শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

‘আমার কাছে প্রমাণ রয়েছে, আমি গ্রেপ্তার করাবো’! ত্রিপুরাতে তৃণমূলকে ঠেকাতে বিপ্লবের গ্রেফতারির হুঁশিয়ারি

০৯:২৭ এএম, সেপ্টেম্বর ৬, ২০২১

‘আমার কাছে প্রমাণ রয়েছে, আমি গ্রেপ্তার করাবো’! ত্রিপুরাতে তৃণমূলকে ঠেকাতে বিপ্লবের গ্রেফতারির হুঁশিয়ারি

নিউজ ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ বাংলায় তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতা দখল করার পর তৃণমূল কংগ্রেস জাতীয় স্তরে তাঁদের সংগঠন বাড়াতে এবং মজবুত করতে ঝাঁপিয়ে পড়েছে। লক্ষ্য ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে বিজেপিকে কেন্দ্রের ক্ষমতা থেকে সরানো। তবে, তার আগে যেসব রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে সেখানেও নিজেদের সংগঠন মজবুত করতে চাইছে তৃণমূল। সেই লক্ষ্যে এই মুহূর্তে তৃণমূল কংগ্রেসের পাখির চোখ ত্রিপুরা। এই রাজ্যে নিজেদের সংগঠন আরও মজবুত করতে এবং ত্রিপুরার আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপিশাসিত বিপ্লব দেবের সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার লক্ষ্যে ইতিমধ্যেই মাঠে নেমে পড়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। প্রায়ই সেখানে যাচ্ছেন রাজ্যের নেতা-নেত্রীরা।

এদিকে ত্রিপুরাতে প্রথম দিন থেকে আক্রান্ত হয়েছেন বাংলার তৃণমূলের নেতা-নেত্রীরা। যা নিয়েও কম জলঘোলা হয়নি। প্রত্যেক পদে তাঁদের বিপ্লব দেবের রাজ্যে বাঁধার মুখে পড়তে হয়েছে। তবে, ত্রিপুরাতে এর মধ্যেই বিজেপির অনেক নেতা-কর্মীরা আসতে শুরু করেছেন বাংলার শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসে। প্রথমে ‘অতিথি দেব ভবঃ’ বলেছিলেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব। সেই মুখ্যমন্ত্রীই রবিবার নাম না করে তৃণমূলকে কার্যত হুঁশিয়ারি দিলেন।

রবিবার ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন বিপ্লব দেব। আর এই পোস্টের পরই ত্রিপুরাজুড়ে হইচই পড়ে গিয়েছে। কী এমন লিখেছেন বিপ্লব দেব তাঁর পোস্টে? তিনি লিখেছেন, ‘আমি ২০১৫ সালে ত্রিপুরায় দায়িত্ব নিয়ে আসি এবং ২০১৭ সালেই বড়জলা উপনির্বাচনে দলের সাংগঠনিক কাজে ঝাঁপিয়ে পড়ি। তখন এই বড়জলার প্রত্যেকের বাড়িতে আমি গিয়েছি। বড়জলার প্রত্যেকে আমাকে চেনে আমিও তাদের চিনি। এখন দেখা যাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ থেকে একটি দল আমাদের রাজ্যে এসেছে। এ দলের নেতৃত্বরা পশ্চিমবঙ্গে গরু পাচারের মতো অসামাজিক সঙ্গে যুক্ত। এখানেও যাদের দলে টানছে তারাও এ ধরনের অসামাজিক কাজের সঙ্গে যুক্ত। আর আমার কাছে তথ্য প্রমাণ রয়েছে যার ভিত্তিতে তাদের আমি গ্রেপ্তার করাবো।’

তৃণমূলের সক্রিয়তায় এখন বাকি দলগুলিতে যে ভাঙন ধরছে ত্রিপুরায়, তা নিয়ে আর কোনও সন্দেহই থাকল না। এমনকী মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবের পোস্টেও একপ্রকার তা মান্যতা পেল। এই পরিস্থিতিতে বিরোধী ভোটকে তৃণমূলের দিক থেকে বিজেপির দিকে টানতে দলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যেও বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব। লিখেছেন, ‘আমি দলের কার্যকর্তাদের উদ্দেশ্যে বলবো প্রত্যেক বিরোধী সিপিএম এর সমর্থকদের বাড়িতে যাওয়ার জন্য। তাদের কাছে গিয়ে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের খতিয়ান তুলে ধরুন। তাদের বোঝান ২৫ বছরের সরকার কি করেছে আর আমরা গত সাড়ে তিন বছরে কি করেছি ও করছি।’

https://www.facebook.com/bjpbiplab/posts/3767965556638425

এদিকে, বিজেপির অন্দরেও অবশ্য চিন্তার যথেষ্ট কারণ আছে। সুদীপ রায় বর্মনের সঙ্গে বিজেপির বিচ্ছেদ ও তৃণমূল ঘনিষ্ঠতা এক্ষেত্রে জল্পনা আরও বাড়িয়েছে ত্রিপুরায়। তবে, ত্রিপুরার রাজনৈতিক মহলের মতে, সুদীপ রায় বর্মন এখন যতই বিদ্রোহের ইঙ্গিত দিন না কেন, আপাতত মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে বিপ্লব দেবের উপরেই আস্থা রাখতে চাইছে ত্রিপুরার বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব৷ একসময় মুকুল রায় ঘনিষ্ঠ সুদীপ রায় বর্মন যে তৃণমূলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাখছেন, তা ্নিয়ে এখন আর কোনও দ্বিমত নেই। পাশাপাশি তা বিজেপি নেতৃত্বের আর অজানাও নয়৷ সম্প্রতি দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের মাঝপথেই রীতিমতো ক্ষোভ প্রকাশ করে বেরিয়ে যান সুদীপ৷ তার পরেও তাঁর দাবি মানেনি দল। এই পরিস্থিতিতে বিপ্লব দেবের ফেসবুকে পোস্ট বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।