শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

মানবিক উদ্যোগ! বস্তির পড়ুয়াদের বিনামূল্যে পড়ানোর দায়িত্ব নিলেন অঙ্কে স্নাতক এই ব্যক্তি!

০১:৩৫ পিএম, এপ্রিল ১৭, ২০২১

মানবিক উদ্যোগ! বস্তির পড়ুয়াদের বিনামূল্যে পড়ানোর দায়িত্ব নিলেন অঙ্কে স্নাতক এই ব্যক্তি!

কথায় বলে মানুষের জীবনে চাহিদা শুধু তিনটে। অন্ন, বস্ত্র আর বাসস্থান। কিন্তু এর সঙ্গেই যুক্ত হবে আরও একটির নাম, তা হল শিক্ষা। প্রত্যেক মানুষের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ এই শিক্ষা। প্রত্যেক মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকারও তা। তবে দেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ ঢোকার পর ক্রমশ চড়ছে করোনা সংক্রমণের গ্রাফ। গবেষকদের মতে, করোনার দ্বিতীয় স্ট্রেন নাকি প্রথমবারের থেকেও বেশি শক্তিশালী। এই অবস্থায় বন্ধ দেশের প্রায় সমস্ত স্কুল-কলেজ। তাই বলে কি পড়াশোনাতে ছেদ টানা যায়? অবশ্যই না। তাই চলছে অনলাইন ক্লাস। বাড়িতে বসেই জানা-অজানা জ্ঞান সংগ্রহ করছে পড়ুয়ারা।

কিন্তু যাদের সে সুবিধাটুকুও নেই? অনলাইন ক্লাস তো দূরের কথা ইন্টারনেট ব্যবস্থার সঠিক পরিকাঠামোও যাদের নেই? তারা কীভাবে জারি রাখবে তাদের পড়াশোনা? বিশেষ করে যারা বস্তির বাসিন্দা! লকডাউনের আগেও যারা শিক্ষার মতো গণতান্ত্রিক অধিকারের সুবিধাটুকুও ঠিকমতো পেত না? তারা কি তবে শিক্ষালাভ থেকে বঞ্চিত থাকবে? নাহ! কারণ, সেইসব পড়ুয়াদের দিকেই সাহায্যের হাত বাড়িয়েছেন উত্তরপ্রদেশের এই ব্যক্তি৷ তিনি সত্যেন্দ্র পাল। অঙ্কে স্নাতক এই ব্যক্তি প্রতিদিন নিয়ম করে পূর্ব দিল্লির বস্তির কিছু পড়ুয়াদের শিক্ষাদানে সাহায্য করছেন। লকডাউন এবং ক্রম বর্ধমান করোনার ফলে কিছুদিন বন্ধ থাকলেও ফের চালু হয়েছে তাঁর পাঠশালা।

আজ থেকে নয়! সেই ২০১৫ থেকেই শুরু সত্যেন্দ্র এই অভিযান৷ জায়গার অভাবে দিল্লি ফ্লাইওভারের নীচে বসে এই পাঠশালা। যেখানে দলে দলে যোগ দেয় দিল্লির বস্তির পড়ুয়ারা। ইন্টারনেটের সুবিধা ছাড়াই তাদের শিক্ষাদানে কোনও ত্রুটির রাখেন না সত্যেন্দ্র। এই প্রসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, "আমি যদি কেবল নিজেকে নিয়েই ভাবি, নিজের দিকেই নজর দিই; তবে শুধুমাত্র আমিই উপার্জন করতে পারব। কিন্তু আমি যদি এই ছোট্ট ছোট্ট ছেলে-পুলের দিকেও একটু নজর দিই, তাহলে সবাই মিলেই একসঙ্গে উপার্জন করতে সক্ষম হবো।" তিনি এও জানিয়েছেন, করোনার ভয়াবহ পরিস্থিতির জন্য গত মার্চে পাঠশালা বন্ধ রাখতে হয়েছিল৷ কিন্তু পড়ুয়াদের অবিভাবকের ক্রমাগত উৎসাহে ফের চালু হয় পাঠশালা। যা এখন চলছে পুরোদমে।

[embed]https://twitter.com/susantananda3/status/1382010880968118272?s=20[/embed]

সত্যেন্দ্রর এই 'মানবিক' পাঠশালার ছবি নেটমাধ্যমে তুলে ধরেন IFS অফিসার সুশান্ত নন্দা। ছবিটি শেয়ার করে তিনি লেখেন, "আগুন যেখানেই থাকুক না কেন, তা জ্বলতে হবেই!" এরপরই নিমেষে ভাইরাল হয়ে ওঠে পোস্টটি। নেটদুনিয়া মেতে ওঠে সত্যেন্দ্র পালের প্রশংসায়৷ এমনকি এই অতিমারীর মধ্যেও হাল না ছেড়ে মানবিক এই উদ্যোগে নিজেকে উজার করে দেওয়ার জন্য তাঁকে কুর্নিশও জানিয়েছে তামাম নেটদুনিয়া। সত্যিই! আজকের সমাজে সত্যেন্দ্রর মতোই আরও বহু মানুষের প্রয়োজন নিঃসন্দেহে! আগামীকে সুন্দর করে গড়ে তোলার পথে এই মানুষগুলিই আমাদের অনুপ্রেরণা...