বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

সততার পুরস্কার! ৩৮ লক্ষ টাকা পেয়েও ফিরিয়ে দেন যুবক, তারপরই খুলে গেল ভাগ্য! কীভাবে?

মৌসুমী মোদক

প্রকাশিত: এপ্রিল ৪, ২০২২, ০১:৫৩ পিএম | আপডেট: এপ্রিল ৪, ২০২২, ০৭:৫৩ পিএম

সততার পুরস্কার! ৩৮ লক্ষ টাকা পেয়েও ফিরিয়ে দেন যুবক, তারপরই খুলে গেল ভাগ্য! কীভাবে?
সততার পুরস্কার! ৩৮ লক্ষ টাকা পেয়েও ফিরিয়ে দেন যুবক, তারপরই খুলে গেল ভাগ্য! কীভাবে?

‍‍`অনেস্টি ইজ দ্য বেস্ট পলিসি‍‍`! সেকথাই ফের প্রমাণ করলেন আফ্রিকার এক তরুণ। পেশায় তিনি এক ট্যাক্সিচালক। দারিদ্যের তাড়নায় খুব অল্প বয়সেই পড়াশোনা ছেড়ে রোজগারের পথে নামতে হয়েছিল। তবে আর্থিক অনটন থাকলেও সততার কাছে হার মানেননি। আর তার-ই পুরস্কার স্বরূপ খুলে গেল যুবকটির ভাগ্য!

যুবকটি আদতে আফ্রিকার লাইবেরিয়ার বাসিন্দা। গত বছর রাস্তার পাশে একটি প্লাস্টিকের ব্যাগে মোড়া মার্কিন এবং লাইবেরিয়ান নোট মিলিয়ে প্রায় ৩৮ লাখ টাকা পান তিনি। এই টাকা তাঁর জীবন পরিবর্তন করতে পারত। কিন্তু তা তিনি নেননি। বরং টাকার সঠিক মালিক খুঁজে বার করার জন্য জাতীয় রেডিওতে আবেদন করেছিলেন। পুরো টাকা নিজের পিসির হাতে দিয়ে বলেছিলেন, কেউ যদি এই টাকার জন্য সরকারি রেডিওতে আবেদন করে তবে তিনি তাঁকে তা ফিরিয়ে দেবেন।

বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১৯ বছর বয়সী ওই যুবকের নাম ইমানুয়েল টুলো। মোটরবাইক ট্যাক্সি চালকের কাজ করতেন তিনি।  ইমানুয়েলকে প্রাথমিক পড়াশোনার পর মাত্র ৯ বছর বয়সে স্কুল ছাড়তে হয়েছিল। বাবা মারা যাওয়ায় পরিবারের পাশে দাঁড়াতে উপার্জনের উপায়ও খুঁজতে হয়েছিল। সেই কারণে মোটরবাইক ট্যাক্সি চালিয়ে কিছু টাকা রোজগার শুরু করেন। তবে প্রতিদিনের খরচ মেটাতে রীতিমতো হিমশিমই খেতে হত তাঁকে। তা সত্ত্বেও এতগুলো টাকা কুড়িয়ে পেয়েও তা নিজের কাছে না রেখে ফিরিয়ে দেওয়ায় উদ্যোগ নেন ইমানুয়েল৷ তার এই সততাই মন জিতেছে বিশ্বের।

শুধু তাই নয়! সততার পুরস্কারও পেয়েছেন ইমানুয়েল। তিনি টাকার মালিককে সমস্ত টাকা ফিরিয়ে দিতেই তাঁর সততার জন্য পুরস্কৃত করেন ওই ব্যক্তি। একজন স্থানীয় মিডিয়ার মালিকও দর্শক ও শ্রোতাদের কাছ থেকে পাওয়া নগদ অর্থ পুরস্কার হিসেবে দিয়েছেন তাঁকে। পাশাপাশি দেশের রাষ্ট্রপতিও ইমানুয়েলকে আট লাখ টাকা পুরস্কার দেন। একইসঙ্গে লাইবেরিয়ার সবচেয়ে নামকরা স্কুল, রিক্স ইনস্টিটিউটেও ভর্তি করা হয় এই তরুণ ট্যাক্সিচালককে৷ আমেরিকার একটি কলেজে স্নাতক অধ্যয়নের জন্য সম্পূর্ণ স্কলারশিপের প্রস্তাবও পেয়েছেন তিনি।

তাঁর সততাই বদলে দিয়েছে ভাগ্য! রাস্তার পাশে পড়ে টাকার ব্যাগ যে এভাবে তাঁর জীবন বদলে দেবে তা হয়তো ভাবতে পারেননি ইমানুয়েল। তবে আবার তিনি পড়াশোনার সুযোগ পেয়েছেন। তাও আবার দেশের অন্যতম সেরা স্কুলে। এই সুযোগকে হাতছাড়া করতে একেবারেই নারাজ ওই তরুণ। বিদ্যালয়ের পড়াশোনা শেষ করে তাঁর ইচ্ছে অ্যাকাউন্টিং নিয়ে পড়ার। ইমানুয়েল চান দেশের অর্থনীতি পরিচালনায় নিজের অবদান রাখতে। সেই লক্ষ্যেই এগিয়ে চলেছেন তিনি।