শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

স্বাধীনতার পরে এই প্রথমবার কোনও মহিলার ফাঁসির সাক্ষী হতে চলেছ দেশ! শুরু হয়েছে প্রস্তুতিও

১০:৪৪ এএম, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২১

স্বাধীনতার পরে এই প্রথমবার কোনও মহিলার ফাঁসির সাক্ষী হতে চলেছ দেশ! শুরু হয়েছে প্রস্তুতিও
বংনিউজ২৪x৭ডিজিটাল ডেস্কঃ স্বাধীন ভারতের ইতিহাসে এই প্রথমবার কোনও মহিলা অপরাধীর ফাঁসি হতে চলেছে। ভয়ঙ্কর ও বিরল অপরাধে দোষী প্রমাণিত উত্তরপ্রদেশের শবনমের ফাঁসি হতে চলেছে খুব শীঘ্রই। উল্লেখ্য, দেশে মহিলাদের ফাঁসির জন্য বিশেষ ব্যবস্থা রয়েছে উত্তরপ্রদেশের মথুরায়। সেখানে ইতিমধ্যেই শবনমের ফাঁসির প্রস্তুতিও শুরু হয়ে গেছে। নির্ভয়া মামলায় দোষীদের ফাঁসি দিয়েছিলেন মিরাটের পবন জল্লাদ। তিনিই রয়েছেন এই ফাঁসির দায়িত্বে। তিনি ইতিমধ্যেই উত্তরপ্রদেশের মথুরার ফাঁসির জায়গাটি ঘুরে দেখে গেছেন। তবে, ফাঁসির দিন এখনও নির্ধারিত হয়নি বলেই খবর। ইতিমধ্যেই শবনমের ফাঁসির সিদ্ধান্তের পুনর্বিবেচনার আবেদন খারিজ করেছে শীর্ষ আদালত। তার প্রাণভিক্ষার আর্জিও খারিজ করে দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। তাই এখন শুধুই সময়ের অপেক্ষা। দিন স্থির হলেই, ফাঁসির আদেশ কার্যকর করা হবে। কিন্তু কে এই শবনম? কেনই বা স্বাধীন দেশের প্রথম ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত মহিলা হিসেবে তাঁর নাম উঠে এল? এই প্রশ্নের উত্তর পেতে গেলে ফিরে যেতে হবে, বেশ কয়েক বছর আগে। সালটা ২০০৮, ১৪ এপ্রিল। ওই দিনেই যৌবনের উদ্দাম প্রেমে অন্ধ হয়ে, ঠিক-ভুলের বিচার ক্ষমতা হারিয়ে, নিজের পরিবারের সাতজন সদস্যকে কুপিয়ে হত্যা করে সে। এই কাজে তাঁকে মদত এবং সাহায্য করেছিল তার প্রেমিক। উত্তরপ্রদেশের আমরোহা জেলার হাসানপুরের বাওয়ানখেদি গ্রামে বসবাসরত শিক্ষক শওকত আলির একমাত্র মেয়ে শবনমের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল স্থানীয় এক যুবকের। ইংরেজি ও ভূগোলে স্নাতকোত্তর পাশ করেছিল সে। শিক্ষকতাও করছিল শবনম। কিন্তু স্কুলের গণ্ডি না পেরনো সেলিমের সঙ্গে তার সম্পর্ক কিছুতেই মেনে নিতে পারেনি ধনী শবনমের পরিবার। আর এই নিয়ে পরিবারে নিত্য অশান্তি লেগেই থাকত। আর এই অশান্তি থেকে, প্রতিশোধস্পৃহায় একদিন প্রেমিকের পরামর্শে সকলকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত নেয়। সেই মতো রাতে বাবা, মা, দশ মাসের ভাইপো-সহ পরিবারের সাতজনকে নৃশংস ভাবে মেরে ফেলে শবনম। এরপর, সকালে হতেই সে গ্রামে রটিয়ে দেয় যে দুষ্কৃতীরা খুন করেছে, তার পরিবারের সকলকে৷ তবে ধীরে ধীরে তার ওপর সন্দেহ হওয়ায়, তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ৷ গ্রেফতার করা হয় তার প্রেমিককেও৷ পরে, পুলিশি জেরায় ঘটনার কথা স্বীকার করে দু’জনেই৷ এই অপরাধকে ‘বিরল’ আখ্যা দিয়ে তাকে ফাঁসির সাজা শোনায় আদালত। পরে, সুপ্রিম কোর্টও ফাঁসির সাজা বহাল রাখে শবনমের৷ প্রাণভিক্ষার আর্জি খারিজ করেছেন রাষ্ট্রপতি৷ ফলে পরিবারের সবাইকে খুন করে ফাঁসিতেই ঝুলতে চলেছে শবনম৷ প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, মথুরার যে ঘরে শবনমের ফাঁসি হওয়ার কথা, সেটি প্রায় দেড়শো বছরের পুরনো। স্বাধীনতার পর থেকে কোনও ফাঁসি হয়নি এখানে। জেলের সিনিয়র সুপারিনটেন্ডেন্ট শৈলেন্দ্রকুমার মৈত্র জানিয়েছেন যে, এখনও ফাঁসির দিন চূড়ান্ত হয়নি। তবে, প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে। তিনি এও জানিয়েছেন, এই ফাঁসির জন্য বক্সার থেকে ফাঁসির দড়ি আনানো হচ্ছে।