বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

‍‍`তালিবানি‍‍` শাসনের অভিশাপ! একসময়ের সাংবাদিক এখন রাস্তায় বসে বিক্রি করছেন খাবার

মৌসুমী মোদক

প্রকাশিত: জুন ১৭, ২০২২, ১১:৩৮ এএম | আপডেট: জুন ১৭, ২০২২, ০৫:৩৮ পিএম

‍‍`তালিবানি‍‍` শাসনের অভিশাপ! একসময়ের সাংবাদিক এখন রাস্তায় বসে বিক্রি করছেন খাবার
‍‍`তালিবানি‍‍` শাসনের অভিশাপ! একসময়ের সাংবাদিক এখন রাস্তায় বসে বিক্রি করছেন খাবার

গত বছর অগাস্টের পর থেকেই আফগানিস্তানে ক্ষমতায় আসে তালিবানরা। আর তারপর থেকেই তালিবানি শাসনে জেরবার দেশ। দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে আফগানদের জীবন৷ সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রায়ই উঠে এসেছে আফগানিস্তানের কঙ্কালসার চিত্র। তবে এবার যে দৃশ্য ভাইরাল হল, তা বেশ চমকে দেওয়ার মতোই। সাংবাদিকতা ছেড়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে খাবার বিক্রি করছেন করছেন একসময়ের সাংবাদিক। যে দৃশ্য নাড়িয়ে দিয়েছে প্রত্যেককেই।

সারাজীবন সাংবাদিক হিসাবে কাজ করে এসেছেন। বছরের পর বছর ধরে বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে অ্যাঙ্করিং ও রিপোর্টিং করেছেন। কিন্তু বর্তমানে চাকরি খুইয়ে দিশাহীন আফগান সাংবাদিক মুসা মহম্মদী। পরিবারের মুখে দু‍‍`বেলা দুমুঠো খাবার তুলে দেওয়ারও সামর্থ্য নেই। পেটের তাগিদে তাই খাবার বিক্রির পেশাকেই বেছে নিতে বাধ্য হয়েছেন তিনি। আজ রাস্তার ধারে বসে খাবার বিক্রি করেই সংসার চলে তাঁর।

এককালের স্বনামধন্য এই সাংবাদিকের বর্তমান করুণ চিত্র তুলে ধরেছেন কবীর হাকমল নামে আরেক সাংবাদিক। তিনি মুসা মহম্মদীর ছবি শেয়ার করে তাঁর পূর্বের এবং বর্তমানের পরিস্থিতির কথা তুলে ধরেছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। তারপরই হইচই পড়ে যায় নেটমাধ্যমে। সাংবাদিকদের এই চিত্র আফগানিস্তানের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অস্থিরতাকেই যেন গোটা বিশ্বের সামনে এনে ফেলল।

মুসা মহম্মদীর বর্তমান পরিস্থিতি দেখে নেটিজেনদের একাংশ মন্তব্য করেছেন, সারা জীবন সংবাদমাধ্যমে কাজ করার পর কাউকে যে সংসার চালানোর জন্য এভাবে রাস্তায় বসে খাবার বিক্রি করতে হবে, তা কল্পনারও অতীত৷ অনেকে আবার বলেছেন, এই চিত্র থেকেই আফগান সমাজের বর্তমান বেআব্রু ও টালমাটাল পরিস্থিতির বিষয়ে টের পাওয়া যাচ্ছে। যদিও মুসা মহম্মদীর কাহিনী জাতীয় বেতার ও টেলিভিশন মাধ্যমের এক শীর্ষস্থানীয় আধিকারিকের নজরে আসার পর তিনি এক ট্যুইট বার্তায় ওই সাংবাদিককে নিজের দপ্তরে নিয়োগ করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।

প্রসঙ্গত, আফগানিস্তানের দখল তালিবানদের হাতে যাওয়ার পর থেকেই চরম অর্থনৈতিক সঙ্কটের মুখে পড়েছে দেশ। দেখা দিয়েছে বেকারত্বও। বিশেষত গত কয়েক মাসে বহু মহিলা তাঁদের চাকরি হারিয়েছেন। নজিরবিহীন দারিদ্র্যের শিকার হয়েছে দেশ। শুধু তাই নয়, দেশে যেন এখন অন্ধকাররাজ কায়েম। ব্যক্তিগতভাবে মানুষের উপর আক্রমণ তো বটেই, দেশের সংবাদ মাধ্যমগুলির উপর আক্রমণ শানিয়েছে তালিবানরা। সব মিলিয়ে সে দেশের পরিস্থিতি ক্রমাগত অস্থির হয়ে উঠেছে।