আগামীকাল প্রজাতন্ত্র দিবস। ভারতবাসীর কাছে এক বিশেষ দিন। করোনা পরিস্থিতির আগে প্রত্যেক বছর ২৬ জানুয়ারির প্যারেড দেখার জন্য প্রায় ২ লক্ষ মানুষের সমাগম হত। কিন্তু ভাইরাসের প্রকোপে কাটছাঁট হয়েছে অনুষ্ঠানে।
চলুন জেনে নেওয়া যাক ২৬শে জানুয়ারির প্যারেড সম্পর্কে জেনে নিন কিছু আকর্ষণীয় কিছু তথ্য-
১) প্রত্যেক বছর দিল্লির রাজপথেই আয়োজন করা হয়ে থাকে প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানের। কিন্তু আপনারা জানেন কী যে ১৯৫০ সাল থেকে ১৯৫৪ সাল পর্যন্ত অর্থাৎ চার বছর প্রজাতন্ত্র দিবসের প্যারেড রাজপথে আয়োজন করা হয়নি? কোথায় হয়েছিল তাহলে? জানা গেছে এই বছরগুলিতে ২৬শে জানুয়ারির প্যারেড করা হয়েছিল আরউইন স্টেডিয়াম (বর্তমানে যা ন্যাশনাল স্টেডিয়াম), কিংসওয়ে, লাল কেল্লা ও রামলীলা ময়দানে।
এরপর ১৯৫৫ সাল থেকে রাজপথ স্থায়ী জায়গা হয়ে যায় প্রজাতন্ত্র দিবসের প্যারেডের জন্য। এই রাজপথই তৎকালীন সময়ে `কিংসওয়ে` বলে পরিচিত ছিল।
২) প্রজাতন্ত্র দিবসের প্যারেড অনুষ্ঠান শুরু হয় দেশের রাষ্ট্রপতির আগমনের মধ্য দিয়ে। প্রথমে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে থাকা অশ্বারোহী দেহরক্ষীরা জাতীয় পতাকাকে অভিবাদন জানান সেই সময় জাতীয় সঙ্গীত বাজানো হয় এবং দেওয়া হয় ২১টি গান স্যালুট।
কিন্তু আপনি কী জানেন যে ২১টি গান স্যালুট ২১টি কামান দিয়ে চালানো হয় না? তাঁর পরিবর্তে, ভারতীয় সেনাবাহিনীর ৭টি কামান, যা পরিচিত `২৫-পন্ডার্স`, ৩ রাউন্ডে গুলি চালানোর জন্য ব্যবহৃত হয়। জাতীয় সঙ্গীতের শুরুতে প্রথম গুলি চালানো হয় এবং ৫২ সেকেন্ড পরে শেষ গুলি চালানো হয়। প্রসঙ্গত, এই কামানগুলি ১৯৪১ সালে তৈরি করা হয়েছিল এবং তখন থেকেই সেনাবাহিনীর সমস্ত আনুষ্ঠানিক কর্মসূচির সঙ্গে জড়িত।
৩) জানা যায়, ২৬শে জানুয়ারির প্যারেডে অংশগ্রহণকারীদের ভোররাত ২টোর মধ্যে প্রস্তুত হয়ে যেতে হয় এবং ভোর ৩টের মধ্যে রাজপথে পৌঁছে যায়। অংশগ্রহণকারীদের প্রাথমিকভাবে প্যারেডে অংশ নেওয়ার কথা জানানোর পর এই প্যারেডের প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায় গত বছরের জুলাই থেকে। এরপর অগাস্ট পর্যন্ত, তাঁরা তাঁদের নিজস্ব চত্বরে কুচকাওয়াজ অনুশীলন করে এবং ডিসেম্বরের মধ্যে দিল্লি পৌঁছায়। উল্লেখ্য, অংশগ্রহণকারীরা ২৬শে জানুয়ারির প্যারেডে অংশ নেওয়ার আগে প্রায় ৬০০ ঘণ্টা অনুশীলন করে।
৪) ২৬শে জানুয়ারি কুচকাওয়াজের মহড়ার সময় প্রতিটি দল ১২ কিলোমিটার দূরত্ব কভার করে কিন্তু প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন তাঁরা শুধুমাত্র ৯ কিলোমিটার দূরত্ব কভার করে। আর বিচারকরা প্যারেডের পুরো পথ জুড়ে বসে থাকেন, এবং পরে তাঁরাই ২০০টি প্যারামিটারের ভিত্তিতে প্রতিটি অংশগ্রহণকারী দলকে বিচার করেন এবং এই রায়ের ভিত্তিতে, `সেরা মার্চিং গ্রুপ` খেতাব প্রদান করা হয়।
৫) উল্লেখ্য, ২৬শে জানুয়ারির প্যারেড ইভেন্টে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত প্রতিটি কার্যকলাপের প্রস্তুতি অনেক আগে থেকে শুরু হয়ে যায় । অতএব, ছোটখাটো ত্রুটি এবং কয়েক মিনিটের বিলম্বও আয়োজকদের ওপর ভারী প্রভাব ফেলতে পারে।
৬) এই প্যারেড অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া প্রত্যেক সেনাকর্মীকে ৪ স্তরের তদন্তের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। একইসঙ্গে তাঁদের অস্ত্রগুলিও পরীক্ষা করা হয়, যাতে তাঁদের অস্ত্রে কোনও ধরনের বুলেট বা কার্তুজ না থাকে।
আপনার মতামত লিখুন :