগুড়ি থেকে গুয়াহাটি যাওয়ার পথে ময়নাগুড়ির কাছে বিকানের–গুয়াহাটি এক্সপ্রেস ট্রেনটি লাইনচ্যুত হয়। ময়নাগুড়ি-দোমহনির মাঝে লাইনচ্যুত হয় বিকানের-গুয়াহাটি এক্সপ্রেস। লাইনচ্যুত হয় ট্রেনের ১২টি কামরা। রাতভর চলেছে উদ্ধারকার্য। এবার দুর্ঘটনা সম্পর্কে মুখ খুললেন খোদ গাড়ির চালক ও সহকারি চালক।

দুর্ঘটনার পরই কলকাতার উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী। শুক্রবার সকালেই ময়নাগুড়ির দোমহনিতে ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছন রেলমন্ত্রী। গোটা ঘটনাস্থল ঘুরে দেখেন তিনি। তারপরেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ফের একবার উল্লেখ করেন, কেন দুর্ঘটনা তা তদন্ত করে দেখা হবে। ময়নাগুড়ি ট্রেন দুর্ঘটনাকে ‘দুর্ভাগ্যজনক’ বলে বর্ণনা করেন। তিনি এও জানিয়েছেন যে, এই দুর্ঘটনার তদন্ত হবে।

এদিকে, কী কারণে ঘটল এতো বড় দুর্ঘটনা, তা নিয়ে কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রীর কথা অনুযায়ী, ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে তদন্ত। প্রাথমিক তদন্তে ইঞ্জিনের কোনও সমস্যার কারণেই এই ঘটনা ঘটেছে বলে মনে করা হচ্ছে। রেলমন্ত্রী নিজেও সেই কথা জানিয়েছেন। শুক্রবার সকালে ঘটনাস্থলে পৌঁছান রেলমন্ত্রী। ট্রলি করে সমস্ত জায়গা ঘুরে দেখেন তিনি। হাসপাতালে গিয়ে আহতদের সঙ্গেও দেখা করেন। পাশাপাশি ঘটনাস্থল থেকেই সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘ইঞ্জিনের যন্ত্রাংশে আচমকা ক্রটি ঘটে। বিস্তারিত জানতে তদন্ত চলছে। ট্র্যাকের কোনও গণ্ডগোল ছিল না। খুবই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। উদ্ধার কাজ শেষ হয়েছে। এই দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ খতিয়ে দেখা হবে।’

তদন্তে জানা গিয়েছে, ট্রেনের মাঝে থাকা ইঞ্জিনের একটি ট্র্যাকশন মোটর ভেঙে পড়েছিল। আর তা ভেঙে পড়ে স্লিপারে। এর জেরেই পরে থাকা বগিগুলি লাইনচ্যূত হয়ে এই বিপত্তি ঘটে। এদিকে, ট্রেনের চালক এবং সহকারি চালক এই নিয়ে জানালেন, ‘ট্রেনটি ৯৫ থেকে ১০০ কিলোমিটার গতিতে যাচ্ছিল। হঠাৎই প্রবল ঝাঁকুনি অনুভব করি। দুলতে শুরু করে। সঙ্গে সঙ্গে এমার্জেন্সি ব্রেক চাপি। তারপরেই দেখি ট্রেনের একটি অংশ উল্টে গিয়েছে।’ এরপরই প্রশ্ন করা হয়, কী থেকে এমন ঝাঁকুনি বলে মনে হয়? চালক জানান, ‘ট্র্যাকশন নয়, ট্র্যাকের গোলমালের কারণেই সম্ভবত ঝাঁকুনি।’

ডিজি আরপিএফ লোকো পাইলট এবং সহকারী লোকো পাইলটকে ডেকে পাঠিয়েছিলেন। তাঁদের সঙ্গে কথা বলে ঘটনার বিবরণ জানেন আধিকারিকরা। এদিকে দুর্ঘটনাস্থল ও হাসপাতাল পরিদর্শন করেন রাজস্থান সরকারের বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের মন্ত্রী গোবিন্দরাম মেঘওয়াল এবং আরও এক প্রতিমন্ত্রী ভানওয়ার সিং। ট্রেনের সঙ্গে সকলেই দৈনন্দিন জীবন জুড়ে রয়েছে। তাই এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হোক বলে দাবি করেছেন তাঁরা।

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার বিকেলে ঘটা এই ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় ইতিমধ্যেই ন’জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন বহু মানুষ। যার মধ্যে ৩৬ জনের চিকিৎসা চলছে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ, ময়নাগুড়ি গ্রামীণ হাসপাতাল ও জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। তবে কী কারণে এই দুর্ঘটনা তা জানতে ইতিমধ্যেই উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।