বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

মিড-ডে মিলের রাঁধুনি আচমকাই হয়ে উঠলেন অঙ্কের শিক্ষিকা! দেখে থ‍‍` ক্লাসের পড়ুয়ারা

মৌসুমী মোদক

প্রকাশিত: জুলাই ৯, ২০২২, ০২:৪৬ পিএম | আপডেট: জুলাই ৯, ২০২২, ০৮:৫৮ পিএম

মিড-ডে মিলের রাঁধুনি আচমকাই হয়ে উঠলেন অঙ্কের শিক্ষিকা! দেখে থ‍‍` ক্লাসের পড়ুয়ারা
মিড-ডে মিলের রাঁধুনি আচমকাই হয়ে উঠলেন অঙ্কের শিক্ষিকা! দেখে থ‍‍` ক্লাসের পড়ুয়ারা

তিনি পেশায় রাঁধুনি। স্কুলে মিড-ডে মিল রাঁধাই তাঁর কাজ। কিন্তু তিনি যে শুধু রান্নাই করেন না, প্রয়োজনে হাতে চক ডাস্টার তুলে নিয়ে পড়ুয়াদের পড়াও বোঝাতে পারেন, এমনটাই করে দেখালেন মুর্শিদাবাদের ফরাক্কার এক মিড-ডে মিল কর্মী। সম্প্রতি স্কুলে রান্না করার পাশাপাশি পড়ুয়াদের অঙ্ক বুঝিয়ে ক্লাসের সকলকে তাক লাগিয়ে দিলেন পঞ্চাশোর্ধ্ব এই মহিলা।

ফরাক্কার নয়ন সুখ শ্রীমন্ত পাল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মিড-ডে রান্নার কাজ করেন বিশাখা পাল। প্রতিদিনের মতো গত বৃহস্পতিবারও স্কুলে গিয়ে প্রায় ৩৫০ পড়ুয়াদের জন্য মিড-ডে রান্না করেন তিনি। রোজই তা করে আসছেন। কিন্তু রান্নায় পারদর্শী হওয়ার পাশাপাশি যে তিনি আচমকাই অঙ্কের দিদিমণি হয়ে উঠবেন তা কে জানত!

জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার ওই স্কুলে চতুর্থ শ্রেণীর অঙ্কের ক্লাস চলাকালীন পড়ুয়ারা ঠিকমতো অঙ্ক কষতে পারছিল না। তা দেখে শিক্ষক বকাবকি শুরু করেন। কিন্তু তা মেনে নিতে পারেননি বিশাখা পাল। প্রাণপ্রিয় ছোট্ট ছোট্ট পড়ুয়ারা বকুনি খাচ্ছে দেখেই ক্লাসের ঘরে আচমকাই ঢুকে পড়েন তিনি। তারপরই হাতে তুলে নেন চক-ডাস্টার। এরপর ধীরে ধীরে বোর্ডে অঙ্ক কষে পড়ুয়াদের বুঝিয়ে দেন।

গোটা ঘটনার দৃশ্য ক্যামেরাবন্দী করে নেন ক্লাসে উপস্থিত থাকা অঙ্কের শিক্ষক পরেশ দাস। পরে তা ফেসবুকে আপলোড করে দেন। এরপর মুহূর্তে মধ্যে সেই ভিডিও ভাইরাল হয়ে যায় সোশ্যাল মিডিয়ায়। অঙ্ক শিক্ষকের কথায়, "বৃহস্পতিবার যখন চতুর্থ শ্রেণীর পড়ুয়াদের অঙ্কের ক্লাস নেওয়ার সময় ছাত্র-ছাত্রীরা ঠিকমতো অঙ্ক করতে পারছিল না, তখন একটু বকাঝকা করি। কিন্তু তখনই বিশাখা মাসি ক্লাসে এসে আমার কাছে চক ডাস্টার চান। আমি তা দিতেই তিনি ছেলে-মেয়েদের অঙ্ক শেখাতে শুরু করেন। দেখি দিব্যি তিনি বোর্ডে অঙ্ক কষছেন। সেটাই ফোনের ক্যামেরায় তুলে রাখি। পরে ভাইরাল হয়ে যায়।"

জানা গিয়েছে, ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনার দিকে আগ্রহ ছিল বিশাখা পালের। তবে আর্থিক অনটনের কারণে দশম শ্রেণীর বেশি আর পড়া হয়নি। এই স্কুলে বিগত কয়েক বছর ধরেই মিড ডে মিলের রান্নার কাজ করছেন তিনি। তার পাশাপাশি প্রায়ই তিনি মনোযোগ সহকারে বিভিন্ন ক্লাসের পড়া শুনতেন। এবার নিজেই তিনি পালন করলেন শিক্ষিকার ভূমিকা!